মোহনবাগানের কোচ আন্তোনিয়ো হাবাস। ছবি: এক্স।
রাত পোহালেই কলকাতা ডার্বি। মোহনবাগানের কোচ হিসাবে প্রথম ম্যাচেই কড়া পরীক্ষার মুখে আন্তোনিয়ো লোপেস হাবাস। কিন্তু ম্যাচের আগে দিন ফুরফুরে মেজাজে দেখা গেল তাঁকে। মুখে হাসি। কোনও রকম চাপ নিতে নারাজ তিনি। ফুটবলারদেরও বাড়তি চাপ দিচ্ছেন না। সুপার কাপ জেতা ইস্টবেঙ্গলকে ভয় পাওয়া তো দূর, হাবাস সাফ হুঙ্কার দিলেন, ইস্টবেঙ্গলের কাছে কখনও তিনি হারেননি।
২০২০-২১ মরসুম তৎকালীন এটিকে মোহনবাগান দলের কোচ ছিলেন হাবাস। সে বার ইস্টবেঙ্গলকে দু’টি সাক্ষাতেই হারিয়েছিল মোহনবাগান। প্রথম বার ৩-১ গোলে এবং পরের বার ২-০ গোলে। সেই পরিসংখ্যান উল্লেখ করেই শুক্রবার সাংবাদিকদের হাবাস বলেছেন, “আমি কখনও কোনও ম্যাচে হারার কথা ভেবে খেলতে নামি না। মনে রাখবেন, আমি এখনও ইস্টবেঙ্গলের কাছে হারিনি। ট্রফির জন্য লড়াই করতে নামলে সব ম্যাচে জয়ের কথা ভেবেই নামতে হয়।”
শুক্রবার সকালে অনুশীলন করে মোহনবাগান। সেখানে বল পায়ে নেমে পড়েন জনি কাউকো। তাঁকে দেখে বেশ ফিটই মনে হয়েছে। চোট সারিয়ে ফিরেছেন সেটা বোঝা যায়নি। তবে ডার্বিতে কাউকোর খেলা সম্ভাবনা নেই। দলের মধ্যে একতা বাড়াতে বিশেষ ভাবে অনুশীলন করালেন হাবাস। সিচুয়েশন অনুশীলনের উপর জোর দিলেন। সেট-পিস নিয়েও আলাদা ভাবনা রয়েছে।
জাতীয় দলে থাকা সাত ফুটবলার ফিরেছেন। সাহাল সামাদ, অনিরুদ্ধ থাপা প্রথম একাদশে থাকতে পারেন। সঙ্গে মনবীর সিংহও রয়েছেন। আশিস রাই খেলতে পারবেন না। তবে আনোয়ার আলি এবং সাহালকে নিয়ে সমস্যা নেই। অতীতে মোহনবাগানকে কোচিং করানো হাবাস মেনে নিচ্ছেন, আগের বারের থেকে ভারতীয় ফুটবলারদের অনেক উন্নতি হয়েছে। বলেছেন, “গত বারের থেকে এ বার ভারতীয় ফুটবলারের মান ভাল হয়েছে। বিশেষত মোহনবাগানের কথা বলব। অনেকেই জাতীয় দলের হয়ে ভাল খেলেছে। আমাদের দলটা খুবই ভাল। অনেক প্রতিভাবান ফুটবলার রয়েছে।”
ম্যাচের আগে নিজেকে চাপে ফেলতে চাইছেন না হাবাস। বলেছেন, “নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। কাল আমাদের সামনে নতুন চ্যালেঞ্জ। আমাদের ফোকাসে শুধু কালকের ম্যাচে। ডার্বির আগে নিজের উপরে চাপ কমানোর চেষ্টা করছি। সব সময়েই আমার লক্ষ্য থাকে দলকে সেরা ফর্মে রাখা। এত বড় ম্যাচের আমরা নিজেদের সব রকম ভাবে তৈরি রাখছি। জানি যে আমরা বিপক্ষের থেকে পয়েন্ট তালিকায় এগিয়ে। কিন্তু অন্য দল নিয়ে নয়, আমি ভালবাসি নিজের দলকে নিয়ে ভাবতে।”
মরসুমের মাঝে এই প্রথম বার আইএসএলে কোনও দলের দায়িত্ব নিলেন। কিন্তু খুব একটা অসুবিধা হচ্ছে না হাবাসের। এই প্রসঙ্গে আগের কোচ জুয়ান ফেরান্দোরও প্রশংসা করেছেন হাবাস। বলেছেন, “মরসুমের মাঝে দায়িত্ব নেওয়া একটু চাপের। তবে ধন্যবাদ দেব আগের কোচ জুয়ান ফেরান্দোকে। দলটাকে তৈরি করে দিয়েছে। আমি সেটাকেই আরও সামনে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করছি। এ বার আমার মস্তিষ্ক, মানসিকতা এবং দর্শন কাজে লাগিয়ে সেটাকে আরও ভাল করার চেষ্টা করব, যাতে দলটা আগামী দিনে আরও সাফল্য পায়।”
শনিবার কলকাতা ডার্বিতে জড়িয়ে থাকছে ‘এল ক্লাসিকো’ও। ইস্টবেঙ্গলের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত বার্সেলোনার হলেও হাবাস মাদ্রিদের। তবে মোহনবাগানের কোচ এই বিতর্কে ঢুকতে চাইলেন না। বলেছেন, “উল্টো দিকের কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত বার্সেলোনার আর আমি মাদ্রিদের এটা ভাবছি না। কাল লড়াইটা ইস্টবেঙ্গল এবং মোহনবাগানের। বার্সেলোনা-রিয়াল মাদ্রিদের নয়।”