—ফাইল চিত্র
এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায়!
এক দিকে কলকাতা ডার্বি, অন্য দিকে ভারত-পাকিস্তান। দু’টি ম্যাচই একই দিনে এবং পিঠোপিঠি। ফলে ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে রবিবার আক্ষরিক অর্থেই ‘সুপার সানডে’। বছরে এ রকম দিন খুব একটা আসে না। তাই রবিবারের সন্ধে চেটেপুটে উপভোগ করতে বসে রয়েছেন তাঁরা।
সূচি বলছে, রবিবার কলকাতা ডার্বি শুরু হবে সন্ধে ৬টায়। অন্য দিকে, এশিয়া কাপে ভারত বনাম পাকিস্তানের ম্যাচ শুরু হবে ৭.৩০-এ। শেষ হতে হতে রাত ১১টা বাজবে। ফলে ৬টা থেকে রাত ১১টা, রবিবারের এই পাঁচ ঘণ্টা ক্রীড়াপ্রেমীদের কাছে জমজমাট হতে চলেছে। ফুটবল শেষ হওয়ার পরেই শুরু হয়ে যাবে ক্রিকেট। মাঝে কোনও বিরতির সুযোগ নেই। ফলে টানা খেলা দেখার সুবর্ণ সুযোগ রয়েছে। অনেকেই পরিবার বা বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে টানা ম্যাচ দেখার পরিকল্পনা করে নিয়েছেন।
কলকাতা ডার্বি নিয়ে ইতিমধ্যেই শহরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে। আড়াই বছর পর শহরে মুখোমুখি হতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগান। উত্তেজনা স্বাভাবিক ভাবেই তুঙ্গে। টিকিটের হাহাকার সর্বত্র। অনলাইনে দু’দিন টিকিট ছাড়া হয়েছিল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে তা নিঃশেষ হয়ে গিয়েছে। অফলাইনে যে সীমিত সংখ্যক টিকিট দেওয়া হয়েছে, তা মোটেই চাহিদার সঙ্গে মানানসই নয়। শুক্রবার ভোরবেলা থেকে মোহনবাগান তাঁবুর সামনে লম্বা লাইন পড়েছিল। অল্প কিছু সংখ্যক টিকিট বিক্রির পর তা বন্ধ হয়ে যায়। সেই নিয়ে পথ অবরোধ, বিক্ষোভ চলে অনেকক্ষণ।
ফলে সহজেই অনুমেয় যে এই ম্যাচ নিয়ে কী পরিমাণ উত্তেজনা হতে চলেছে। যুবভারতীতে খেলা দেখার জন্য ষাট হাজার টিকিট ছাড়া হয়েছে। হাউসফুল হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা। ডুরান্ড কাপের প্রথম সূচি অনুযায়ী এই ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল ১৬ অগস্ট। কিন্তু দল গঠনে দেরি হওয়ায় ইমামি ইস্টবেঙ্গল তাদের অপারগতার কথা জানায়। ডুরান্ড আয়োজকরা তা মেনে নিয়ে ম্যাচ পিছিয়ে দেন। ফলে দুই মহারণ একই দিনে হচ্ছে।
ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচ নিয়ে সম্ভবত ফুটবলের থেকেও বেশি আগ্রহ। ন’মাস আগে শেষ বার টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মুখোমুখি হয়েছিল দুই প্রতিবেশী দেশ। সেই ম্যাচে ১০ উইকেটে লজ্জাজনক ভাবে আত্মসমর্পণ করতে হয়েছিল বিরাট কোহলীদের। বিশ্বকাপে পাকিস্তানের কাছে সেটাই প্রথম হার। এ বার নেতৃত্বে রোহিত শর্মা। তিনি কি প্রতিশোধ নিতে পারবেন, নাকি বাবর আজমের দল এ বারও চমকে দেবে? নজর থাকবে সে দিকে।
পাকিস্তানের প্রধান বোলার শাহিন আফ্রিদি প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গিয়েছেন। গত ম্যাচে তিনিই ভারতের টপ অর্ডারকে ধসিয়ে দেন। এ বার ভারতের ব্যাটাররা একটু হলেও নিশ্চিন্তে থাকতে পারেন। তবে হ্যারিস রউফ, মহম্মদ হাসনাইন, নাসিম শাহরা ভারতকে বিপদে ফেলার পরিকল্পনা ইতিমধ্যেই ছকে ফেলেছেন। ভারতও অবশ্য পাবে না যশপ্রীত বুমরা এবং হর্ষল পটেলকে। আমিরশাহির পিচে দু’জনেই দাপট দেখাতে পারতেন। সেই সুযোগ অন্তত এ বার মিলবে না।
তবু ধারে-ভারে ভারতকে একটু হলেও এগিয়ে রাখতে হবে। তার কারণ, ব্যাটিং-বোলিং দুই বিভাগে ভারতের গভীরতা। ওপেনাররা ব্যর্থ হলে বিরাট কোহলী, সূর্যকুমার যাদব বা ঋষভ পন্থ বিপর্যয় সামলাতে পারেন। বোলিংয়ে আনকোরা অর্শদীপ সিংহ ভারতের তুরুপের তাস হতে পারেন। রবীন্দ্র জাডেজা, যুজবেন্দ্র চহালের স্পিন চমকে দিতে পারে। বরাবরের মতো এ বারও লড়াই পাকিস্তানের বোলিংয়ের সঙ্গে ভারতের ব্যাটিংয়ের।
যাঁরা মাঠে ডার্বি দেখতে যাবেন, তাঁরা অনেকেই হয়তো ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ দেখতে পাবেন না। তবে আরও সুযোগ থাকছে। দুই দল সুপার ফোরে উঠলে ফের দেখা হবে। এমনকি, মাঝে অঘটন না ঘটলে ফাইনালেও দেখা হতে পারে। ফলে প্রথম রবিবার সুযোগ ফস্কালেও, বাকি দুই রবিবার ক্রিকেটের স্বাদ চেটেপুটে নেওয়ার সুযোগ থাকছে।