ইন্দোনেশিয়ার স্টেডিয়ামে গত ১ অক্টোবরের হাঙ্গামা। ফাইল চিত্র
ভয়াবহ স্মৃতি আর রাখতে চাইছে না ইন্দোনেশিয়া। যে স্টেডিয়ামে হাঙ্গামার সময় পদপিষ্ট হয়ে ১৩০ জন মারা গিয়েছিলেন, সেই ফুটবল স্টেডিয়াম সম্পূর্ণ ধ্বংস করে ফেলতে চাইছে তারা। সেখানেই তৈরি হবে নতুন স্টেডিয়াম।
গত ১ অক্টোবর ইন্দোনেশিয়ার মালাংয়ে লিগের ম্যাচ চলার সময় হাঙ্গামা বাঁধে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। পদপিষ্ট হয়ে ১৩০ জন মারা যান। মঙ্গলবার ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোরো উইডোডো বলেন, ফুটবল পাগল ওই দেশে খেলার আমূল সংস্কার প্রয়োজন। সেই লক্ষ্যেই তাঁরা ওই স্টেডিয়াম ভেঙে ফেলে নতুন স্টেডিয়াম তৈরি করবেন।
বিশ্ব ফুটবলের নিয়ামক সংস্থা ফিফার প্রধান জিয়ান্নি ইনফান্তিনোর সঙ্গে নিজের বাসভবনে বৈঠক করেন উইডোডো। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘মালাংয়ের কানজুরুহান স্টেডিয়ামকে আমরা পুরো ভেঙে ফেলব। তার পর সেখানে ফিফার নির্ধারিত মান বজায় রেখে নতুন স্টেডিয়াম তৈরি করব আমরা। ইন্দোনেশিয়ার ফুটবলকে যে ঢেলে সাজাতে হবে, সে ব্যাপারে আমি এবং ফিফা সভাপতি এক মত। প্রতিটি পদক্ষেপ ফিফার বিধি অনুযায়ী করতে হবে।’’
ইনফান্তিনো বলেন, ‘‘ইন্দোনেশিয়া ফুটবল পাগল দেশ। এখানে ১০ কোটি মানুষের কাছে ফুটবল একটা প্যাশন। তাঁরা যখন খেলা দেখতে যাবেন, তাঁদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্বও আমাদের।’’
ইন্দোনেশিয়ার ফুটবল লিগে গত ১ অক্টোবর জাভার দুই ক্লাব আরেমা এবং পার্সিবায়া সুরাবায়ার খেলা ছিল। পূর্ব জাভার মালাং রিজেন্সিতে আয়োজিত ম্যাচে আরেমা ৩-২ ব্যবধানে হেরে যায়। এর পর দু’দলের সমর্থকরা মারামারিতে জড়িয়ে পড়েন। একাধিক ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, রাত ১০টার কিছু আগে রেফারি খেলা শেষের বাঁশি বাজাতেই মাঠে নেমে পড়েন আরেমা সমর্থকরা। ক্ষুব্ধ সমর্থকদের আটকানোর চেষ্টা করেন কর্তব্যরত পুলিশ কর্মীরা। পুলিশ কর্মীদের সঙ্গেই সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন আরেমা সমর্থকরা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে কাঁদানে গ্যাস ব্যবহার করে পুলিশ। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় ক্ষুব্ধ জনতা।
বহু মানুষ এক সঙ্গে স্টেডিয়ামের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা শুরু করেন। বাইরে বেরনোর দরজার কাছে শুরু হয় প্রবল ধাক্কাধাক্কি। সেই ধাক্কাধাক্কিতেই অনেকে পড়ে যান। তখনই অনেকে পদপিষ্ট হন। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় অন্তত ৩৪ জনের। পরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথে বা হাসপাতালে চিকিৎসা চলার সময় বাকিদের মৃত্যু হয়।