ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ ইগর স্তিমাচ। —ফাইল চিত্র
সাফ কাপে ভারতের প্রথম ম্যাচেই লাল কার্ড দেখেছেন ভারতীয় ফুটবল দলের কোচ ইগর স্তিমাচ। লাল কার্ড দেখায় এক ম্যাচের জন্য নির্বাসিত হতে হয়েছে তাঁকে। তবে শাস্তি আর বেশি বাড়েনি স্তিমাচের। অর্থাৎ, নেপাল ম্যাচে না থাকতে পারলেও কুয়েতের বিরুদ্ধে ভারতীয় ডাগআউটে দেখা যাবে স্তিমাচকে।
সাফ-এর জেনারেল সেক্রেটারি আনোয়ারুল হক বলেছেন, ‘‘স্তিমাচকে এক ম্যাচের জন্য নির্বাসিত করা হয়েছে। তার বেশি নয়। ম্যাচ রেফারি তাঁর রিপোর্টে জানিয়েছেন, ম্যাচের মধ্যে গণ্ডগোলের ফলে মাথা গরম করে ফেলেছিলেন স্তিমাচ। খুব বড় অপরাধ তিনি করেননি। তাই সাফ-এর শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে তাঁর রিপোর্ট পাঠানো হয়নি।’’
শনিবার নেপালের বিরুদ্ধে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ খেলতে নামবে ভারত। সেই ম্যাচে সুনীল ছেত্রীদের কোচের ভূমিকায় দেখা যাবে স্তিমাচের সহকারী কোচ মহেশ গাউলিকে। তবে মঙ্গলবার কুয়েতের বিরুদ্ধে আবার সুনীলদের ডাগআউটে ফিরবেন স্তিমাচ।
পাকিস্তান ম্যাচে বিরতির ঠিক আগেই ভারতের ডাগআউটের সামনে পাকিস্তানের ডিফেন্ডারের সঙ্গে লড়াইয়ে বলের নিয়ন্ত্রণ হারান প্রীতম কোটাল। পাকিস্তান থ্রো-ইন পায়। কিন্তু ভারতের কোচ ইগর স্তিমাচ আবেদন করতে থাকেন ফাউলের। রেফারি তাতে কর্ণপাত করেননি। পাকিস্তানের আবদুল্লাহ ইকবাল থ্রো করতে যান। ঠিক তার আগে ভারতের কোচ পিছন থেকে তাঁর হাত থেকে বল কেড়ে নেন।
পাকিস্তানের ফুটবলাররা সঙ্গে সঙ্গে ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন। একের পর এক ফুটবলার ছুটে আসেন। পাকিস্তানের কয়েক জন ফুটবলার ধাক্কা মারেন স্তিমাচকে। ভারতের ফুটবলাররা এসে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করেন। কিন্তু পাকিস্তানের ফুটবলারদের রাগ কিছুতেই কমছিল না। আসরে যোগ দেন পাকিস্তানের কোচও। তিনিও রেগে গিয়ে স্তিমাচকে লক্ষ্য করে কিছু বলতে থাকেন। বেশ কয়েক বার তেড়েও যান।
রেফারি, লাইন্সম্যান এবং দু’দলের কিছু ফুটবলারের মধ্যস্থতায় ঝামেলা থামে। রেফারি ভারতের অধিনায়ক সুনীল এবং পাকিস্তানের অধিনায়ক হাসান বশিরকে মাঠে ডেকে কিছু কথা বলেন। তার পরেই স্তিমাচকে লাল কার্ড দেখান তিনি। পাকিস্তানের কোচকেও হলুদ কার্ড দেখানো হয়। এ ছাড়া হলুদ কার্ড দেখানো হয় ভারতের সন্দেশ জিঙ্ঘন এবং পাকিস্তানের নবিকে।
অবশ্য যা করেছেন তার জন্য বিন্দুমাত্র আক্ষেপ নেই স্তিমাচের। বরং তিনি পরিষ্কার জানিয়েছেন, পরিস্থিতি এলে আবার একই কাজ করবেন তিনি। লাল কার্ড দেখায় পাক ম্যাচের পর স্তিমাচ সাংবাদিক বৈঠকে আসতে পারেননি। কিন্তু টুইটারে নিজের ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। লিখেছেন, “ফুটবল পুরোটাই আবেগের খেলা। বিশেষত যেখানে আপনি দেশের জার্সি গায়ে লড়াই করতে নামেন। গত কাল আমার কাজের জন্যে আপনি আমাকে ভালবাসতে পারেন বা ঘৃণা করতে পারেন। কিন্তু আমি একজন যোদ্ধা। কোনও ব্যাখ্যাহীন সিদ্ধান্ত দেওয়া হলে মাঠে দলের ছেলেদের রক্ষা করার জন্য আবার একই কাজ করব আমি।”