দিমিত্রি পেত্রাতোস। ছবি: সমাজমাধ্যম।
ডুরান্ড কাপ ফাইনাল থেকে শুরু হয়েছে বিষয়টি। আইএসএলেও তার ব্যতিক্রম নেই। নিয়ম করে প্রতি ম্যাচেই গোল খাচ্ছে মোহনবাগান। আক্রমণ ভাগে ভাল ফুটবলার নেওয়ায় দুর্বল হয়েছে রক্ষণ। সেটারই সুযোগ কাজে লাগাচ্ছে বিপক্ষ। তবে শনিবার রাতে বেঙ্গালুরুর কাছে পর্যুদস্ত হওয়ার পর রক্ষণ ভাগের বদলে আক্রমণ ভাগকেই দোষ দিলেন মোহনবাগানের কোচ হোসে মোলিনা। তাঁর মতে, আক্রমণ ভাগের খেলোয়াড়েরা নিজেদের কাজ ঠিক করে করতে পারছেন না বলেই গোল খেতে হচ্ছে।
শনিবার আগ্রাসী ফুটবল খেলে মোলিনার দলকে ৩-০ হারায় বেঙ্গালুরু এফসি। ন’মিনিটের মাথায় স্পেনের ফরোয়ার্ড এডগার মেন্ডেজ়ের গোলের পর ২০ মিনিটের মাথায় ব্যবধান বাড়ান সুরেশ ওয়াংজাম। বিরতির পর পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে টানা তৃতীয় জয় এনে দেন সুনীল ছেত্রী। শনিবারের এই জয়ের ফলে বেঙ্গালুরু লিগ টেবলের শীর্ষে চলে গিয়েছে। মরসুমের প্রথম হারের ফলে তিন ম্যাচে চার পয়েন্ট নিয়ে ছ’নম্বরে নেমে এসেছে গত বারের লিগ-শিল্ড চ্যাম্পিয়ন মোহনবাগান। আইএসএলে এটিই সবচেয়ে খারাপ শুরু তাদের। আগে কখনও আইএসএলের প্রথম তিন ম্যাচে এত কম পয়েন্ট পায়নি তারা।
ম্যাচের পর মোলিনা বলেছেন, “সত্যিই প্রতি ম্যাচে গোল খাচ্ছি আমরা। কিছু গোল খেয়েছি রক্ষণের ভুলে। তবে বেশিরভাগ গোলই হয়েছে আক্রমণের ভুল থেকে। আমার মনে হয় রক্ষণকে শক্তিশালী করে তুলতে হলে আক্রমণেও উন্নতি আনতে হবে। আক্রমণ যত ধারালো হবে রক্ষণও তত ভাল খেলবে। আমার কাছে দুটো ব্যাপার একই। দুটোর মধ্যে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক রয়েছে। তা ছাড়া আমরা আজ বেশিরভাগ সময়ই পা থেকে বল হারিয়েছি। গত ম্যাচের মতো আক্রমণও ভাল হয়নি। জেতার জন্য এগুলো খুবই দরকার।”
তারা যে সব বিভাগেই পিছিয়ে ছিলেন তা স্বীকার করে নিয়েছেন মোলিনা। বলেছেন, “ঘরের মাঠের যাবতীয় সুবিধা বেঙ্গালুরু কাজে লাগিয়েছে। আমরা সমস্যা মেটাতে সাহালকে নামাই। দুর্ভাগ্য যে সাহালও চোট পেয়ে বেরিয়ে যায়। সমস্যা থেকে বার হতে আক্রমণে শক্তি বাড়াতে হত ও বলের নিয়ন্ত্রণও বাড়ানোর প্রয়োজন ছিল। দু’দিক দিয়েই বেঙ্গালুরু আমাদের চেয়ে এগিয়ে ছিল।”
তিনি আরও বলেন, “প্রতিপক্ষের গোলের সামনে একেবারেই নিখুঁত খেলতে পারিনি আমরা। এই ব্যাপারেও ওরা আমাদের পিছনে ফেলে দিয়েছে। প্রতিপক্ষের গোলের সামনে আমাদের ফিনিশ, শুটিং খুব খারাপ হয়েছে। তাই আমরা সুযোগ পেয়েও কাজে লাগাতে পারিনি। গোল করতে না পারলে ম্যাচ জেতা যায় না। বেঙ্গালুরু বার বার রক্ষণে লোক বাড়িয়ে আমাদের আটকে দিয়েছে। বলের ওপর দখলও বেশি ছিল ওদের। সব মিলিয়ে খারাপ খেলেছি।”
তবু এই ম্যাচ থেকেও ইতিবাচক দিক খুঁজে পেয়েছেন মোলিনা। বলেছেন, “প্রতি ম্যাচেই কিছু না কিছু ইতিবাচক দিক পাওয়া যায়। এই ম্যাচে যদিও তা খুঁজে পাওয়া কঠিন ছিল। তবে আমাদের ফুটবলাররা শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত গোলের চেষ্টা করে গিয়েছে। পরের ম্যাচে অনেক ভাল খেলতে হবে। সমর্থকদের কথা ভেবে জয়ে ফিরতে হবে। যাঁরা সমর্থন করতে এসেছিলেন তাঁদের ধন্যবাদ। আমরা শেষ পর্যন্ত লড়েছি। আশা করি পরের ম্যাচে এর চেয়ে অনেক ভাল খেলব এবং জিতে তিন পয়েন্ট পাব।”
আইএসএলে মোহনবাগানের পরবর্তী দু’টি ম্যাচই ডার্বি। প্রথমটি তারা খেলবে ফর্মে থাকা মহমেডানের বিরুদ্ধে, ৫ অক্টোবর। তার পরের ম্যাচটি ইস্টবেঙ্গলের বিরুদ্ধে ১৯ অক্টোবর।