অনুশীলন: মুম্বই ম্যাচের আগে প্রস্তুতি চিমাদের। এসসি ইস্টবেঙ্গল
দরজায় কড়া নাড়ছে আইএসএল। কোয়রান্টিন পর্ব কাটিয়ে প্রতিযোগিতায় প্রথম ম্যাচে নামার আগে আপাতত প্রস্তুতিতে মগ্ন কলকাতার দুই বড় দল এটিকে-মোহনবাগান, এসসি ইস্টবেঙ্গল। এক সপ্তাহ পরেই ১৯ নভেম্বর প্রতিযোগিতার প্রথম দিন কেরল ব্লাস্টার্সের বিরুদ্ধে খেলবে এটিকে-মোহনবাগান। ২১ নভেম্বর প্রথম ম্যাচ এসসি ইস্টবেঙ্গলের। প্রতিপক্ষ জামশেদপুর এফসি।
দু’দলের কোচই স্পেনীয়। এটিকে-মোহনবাগানের প্রশিক্ষক আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস যখন গত বার ফাইনালে উঠেও ট্রফি হাতছাড়া হওয়ার আক্ষেপ মেটাতে চান এ বার দলকে চ্যাম্পিয়ন করিয়ে, তখন এসসি ইস্টবেঙ্গল কোচ ম্যানুয়েল (মানলো) দিয়াসের কাছে ভাল ফল করাটাই নিশানা।
ফুটবলারদের চোট-আঘাত যাতে প্রতিযোগিতা শুরুর আগে না হয়, তাঁর রণনীতির আভাস যেন কোনও দল না পায়, তার জন্য গত বারের মতো এ বারও কোনও প্রস্তুতি ম্যাচ নিয়ে আগাম ঘোষণা করেননি হাবাস। অনুমান করা হচ্ছে, এ বারও প্রস্তুতি ম্যাচ না খেলেই প্রতিযোগিতায় নামবে এটিকে-মোহনবাগান। সেখানে লাল-হলুদ শিবিরে প্রস্তুতি ম্যাচের পরিকল্পনা তুঙ্গে। রবিবার, ১৪ নভেম্বর গত বারের চ্যাম্পিয়ন মুম্বই সিটি এফসি-র বিরুদ্ধে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে এসসি ইস্টবেঙ্গল।
গত মরসুমে সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে খেলে যাওয়া অস্ট্রেলীয় ব্র্যাড ইনম্যান, মরক্কোর আহমেদ জাহু, স্পেনীয় ইগর আঙ্গুলো, সেনেগালের মোর্তাদা ফলের মতো ভারতীয় ফুটবলে খেলে যাওয়া বিদেশিরা রয়েছেন মুম্বই দলে। এ ছাড়াও রাহুল ভেকে, রওলিন বর্জেস, বিপিন সিংহ, রেনিয়ার ফার্নান্দেসের মতো প্রথম সারির ভারতীয় ফুটবলারেরা রয়েছেন এই দলে। সে কারণেই এসসি ইস্টবেঙ্গল কোচ মানলো প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য বেছেছেন মুম্বইয়ের দলটিকে। তাঁর যুক্তি, গত বারের চ্যাম্পিয়নদের বিরুদ্ধে খেললে লাল-হলুদ জার্সিধারী ড্যানিয়েল চিমা, মহম্মদ রফিক-সহ বাকিরা কী অবস্থায় রয়েছেন এবং প্রথম ম্যাচের আগে কোন কোনও জায়গায় উন্নতি দরকার তা বুঝে নিতে পারবেন। পাশাপাশি, মুম্বই সিটি এফসি-কে প্রস্তুতি ম্যাচে হারালে বা রুখে দিতে পারলে মনোবল বাড়িয়ে প্রতিযোগিতা শুরু করা যাবে। বৃহস্পতিবার সকালে পুরোদমে অনুশীলন হয়েছে দলের। সেখানে বিভিন্ন ছকে দলকে খেলিয়ে দেখে নেন মানলো দিয়াস।
এ দিকে, বৃহস্পতিবারই দলের ক্রীড়া-বিজ্ঞান বিষয়ক কর্মী জোসেফ রোনাল্ড ডি’অ্যাঞ্জেলাস চুক্তি ছিন্ন করলেন এসসি ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে। জানা গিয়েছে, পরিবারের এক সদস্যের অসুস্থতা-সহ ব্যক্তিগত কারণে কাজ চালিয়ে যেতে রাজি হননি এই ব্যক্তি।
এসসি ইস্টবেঙ্গল যখন প্রস্তুতি ম্যাচের জন্য তৈরি হচ্ছে, তখন তাঁর চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিবেশী ক্লাবেও প্রস্তুতি চরমে। কোয়রান্টিন পর্ব কাটিয়ে বৃহস্পতিবারই দলের সঙ্গে অনুশীলনে নামলেন সুমিত রাঠি এবং দীপক টাংরি। দু’জনেই ভারতীয় দলের হয়ে খেলে এসেছেন। এই দু’জন অনুশীলনে যোগ দেওয়ায় হাবাসের হাতে বিকল্প বাড়ল। দীপক এএফসি কাপে রক্ষণে খেললেও আইএসএলে তাঁকে মাঝমাঠে রক্ষণাত্মক ভূমিকায় ব্যবহার করতে পারেন এটিকে-মোহনবাগান কোচ। অন্য দিকে, লেফ্ট ব্যাকে শুভাশিস বসুকে সরিয়ে সেই জায়গায় নিয়মিত হওয়াই প্রধান চ্যালেঞ্জ সুমিত রাঠির কাছে। গোয়ায় সবুজ-মেরুন শিবির থেকে পাওয়া খবর অনুযায়ী, দলের বিদেশিদের মধ্যেও প্রথম দলে থাকার জন্য সুস্থ প্রতিযাগিতা রয়েছে। বুধবার কন্যা সন্তানের বাবা হওয়া পরে আগামী দু’-তিন দিনের মধ্যে স্ত্রী ও সদ্যোজাত সন্তানকে নিয়ে জৈব সুরক্ষা বলয়ের মধ্যে ঢুকে পড়তে চলেছেন রয় কৃষ্ণ। দলে তাঁর জায়গা পাকা। বাকি তিন বিদেশি কারা হবেন, তা নিয়েই বিদেশিরা অনুশীলনে নিজেকে সেরা ছন্দে মেলে ধরতে প্রবল পরিশ্রম করছেন বলে খবর। গত বছর মুম্বই দলে থাকা ‘প্লে-মেকার’ হুগো বুমোস এবং এ বার ইউরো ২০২০-তে খেলে আসা ফিনল্যান্ডের জনি কাউকোর অনুশীলন দেখে হাবাস খুশি।