ব্যর্থ: চিমার খেলায় লাল-হলুদ সমর্থকরা হতাশ। ফাইল চিত্র।
শতবর্ষ প্রাচীন ইস্টবেঙ্গলের ক্যাবিনেটে দেড়শোরও বেশি ট্রফি রয়েছে। অষ্টম আইএসএলে ঐতিহ্যশালী এই ক্লাবের ব্যর্থতায় লাল-হলুদ সমর্থকেরা মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন। অবশ্য ইস্টবেঙ্গলের ইতিহাসে এমন দুঃসময় আগেও এসেছে।
১৯২৮ সালে অন্ধকার নেমে এসেছিল লাল-হলুদে। কলকাতা লিগে সে বার ১৮টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র দু’টিতে জিতেছিল তারা। হেরেছিল নয়টি ম্যাচে। ড্র করেছিল পাঁচটি। অর্জন করেছিল মাত্র নয় পয়েন্ট। দ্বিতীয় ডিভিশনে নেমে যায় ইস্টবেঙ্গল। এখানেই শেষ নয়। ডালহৌসি ক্লাব ৭-১ গোলে পরাস্ত করেছিল লাল-হলুদকে। ভারতের কোনও ক্লাবের বিরুদ্ধে এটাই সর্বাধিক ব্যবধানে হার ইস্টবেঙ্গলের।
গত মরসুমের পরে এ বারও যে আইএসএলে এ ভাবে মুখ থুবড়ে পড়বে এসসি ইস্টবেঙ্গল, তা হয়তো অনেকেই কল্পনা করতে পারেনি। ২০২০-২১ মরসুমে অভিষেকের আইএসএলে ২০টি ম্যাচের মধ্যে মাত্র তিনটিতে জিতেছিলেন লাল-হলুদের ফুটবলাররা। গোল করেছিল ২২টি, খেয়েছিল ৩৩টি। অর্জিত পয়েন্ট ১৭। এগারো দলের আইএসএলে নবম স্থানে শেষ করেছিল এসসি ইস্টবেঙ্গল। অস্বীকার করার জায়গা নেই যে, একেবারে শেষ মুহূর্তে আইএসএলে অন্তর্ভুক্তি হয়েছিল এসসি ইস্টবেঙ্গলের। দল গঠনে দূরদর্শিতার অভাবও ছিল। ফলে চ্যাম্পিয়ন বা রানার্স হওয়ার আশা কেউ করেননি ঠিকই, তাই বলে এ রকম ফল! অষ্টম আইএসএলেও একই ঘটনার পুনরাবৃত্তি। আগের বার প্রথম সাতটি ম্যাচে জয়হীন। অষ্টম ম্যাচে ছবিটা বদলায়। ম্যাচ জিতে মাঠ ছেড়েছিল মশাল-বাহিনী। এ বারও সাতটি ম্যাচে জয় অধরাই থেকে গিয়েছে এসসি ইস্টবেঙ্গলের। অষ্টম ম্যাচে হায়দরাবাদ এফসিকে হারিয়ে কি জয়ের সরণিতে ফিরতে পারবেন ড্যানিয়েল চিমারা? চলতি আইএসএলে এখনও পর্যন্ত নয়টি গোল করেছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। খেয়েছে ১৭টি। রয়েছে লিগ টেবলে ১১তম স্থানে। অর্থাৎ, সবার শেষে।
২০২০ সালের ২৭ নভেম্বর থেকে ২০২১-এর ১৯ ডিসেম্বর— আইএসএলে এখনও পর্যন্ত ২৭টি ম্যাচ খেলেছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। জিতেছে মাত্র তিনটিতে! শেষ ম্যাচ তারা জিতেছিল ২০২১-এর ৭ ফেব্রুয়ারি। জামশেদপুর এফসির বিরুদ্ধে। সপ্তম আইএসএলে ১৬তম ম্যাচ ছিল লাল-হলুদের। এর পরে টানা ১১টি ম্যাচে জয়হীন লাল-হলুদ। লজ্জার এখানেই শেষ নয়। ওড়িশা এফসির কাছে ৪-৬ গোলে হেরেছে তারা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী এটিকে-মোহনবাগানের বিরুদ্ধে আইএসএলে এখনও পর্যন্ত তিনটি ডার্বি খেলেছে এসসি ইস্টবেঙ্গল। সব ম্যাচেই হেরেছে।
১৯৮৭ সালে লাল-হলুদ জার্সি পরে কলকাতা লিগে খেলতে নেমেই ঝড় তুলেছিলেন চিমা ওকোরি। ২৬টি গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতাও হয়েছিলেন তিনি। এই কারণেই এসসি ইস্টবেঙ্গলের নতুন চিমা (ড্যানিয়েল)-কে নিয়ে আগ্রহ তুঙ্গে ছিল ফুটবলপ্রেমীদের। কিন্তু একেবারেই হতাশ করেছেন তিনি। সাতটি ম্যাচে মাত্র দু’টি গোল করা নতুন চিমা দলকে কতটা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন, সেটাই এখন
সবচেয়ে বড় প্রশ্ন।