ফাইল চিত্র।
কেউ ভালবাসতেন বিরিয়ানি। আবার কারও কারও প্রিয় ছিল বাটার চিকেন, পরোটা। সবই এখন অতীত। কারণ গত কয়েক বছরে ভারতীয় ফুটবল দলের অন্দরমহলের ছবিটাই সম্পূর্ণ বদলে গিয়েছে। সুনীল ছেত্রীদের খাদ্যতালিকায় এখন মশলাযুক্ত খাবারের কোনও স্থান নেই। পরিবর্তে সূর্যমুখীর ফুল ও কুমড়োর বীজ, কিনোয়া, স্মোক্ড ও গ্রিলড খাবার। পাঁচ বছর আগে অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপ খেলতে এসে কলকাতায় যে ধরনের খাবার খেতেন ফিল ফোডেনরা, কোচ ইগর স্তিমাচের নির্দেশে সেটাই এখন ভারতীয় দলের ফুটবলারদের খাদ্য।
এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বে যাত্রা শুরু করার আগে রাজারহাটের যে পাঁচতারা হোটেলে এই মুহূর্তে রয়েছে ভারতীয় দল, সেখানেই ছিলেন অনূর্ধ্ব-১৭ ইংল্যান্ডের ফুটবলাররা। ফোডেনদের খাবার তৈরির দায়িত্বে ছিলেন ডিরেক্টর অব ফুড অ্যান্ড বেভারেজ়, নীলাভ সহায়। রোজ রাতে ইগরদের সঙ্গে আলোচনা করেই পরের দিনের খাদ্যতালিকা প্রস্তুত করছেন তিনি। আনন্দবাজারকে নীলাভ বললেন, ‘‘পেশাদারিত্ব কাকে বলে ইংল্যান্ডের অনূর্ধ্ব-১৭ দলকে দেখে বুঝেছিলাম। দীর্ঘ দিন ওরা আমাদের হোটেলে ছিলেন। প্রচণ্ড কড়াকড়ি ছিল খাবারের ব্যাপারে। এই ভারতীয় দলও তাই। টেবলে আইসক্রিম বা মিষ্টি থাকলেও কেউ ছুঁয়ে দেখেন না। ফোডেনরাও যে ধরনের খাবার খেয়েছিলেন, সেটাই এখন দেওয়া হচ্ছে ভারতীয় দলের ফুটবলারদের।’’
প্রাতরাশ থেকে নৈশভোজ— প্রীতম কোটালরা কী খাচ্ছেন? নীলাভ বললেন, ‘‘প্রাতরাশে দুধ, ডিম, ব্রেড, ফল, বাদাম, নানা ধরনের বীজ ও সিরিয়াল থাকে। মধ্যাহ্ন ও নৈশভোজে ডাল, গ্রিলড বা স্মোক্ড মাংস, ফল। সকলেই কিনোয়া খুব খাচ্ছেন। কারণ, এতে প্রোটিনের পরিমাণ খুব বেশি থাকে। যা শারীরিক শক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। দ্রুত ক্লান্তি দূর করে। মাখন, ঘি সম্পূর্ণ বন্ধ।’’ খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, সুনীল-সহ বেঙ্গালুরু এফসির ফুটবলাররা অবশ্য প্রাতরাশের ব্যবস্থা নিজেরাই করে নিয়েছেন। তাঁদের সঙ্গেই থাকে বিশেষ ধরনের সিরিয়াল।
প্রাতরাশ, মধ্যাহ্নভোজ ও নৈশভোজের জন্য ফুটবলারদের সময় বরাদ্দ করে দিয়েছেন ইগর। নির্দিষ্ট সময়ের পরে এক মিনিটও থাকা যাবে না ডাইনিংরুমে। তবে আজ, শুক্রবার অবশ্য হোটেল পরিবর্তন করতে হচ্ছে ভারতীয় দলকে। কারণ, সুনীলরা এখন যেখানে রয়েছেন, সেখানেই থাকবেন এএফসি এশিয়ান কাপের যোগ্যতা অর্জন পর্বের বাকি তিনটি দল আফগানিস্তান, কাম্বোডিয়া ও হংকং। ভারতীয় দলের তরফে ইতিমধ্যেই নতুন হোটেলের শেফের সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনা করে খাদ্যতালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। পাশাপাশি জোরকদমে চলছে প্রস্তুতিও। গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিংহ সাঁধু বলেছেন, ‘‘যে কোনও মূল্যে আমাদের মূল পর্বে যোগ্যতা অর্জন করতেই হবে। লক্ষ্য পৌঁছনোর জন্য নির্মম হতেও আপত্তি নেই।’’