আইএসএল ট্রফি। —ফাইল চিত্র
এশিয়ান গেমসের জন্য ক্লাবগুলিকে ফুটবলার ছাড়ার অনুরোধ করেছিলেন ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ ইগর স্তিমাচ। এমনকি আইএসএল কিছু দিন পিছিয়ে দেওয়ারও আবেদন করেছিলেন তিনি। আইএসএলের আয়োজক এফএসডিএল (ফুটবল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড)-এর কাছে এই অনুরোধ করেছিলেন সর্বভারতীয় ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কল্যাণ চৌবে। কিন্তু কোনও অনুরোধেই কাজ হল না। নির্ধারিত দিনেই প্রতিযোগিতা শুরু হবে বলে জানিয়েছেন এফএসডিএল-এর এক মুখপাত্র।
একটি সংবাদমাধ্যমে এফএসডিএল-এর ওই মুখপাত্র বলেন, ‘‘নির্ধারিত দিন, অর্থাৎ ২১ সেপ্টেম্বরই আইএসএল শুরু হতে চলেছে। প্রতিযোগিতার প্রতিটা দল, স্পনসর ও সম্প্রচারকারীদের সঙ্গে বৈঠকের পরেই দিন ঠিক করা হয়েছিল। সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থাও তাতে রাজি হয়েছিল। অন্য সব প্রতিযোগিতার কথা মাথায় রেখে এই সময় আইএসএল-এর সূচি ঠিক হয়েছে। তাই এখন প্রতিযোগিতা পিছিয়ে দেওয়ার কোনও জায়গা নেই।’’
ওই মুখপাত্র আরও জানিয়েছেন, এএফসি কাপের জন্য একটা সময় কিছু দিন আইএসএল বন্ধ থাকবে। এই বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে সবাই। অন্য কোনও প্রতিযোগিতার জন্য সময় বার করা সম্ভব নয়। তিনি বলেন, ‘‘আইএসএলের যে সূচি ঠিক করা হয়েছে তাতে সব পক্ষ সম্মত হয়েছে। এএফসি এশিয়ান কাপের জন্য প্রতিযোগিতা কয়েক দিন বন্ধ থাকবে। গোটা মরসুম ধরে ফুটবল প্রতিযোগিতা রয়েছে। তাই এই সময়ে সূচিতে বদল করতে গেলে সমস্যা হবে। সর্বভারতীয় ফুটবল সংস্থার সঙ্গে কথা বলেছে এফএসডিএল। নির্ধারিত সময়েই প্রতিযোগিতা শুরু হবে।’’
বুধবার ভারতীয় ফুটবল সংস্থার সভাপতি কল্যাণ বলেছিলেন, ‘‘এফএসডিএল-এর সঙ্গে আমি কথা বলব। আইএসএল অন্তত ১০ দিন পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করব। যদি অক্টোবরে আইএসএল শুরু করা যায় তা হলে এশিয়ান গেমসে পুরো দল পাঠানো যাবে। দেশের হয়ে আন্তর্জাতিক মঞ্চে খেলা গর্বের। সেটাই ক্লাবগুলোকে বোঝানোর চেষ্টা করব।’’
কল্যাণ আরও জানিয়েছিলেন, আইএসএল পিছিয়ে দিলে ক্লাবগুলিরও সুবিধা হবে। কারণ, তারাও সব ফুটবলারকে পেয়ে যাবে। কল্যাণ বলেছিলেন, ‘‘আমার প্রস্তাব মানলে ক্লাবগুলোরও সুবিধা হবে। কারণ, সে ক্ষেত্রে ওরাও আইএসএলের শুরু থেকে সব ফুটবলারকে পাবে। আমরা চেষ্টা করছি দেশের ফুটবল ও ক্লাবের ফুটবলকে একসঙ্গে নিয়ে এগোতে। তাতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে। আশা করি এই অনুরোধ ওরা মানবে।’’ আইএসএল পিছিয়ে দেওয়ার অনুরোধ করেছিলেন ফুটবল সংস্থার সচিব সাজি প্রভাকরণও। কিন্তু তাতে কোনও কাজ হল না।
এশিয়ান গেমসের জন্য ফুটবলার ছাড়া নিয়েও দেশ-ক্লাব দ্বন্দ্ব দেখা দিয়েছে। স্তিমাচ ক্লাবগুলির কাছে ফুটবলার ছাড়ার অনুরোধ করেছিলেন। মোহনবাগান-সহ তিনটি ক্লাব জানিয়েছে, তারা ফুটবলার ছাড়বে। কিন্তু বাকিরা ছাড়তে রাজি নয়। ক্লাবগুলির এই মনোভাবে ক্ষুব্ধ স্তিমাচ। তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, এই মনোভাব দেখালে ভারতের ফুটবলের উন্নতি হবে না। ক্লাবের আগে দেশের স্বার্থ দেখতে হবে। কিন্তু আদতে হচ্ছে তার উল্টো। এ বার আইএসএল নিয়েও সেই একই ঘটনা দেখা গেল।