UEFA Euro 2024

গোল করে ফেস গার্ড খুলে এমবাপের উল্লাস, তবু ড্র ফ্রান্সের, ডাচদের হারিয়ে শীর্ষে অস্ট্রিয়া

চোট সারিয়ে দলে ফিরে গোল করলেন কিলিয়ান এমবাপে। তার পরেও ফ্রান্সকে জেতাতে পারলেন না তিনি। অন্য খেলায় নেদারল্যান্ডসকে হারিয়ে গ্রুপ শীর্ষে থেকে পরের রাউন্ডে গেল অস্ট্রিয়া।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০২৪ ২৩:৩০
Share:

গোল করে ফেস গার্ড খুলে উল্লাস করেন কিলিয়ান এমবাপে। ছবি: রয়টার্স।

ফ্রান্স ১ — পোল্যান্ড ১
নেদারল্যান্ডস ২ — অস্ট্রিয়া ৩

Advertisement

কিলিয়ান এমবাপে মাঠে ফিরতেই বদলে গেল ফ্রান্সের খেলা। এমবাপেকে ছাড়া যে দল আগের ম্যাচে নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে কোনও মতে ড্র করেছিল, সেই দলই পোল্যান্ডকে নাচিয়ে ছাড়ল। অন্তত ছ’টি গোল করতে পারত ফ্রান্স। সহজ সুযোগ নষ্ট হল। শেষ পর্যন্ত সেই এমবাপেই পেনাল্টি থেকে গোল করলেন। ইউরোয় নিজের প্রথম গোল করলেন তিনি। নাকে চোট পাওয়ায় ফেস গার্ড পরে খেলতে নেমেছিলেন এমবাপে। গোল করার আনন্দে সেই ফেস গার্ড খুলে ফেললেন তিনি।

এমবাপের গোলের পরেও জিততে পারল না ফ্রান্স। সুযোগ নষ্টের খেসারত দিতে হল তাদের। রবার্ট লেয়নডস্কি পেনাল্টি থেকে গোল করে সমতা ফেরান। একটি জয় ও দু’টি ড্রয়ের ফলে ৫ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে শেষ করে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে উঠল ফ্রান্স। ড্র করে ১ পয়েন্ট নিয়ে বিদায় নিতে হল পোল্যান্ডকে।

Advertisement

গ্রুপ ডি-র অন্য খেলায় নেদারল্যান্ডসকে হারাল অস্ট্রিয়া। প্রথমে পোল্যান্ড ও তার পরে ডাচদের হারিয়ে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ শীর্ষে থেকে শেষ ষোলোয় গেল অস্ট্রিয়া। নেদারল্যান্ডস হারলেও তাদের পয়েন্ট ৪। ফলে সেরা তৃতীয় দল হিসাবে প্রি কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিল তারা। অর্থাৎ, গ্রুপ ডি থেকে তিনটি দল গেল পরের রাউন্ডে।

এমবাপে ফেরায় প্রথম একাদশে আঁতোয়া গ্রিজ়ম্যানকে রাখেননি কোচ দিদিয়ের দেশঁ। গ্রিজ়ম্যান যেখানে খেলেন সেখানেই খেলা শুরু করেন এমবাপে। খেলার শুরু থেকেই ফরাসি আক্রমণ। ১১ মিনিটের মাথায় প্রথম সুযোগ উসমান ডেম্বেলের। বাঁ প্রান্ত থেকে তাঁর শট ভাল বাঁচান স্কোরুপস্কি। তিন মিনিট পরেই অবশ্য সুযোগ পেয়েছিল পোল্যান্ড। জ়িমানস্কির শট ভাল বাঁচান মাইগনান।

মাঝমাঠে কান্তের পা থেকে ফ্রান্সের বেশির ভাগ আক্রমণ তৈরি হচ্ছিল। কখনও এমবাপে, কখনও দেম্বেলের দিকে বল বাড়াচ্ছিলেন তিনি। ফলে সুযোগ পাচ্ছিল ফ্রান্স। এমবাপে নিজেই বক্সে ঢুকে অন্তত দু’বার গোল করার জায়গায় চলে গিয়েছিলেন। কিন্তু স্কোরুপস্কিকে পরাস্ত করতে পারেননি তিনি।

গোলের আশায় রবার্ট লেয়নডস্কিকে এই ম্যাচে খেলিয়েছিলেন পোল্যান্ডের কোচ। প্রতি আক্রমণ থেকে দু’এক বার সুযোগ পেলেও তা কাজে লাগাতে পারেননি তিনি। ফ্রান্সের রক্ষণ জমাট ছিল। এমবাপে আক্রমণের পাশাপাশি রক্ষণেও নামছিলেন। ফেস গার্ড পরে এক বারের জন্যও নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেননি তিনি। প্রত্যেকটা লড়াইয়ে যাচ্ছিলেন। গোল করার আপ্রাণ চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু প্রথমার্ধ শেষ হয় গোলশূন্য অবস্থায়।

দ্বিতীয়ার্ধেও ফ্রান্স একের পর এক আক্রমণ করতে থাকে। তার ফলও পায় তারা। বক্সে দেম্বেলেকে ফাউল করেন পোল্যান্ডের কিউইয়র। পেনাল্টি পায় ফ্রান্স। স্পট থেকে গোলরক্ষকের বাঁ দিক দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন এমবাপে। তার পরে ছুটে যান দর্শকদের দিকে। খুলে ফেলেন ফেস গার্ড। তাঁকে জড়িয়ে ধরে উল্লাস করেন সতীর্থেরা।

গোল খাওয়ার পরে আক্রমণের ঝাঁজ একটু বাড়ায় পোল্যান্ড। ফলও পায় তারা। সুইয়িডারস্কিকে বক্সে ফাউল করেন উপামেকানো। পেনাল্টি পায় পোল্যান্ড। সেখানেও নাটক। লেয়নডস্কির প্রথম শট বাঁচিয়ে দেন মাইগনান। কিন্তু শট মারার আগেই মাইগনান গোল লাইন ছেড়ে বেরিয়ে আসায় লেয়নডস্কিকে আবার পেনাল্টি নিতে বলেন রেফারি। দ্বিতীয় বার গোল করে সমতা ফেরান লেয়নডস্কি।

বাকি সময়ে দু’দলই গোল করার অনেক চেষ্টা করে। কিন্তু গোলের মুখ খুলতে পারেনি তারা। ১-১ ড্র করেই সন্তুষ্ট থাকলে হল ফ্রান্সকে। এমবাপে মাঠে ফিরে ভাল খেললেও যে ভাবে এই ম্যাচে তারা সুযোগ নষ্ট করল তা চিন্তায় রাখবে দেশঁকে।

গ্রুপের অন্য খেলায় চমক দিল অস্ট্রিয়া। নেদারল্যান্ডসকে ৩-২ গোলে হারাল তারা। ৬ মিনিটের মাথায় বল বার করতে গিয়ে আত্মঘাতী গোল করেন নেদারল্যান্ডসের ডনিয়েল মালেন। এগিয়ে যায় অস্ট্রিয়া। চলতি ইউরোয় আরও একটি আত্মঘাতী গোল হল। প্রথমার্ধে মাঝমাঠের দখল বেশি ছিল অস্ট্রিয়ার। ফলে প্রথমার্ধে সমতা ফেরাতে পারেনি নেদারল্যান্ডস।

দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই ডাচদের হয়ে সমতা ফেরান কডি গাকপো। ৫৯ মিনিটে আবার এগিয়ে যায় অস্ট্রিয়া। এ বার গোল করেন রোমানো স্মিড। তাঁর হেড বার করতে পারেননি নেদারল্যান্ডসের ডিফেন্ডার। পিছিয়ে পড়ে ওপেন ফুটবল খেলা শুরু করে নেদারল্যান্ডস। ফলে দুই দলই সুযোগ তৈরি করতে থাকে। ৭৫ মিনিটে উইঘর্স্টের হেড থেকে গোল করে আবার সমতা ফেরান মেম্ফিস ডেপায়। ৫ মিনিট পরে আবার এগিয়ে যায় অস্ট্রিয়া। এ বার গোল করেন মার্সেল সাবিৎজ়ার। পরে অস্ট্রিয়ার আরও একটি গোল অফসাইডে বাতিল হয়। শেষ পর্যন্ত জিতে ৬ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ শীর্ষে থেকে মাঠ ছাড়ে অস্ট্রিয়া। যে গ্রুপে ফ্রান্স, নেদারল্যান্ডসের মতো দল রয়েছে সেই গ্রুপের শীর্ষে শেষ করে অস্ট্রিয়া দেখিয়ে দিল, অনেক দূর যাওয়ার লক্ষ্যে এসেছে তারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement