সুব্রত পাল। ছবি: ইনস্টাগ্রাম
দীর্ঘ দিন ধরেই প্রথম সারির ফুটবল থেকে দূরে ছিলেন। না আইএসএল, না আই লিগ, কোথাওই দেখা যাচ্ছিল না তাঁকে। সেই সুব্রত পাল তুলে রাখলেন বুটজোড়া। শুক্রবার ফুটবল থেকে অবসর নিলেন বাংলার গোলকিপার। ২১ বছরের যাত্রা শেষ হল কার্যত নিঃশব্দেই। নিজে থেকে কোনও কথাই বলেননি। কিন্তু আইএসএল এবং ভারতীয় ফুটবলের সমাজমাধ্যম পোস্ট থেকে জানা যায় তাঁর অবসরের কথা। ২০১৬ সালে অর্জুন পুরস্কার পেয়েছিলেন। ক্লাব এবং দেশের হয়ে অনেক কিছু জিতেছেন। দুর্দান্ত গোলকিপিংয়ের জন্য ফুটবলজীবনে তিনি পরিচিত ছিলেন ‘স্পাইডারম্যান’ নামে।
টাটা ফুটবল অ্যাকাডেমি থেকে গ্র্যাজুয়েট হওয়ার পর ২০০৪ সালে মোহনবাগানে যোগ দেন সুব্রত। সেই বছরই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে অধুনালুপ্ত ডেম্পো ক্লাবের ক্রিশ্চিয়ানো জুনিয়রের সঙ্গে সঙ্ঘর্ষ হয়। সেই সঙ্ঘর্ষে মাঠেই প্রয়াত হন জুনিয়র। অনেকেই সেই ঘটনার জন্য দায়ী করেছিলেন সুব্রতকে। সোদপুরের ছেলেটি অনেক দিন বিষণ্ণ ছিলেন সেই ঘটনার পর।
তবে ঘুরে দাঁড়াতে সময় নেননি। ২০০৭-এ ইস্টবেঙ্গলে যোগ দেন। সে বছরই আই লিগের সেরা গোলকিপার নির্বাচিত হন। এ ছাড়াও পুণে এফসি, প্রয়াগ ইউনাইটেড এবং রাংদাজিয়েদ ইউনাইটেডের মতো ক্লাবে খেলেছেন। ২০১৪ সালে ডেনমার্কের ভেস্টসজায়েল্যান্ডে সই করেন। তবে প্রথম দলের হয়ে খেলতে পারেননি কখনও।
২০১৪ সালেই আইএসএলে আত্মপ্রকাশ। সই করেন মুম্বই সিটির হয়ে। এর পর নর্থইস্ট ইউনাইটেড, হায়দরাবাদ এফসি এবং জামশেদপুর এফসি-র হয়ে খেলেছেন। ইস্টবেঙ্গলে ২০২১ সালে ছিলেন। পরের বছর মোহনবাগানে যোগ দিলেও কোনও ম্যাচ খেলেননি। আইএসএলে ৯৫টি ম্যাচে ২৮টি ক্লিন শিট রয়েছে। ২৬৯টি সেভ করেছেন। ২০১৭-১৮ মরসুমে সোনার গ্লাভস জেতেন জামশেদপুরে খেলার সময়। ভারতের হয়ে ৬৭টি ম্যাচ খেলেছেন। ২০০৭ এবং ২০০৯ সালে নেহরু কাপ জয়ী দলে ছিলেন।
তবে অনেক দিন ধরেই ফুটবলের বাইরে ছিলেন বয়সের কারণে। গত বছর ফুটবল বিশ্বকাপের সময় বিশ্লেষকের কাজ করেছেন। চুলেও পাক ধরেছিল ভালই। শেষ পর্যন্ত নিঃশব্দেই ফুটবল থেকে সরে গেলেন সোদপুরের ‘মিষ্টু’।