— প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।
দু’দলের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ আলাদা। এক দিনে ইস্টবেঙ্গল সুপার কাপের গ্রুপ পর্বে ভাল খেলেছে। ফর্মে রয়েছেন দলের ফুটবলারেরা। অন্য দিকে মোহনবাগান জিতলেও দাপট দেখাতে পারেনি গ্রুপ পর্বে। এই পরিস্থিতিতে শুক্রবার সুপার কাপের ডার্বি খেলতে নামছে দুই প্রধান। যে দল জিতবে সেই দল পৌঁছে যাবে সেমিফাইনালে। ড্র করলেও অবশ্য লাল-হলুদের সুবিধা। সেই ম্যাচের আগে তৈরি দুই প্রধান।
খাতায়-কলমে এগিয়ে রয়েছে ইস্টবেঙ্গল। কিন্তু তারা জানে, ডার্বিতে কোনও দল এগিয়ে থাকে না। ড্র করলেই সেমিফাইনালে জায়গা করে নেওয়ার সুযোগ থাকলেও জেতার কথা ভাবছেন লাল-হলুদ কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত। অন্য দিকে মোহনবাগানের সামনে জেতা ছাড়া কোনও উপায় নেই। তাগিদ তাদের বেশি। সে ভাবেই পরিকল্পনা করেছেন সহকারী কোচ ক্লিফোর্ড মিরান্ডা। নেপথ্যে অবশ্য রয়েছেন প্রধান কোচ আন্তোনিয়ো লোপেজ় হাবাস। তিনি এখনও সরাসরি দায়িত্ব না নেওয়ায় কোচের ভূমিকা পালন করছেন মিরান্ডা।
মোহনবাগানের শক্তি, দুর্বলতা:
শক্তি— ১) অনেক ফুটবলার দীর্ঘ দিন একসঙ্গে খেলছেন। ফলে তাঁদের বোঝাপড়া ভাল। বড় ম্যাচে তা কাজে আসে।
২) জেসন কামিন্স, আর্মান্দো সাদিকুর মতো অভিজ্ঞ ফুটবলার রয়েছেন। তাঁরা নিজেদের দেশের জাতীয় দলের হয়ে খেলেছেন। যে কোনও পরিস্থিতিতে একক দক্ষতায় ম্যাচ রঙ বদলে দিতে পারেন।
দুর্বলতা— ১) দলের আট ফুটবলার নেই। ফলে বিকল্প কম কোচের কাছে।
২) প্রথম একাদশের কিছু ফুটবলারেরা ডার্বি খেলার অভিজ্ঞতা নেই। বড় ম্যাচে চাপে পড়তে পারেন তাঁরা।
ইস্টবেঙ্গলের শক্তি, দুর্বলতা:
শক্তি— ১) ঠিক সময়ে দল ফর্মে ফিরেছে। বিদেশি ফুটবলারেরা ভাল খেলছেন।
২) কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের মগজাস্ত্র ভয়ঙ্কর। তার জেরে টেক্কা দিতে পারেন তিনি।
দুর্বলতা— ১) ড্র করলেই সেমিফাইনাল পাকা, এই মানসিকতা ঢুকে যেতে পারে ফুটবলারদের মধ্যে। তা হলেই সমস্যায় পড়়বে তারা।
২) মোহনবাগানের আট জন ফুটবলার না থাকায় তাদের দুর্বল ভাবলে ভুল করবে ইস্টবেঙ্গল।
কী বলছেন দুই দলের দুই কোচ:
ক্লিফোর্ড মিরান্ডা— দলের আট ফুটবলার না থাকলেও হুঙ্কার দিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘‘আমরা এই ম্যাচের গুরুত্ব জানি। শুধু ডার্বি বলে নয়, এই ম্যাচের উপর সেমিফাইনালের জায়গা নির্ভর করছে। সেটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এটা আমার প্রথম ডার্বি। তাই আমি উত্তেজিত।’’ তার পরেই নিজের দলের প্রস্তুতি নিয়ে বলতে গিয়ে মিরান্ডা বলেন, ‘‘ডার্বির আগে অতিরিক্ত চাপ নিতে চাই না। আমার কাছে এটা আরও একটা ম্যাচ। নিজের দায়িত্ব পালন করব। ফুটবলারেরাও নিজের খেলা খেলবে। জানি এই ধরনের ম্যাচে পুরো শক্তির দল থাকা দরকার। আমাদের আট জন নেই। যারা আছে তারা নিজেদের ১০০ শতাংশ দেবে। তা হলেই জিতব।’’
কার্লেস কুয়াদ্রাত— জেতা ছাড়া কিছু ভাবছেন না কুয়াদ্রাত। লাল-হলুদ কোচ বলেন, “দুটো দলই অনুপ্রাণিত হয়ে নামবে। আমরা জানি যে ফুটবল এমন একটা খেলা যেখানে ড্রয়ের জন্য খেলতে নামলে হারতে হবে। তাই আমরা জেতা ছাড়া কিছু ভাবছি না।”
কী বলছেন দুই দলের দুই অধিনায়ক:
ব্রেন্ডন হামিল (মোহনবাগানের অধিনায়ক)— ডার্বির গুরুত্ব জানেন তিনি। জানেন, এই প্রতিযোগিতার গুরুত্বও। হামিল বলেন, ‘‘ডার্বিতে খেলার জন্য আলাদা করে কোনও অনুপ্রেরণা লাগে না। কয়েকটা ডার্বি খেলেছি। তাই জানি সমর্থকদের কাছে এই খেলার গুরুত্ব কতটা। সূচি ঘোষণা হলে সবাই আগে দেখে ডার্বি কবে। এই ম্যাচ জিততে পারলে এশিয়ার ফুটবলে খেলার একটা সুযোগ পাওয়া যাবে। তাই আমরা মুখিয়ে আছি।’’
ক্লেটন সিলভা (ইস্টবেঙ্গল অধিনায়ক)— জেতার কথা ভাবছেন দলের অধিনায়কও। কোচের পাশে দাঁড়িয়ে ক্লেটন বললেন, “আমরা কোনও ভাবেই ড্রয়ের কথা ভাবছি না। অবশ্যই ম্যাচটা আমাদের জিততে হবে। ডার্বি খেলা সব সময়েই আনন্দের। এটা ভারতের সবচেয়ে বড় ম্যাচ। তার অংশ হতে পেরে গর্বিত।”
কখন, কোথায় দেখা যাবে খেলা: শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা থেকে শুরু খেলা। দেখা যাবে জিয়ো সিনেমায়।