মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো হাবাস। ছবি: এক্স।
কোচ হিসাবে প্রথম বার মোহনবাগানকে লিগ-শিল্ড এনে দিয়েছেন। সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জটা জেতা হয়ে গিয়েছিল ওখানেই। এ বার আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাসের সামনে আইএসএল ফাইনাল। অতীতে দু’বার এই ট্রফি জেতার সৌভাগ্য হয়েছে তাঁর। কোচ হিসাবে তৃতীয় বার এই ম্যাচে নামার আগে হাবাসের মনে হচ্ছে, এই ম্যাচ অন্য রকম হবে। তিনি বার বার বললেন, একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করতে চান।
শুক্রবার রাজারহাটে একটি হোটেলে ম্যাচের আগে সাংবাদিক বৈঠক ছিল। সহকারী ম্যানুয়েল পেরেস, ফুটবলার শুভাশিস বসু এবং দিমিত্রি পেত্রাতোসকে নিয়ে ঢোকার সময় হাবাসের শরীরে কোনও চিন্তার চাপ লক্ষ করা যায়নি। আগাগোড়া হালকা মেজাজে সময় কাটালেন।
প্রশ্নটা উঠেছিল শুরুতেই। আইএসএল ফাইনাল এবং হাবাস কি সমার্থক হয়ে গিয়েছেন? স্পেনের কোচের মধ্যে বিন্দুমাত্র হেলদোল দেখা গেল না। বললেন, “আইএসএলের ইতিহাস দেখলে বলব, হ্যাঁ। তবে আমার কাছে এ সব প্রাসঙ্গিক নয়। ফুটবলে দীর্ঘ দিন কিছু থাকে না। কাল মাঠে নেমে লড়ে ট্রফি জিততে হবে। আমাদের একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করতে হবে। কী ভাবে জিততে হবে সেটা আমরা জানি। খেলোয়াড়দেরও বুঝিয়েছি।”
বৃত্ত সম্পূর্ণ করার ব্যাপার নির্দিষ্ট করে কোনও ব্যাখ্যা দেননি। তবে ফুটবলমহলের মতে, ডুরান্ড কাপ জয় দিয়ে মোহনবাগানের যে মরসুম শুরু হয়েছিল, তা শেষ করতে চাইছেন আইএসএল ফাইনাল এবং ত্রিমুকুট জিতে। অন্য একাংশের মতে, গোটা বছর যে পরিশ্রম করেছে মোহনবাগান, তা ফাইনাল জিতলেই সম্পূর্ণ হবে বলে মনে করছেন হাবাস।
ফাইনালে কোনও দলকেই ফেভারিট হিসাবে মানতে চাইলেন না হাবাস। বলেছেন, “ফাইনালে কোনও ফেভারিট হয় না। চাইও না সেটা হোক। প্রতিটা ম্যাচের আলাদা গুরুত্ব থাকে। এক মুহূর্তে সব কিছু বদলে যেতে পারে। সমর্থকেরা পাশে রয়েছেন জানি। কিন্তু ওঁরা তো মাঠে নেমে খেলবেন না।”
ম্যাচ কি অতিরিক্ত সময়ে যেতে পারে, না কি ৯০ মিনিটেই শেষ করতে চাইবেন? হাবাস সঙ্গে সঙ্গে বললেন, “আমি চাই ৪৫ মিনিটে শেষ হয়ে যাক।” গোটা হল ফেটে পড়ল হাসিতে। হাবাস নিজেও হাসলেন কিছু ক্ষণ। তার পরে বললেন, “কোনও কোচই চায় না ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ে গড়াক। তার উপর এই গরম। আমরা ৯০ মিনিটেই খেলা শেষ করতে চাই। তবে অতিরিক্ত সময় বা টাইব্রেকারে গেলে তার জন্যও তৈরি।”
লিগ-শিল্ড পকেটে থাকলেও ফাইনালে সম্পূর্ণ আলাদা ম্যাচ বলে দিলেন হাবাস। তাঁর কথায়, “এই ম্যাচের সঙ্গে কিছুর তুলনা হয় না। লিগের কোনও ম্যাচ খেলতে নামছি না। দুটো দলেরই সমান সুযোগ রয়েছে জেতার। দুটো দলের সামনেই লক্ষ্য এক।”
একটু থেমে বললেন, “সব কাজেই চাপ থাকে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত। এ ধরনের ম্যাচে চাপ তো থাকবেই। আমরা জানি কী ভাবে সেটা সামলাতে হয়।”
ফাইনালের আগে আচমকা উঠেছিল হুগো বুমোসের প্রসঙ্গও। ওই এক বারই একটু বিরক্ত শোনাল হাবাসের গলা। বললেন, “একটা কোচের তো সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার রয়েছে। দলের ভালর জন্যই কাউকোকে নিয়েছি। আমি জানি যে ভাল সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ভাল ফুটবলারের কোনও বিকল্প হয় না।”