লক্ষ্য: শিল্ড জয়ের পরে ট্রফিও জিততে মরিয়া হাবাস। —ফাইল চিত্র।
তিন বছরের বেশি ব্যবধান। মাঝে অনেক কিছু পরিবর্তন ঘটে গিয়েছে। সে দিন আইএসএলে মুম্বই সিটি এফসির বিরুদ্ধে তৎকালীন এটিকে মোহনবাগান ড্র করলেই লিগ শিল্ড ঘরে তুলতে পারত। মুম্বইয়ের প্রয়োজন ছিল জয়ের। ২-০ জিতে লিগ শিল্ড তো নিশ্চিত করেই মুম্বই, ফাইনালেও মোহনবাগানকে হারিয়ে আইএসএল ট্রফি ঘরে তোলে। সে দিনই বাগান কোচ আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস কি প্রতিজ্ঞা করেছিলেন, এক দিন তার যোগ্য জবাব দেবেন?
চলে আসা যাক বর্তমানে। এ বারে মোহনবাগানের জন্য মরণ-বাঁচন ম্যাচ। সেই সঙ্গে আটবারের মুখোমুখি সাক্ষাতে মুম্বই-এর সঙ্গে এক বারও জিততে না পারার তেতো রেকর্ড। কিন্তু ২-১ ব্যবধানে দুরন্ত জয় ছিনিয়ে নিয়ে প্রথমবারের জন্য লিগ শিল্ড জয়। নেপথ্যে সেই হাবাস। আইএসএল ট্রফি আসবে কি না জানা নেই, কিন্তু প্রথম ধাপে ইতিমধ্যেই ইতিহাস তৈরি করেছেন হাবাস।
সোমবার যুবভারতীর রং ছিল সবুজ-মেরুন। শেষ বাঁশি বাজার সঙ্গে সঙ্গে প্রায় ৬২,০০০ দর্শকের সঙ্গে সঙ্গে শুভাশিস বসু, দিমিত্রি পেত্রাতস, জেসন কামিংসরা উৎসবে মেতে উঠলেও সেই উদ্যাপনে দেখা যায়নি হাবাসকে। দল যখন ইতিহাস তৈরি করে আবেগে ভেসে যাচ্ছে, অদ্ভুত রকম নির্লিপ্ত ছিলেন তিনি। তাঁর সামনে এ বার লক্ষ্য আইএসএল ট্রফি। এমনকি ফুটবলারদের তিন দিনের জন্য ছুটি দিলেও কলকাতার বাইরে যেতে কড়া নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। ফুটবলাররা যাতে লক্ষ্যভ্রষ্ট না হন, তাই এই নির্দেশিকা। শুক্রবার থেকে অনুশীলন শুরু করবেন দিমিত্রিরা। এ দিন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তরফে ফুল ও মিষ্টি পাঠানো হয় ক্লাবে। অভিনন্দন জানানো হয় ইস্টবেঙ্গল ও আইএফএ-র তরফেও।
সোমবারের সাংবাদিক বৈঠকে এসে সহকারী কোচ ম্যানুয়েল কাসকালানা বলে যান, “আমাদের কাছে প্রতিযোগিতার সেরা দল রয়েছে। যদি নিজেদের সেরাটা দিয়ে খেলতে পারি, তবে কোনও দলই আটকাতে পারবে না।” এখানেই না থেমে যোগ করেন, “চেন্নাইয়িনের বিরুদ্ধে হারের পরেও আমরা নিজেদের উপর থেকে বিশ্বাস হারাইনি। হাবাসের বেঞ্চে থাকাটা খুবই প্রয়োজন ছিল। উনি দলের মূল চালিকাশক্তি।” দলের অধিনায়ক শুভাশিস বসু বলেন, “চেন্নাইয়িন এফসির বিরুদ্ধে হারের পরে আমাদের কাছে প্রতিটি ম্যাচই সেমিফাইনাল ছিল। সেই মানসিকতা নিয়ে নেমেছি বলেই অধরা লিগ-শিল্ড জিততে পেরেছি। এই জয় দলগত জয়।” আরও যোগ করেন, “মরসুমে উত্থান-পতন থাকেই। আট-নয় মাসের দীর্ঘ পরিশ্রমের ফসল পেলাম।”
হাবাসও সমাজমাধ্যমে লিখেছেন, “সহকারীদের ধন্যবাদ জানাই আমার অনুপস্থিতিতে দলকে ঠিক ভাবে পরিচালনার জন্য। প্রত্যেক খেলোয়াড় নিজের সেরাটা দিয়েছে। সমর্থকদেরও ধন্যবাদ, আমাদের উপরে বিশ্বাস রাখার জন্য। আরও অনেক স্বপ্নপূরণ বাকি রয়েছে। আমাদের কাজ করে যেতে হবে।”
মোহনবাগানের লিগ-শিল্ড জয়ে শামিল হয়েছে কলকাতা মেট্রোও। মঙ্গলবার মেট্রোর তরফে হাবাসের ছবি দিয়ে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করা হয়েছে। যেখানে দেখা গিয়েছে হাবাস বলছেন, “ছেলেরা, চলো গঙ্গার নীচে মেট্রোয় চড়ি। ওটাও ভারতসেরা।”