সাবধানি: সামনে মরক্কো। স্পেনের অনুশীলনে নজরদারি এনরিকের। ছবি রয়টার্স।
বিশ্বকাপের আগে থেকেই বিশেষ একটা ‘হোমওয়ার্ক’ তাঁর দলের ফুটবলারদের করতে দিয়েছিলেন লুইস এনরিকে। যে কারণে স্প্যানিশ কোচ আত্মবিশ্বাসী, মরক্কোর বিরুদ্ধে ম্যাচ টাইব্রেকে গড়ালেও তাঁদের জিততে সমস্যা হবে না।
সেই ‘হোমওয়ার্ক’ কী ছিল? এনরিকেই জানিয়েছেন, তিনি প্রত্যেক ফুটবলারকে এক হাজার করে পেনাল্টি মারতে বলে দিয়েছিলেন!
নিজেদের গ্রুপ থেকে ক্রোয়েশিয়া আর বেলজিয়ামকে হারিয়ে শীর্ষে শেষ করে মরক্কো। স্পেন আবার জাপানের কাছে হেরে গ্রুপে দ্বিতীয় হয়ে মরক্কোর সামনে পড়েছে। যে লড়াই আজ, মঙ্গলবার। ২০১৭ ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপে দু’বার টাইব্রেকে লড়াই করতে হয়েছিল স্পেনকে। কোয়ার্টার ফাইনালে সুইৎজ়ারল্যান্ডকে হারিয়ে সেমিফাইনালে ইটালির কাছে হার মানতে হয় স্পেনকে। এ বার যাতে সে রকম কোনও পরিস্থিতি তৈরি না হয়, তার জন্য মরিয়া এনরিকে। সোমবার সাংবাদিক বৈঠকে তিনি বলেছেন, ‘‘বছর খানেক আগে, জাতীয় শিবিরে গিয়ে আমি ফুটবলারদের একটা কথাই বলতাম। বিশ্বকাপের আগে তোমাদের একটা হোমওয়ার্ক করতে হবে। ক্লাবের হয়ে তোমাদের অন্তত এক হাজার পেনাল্টি মারতে হবে। জাতীয় দলের অনুশীলনের সময় এই ভাবে পেনাল্টি নেওয়া অভ্যাস করানো সম্ভব হয় নয়।’’
টাইব্রেকার মানেই যে ব্যাপারটা ভাগ্যের হাতে চলে গেল, এমনটা মানতে রাজি নন স্পেনের কোচ। এনরিকে বলেছেন, ‘‘আমার মনে হয় না এটা একটা লটারি। তুমি যদি ভাল মতো অনুশীলন করো, তা হলে তোমার পেনাল্টি নেওয়ার দক্ষতা বেড়ে যাবে। হ্যাঁ, মানছি চাপ নেওয়াটা ট্রেনিংয়ে অভ্যাস করা যায় না। কিন্তু ঠিক মতো অনুশীলন করতে পারলে আসল সময় ওই চাপটা নেওয়া সম্ভব হয়।’’ টাইব্রেকের ক্ষেত্রে গোলকিপারদেরও যে বড় ভূমিকা থাকে, সে কথাও বলেছেন এনরিকে। তাঁর মন্তব্য, ‘‘ভাগ্যের উপরে ব্যাপারটা নির্ভর করে থাকে না। টাইব্রেকে প্রধান ভূমিকা নেয় গোলকিপার। আমার দলের তিন গোলকিপারই পেনাল্টি বাঁচানোয় দক্ষ।’’
গ্রুপ পর্বে নিজের দলের খেলাকে ‘বি প্লাস’ দিচ্ছেন এনরিকে। তিনি আলাদা করে জাপান ম্যাচের ১৫ মিনিটের কথা বলেছেন, যেখানে প্রতিপক্ষ স্পেনকে ‘‘পিষে দিয়েছিল।’’ এনরিকের মন্তব্য, ‘‘আমাদের ধারণাটা পরিষ্কার। সব প্রতিপক্ষকে ৯০ মিনিট শাসন করার প্রয়োজন নেই। মনে রাখতে হবে, বিশ্বকাপে সেরা দল, সেরা কোচেদের বিরুদ্ধে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়।’’
শেষ ষোলোর প্রতিদ্বন্দ্বী মরক্কোকে নিয়ে এনরিকে বলেছেন, ‘‘মানসিক ভাবে মরক্কো এখন দারুণ জায়গায় আছে। একটা খুব কঠিন গ্রুপ থেকে ওরা সেরা দল হয়ে এসেছে।’’ তবে মরক্কোর বিরুদ্ধে ভাল করার ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী কোচ। এনরিকের কথায়, ‘‘ট্রেনিংয়ে যা দেখেছি, তাতে আমার দল নিয়ে খুশি। আমি নিশ্চিত, পরের রাউন্ডে চলে যেতে পারব।’’
শেষ চার বিশ্বকাপে একবারই শেষ ষোলোর গণ্ডি পেরোতে পেরেছে স্পেন। সেই ২০১০ সালে যখন তারা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হতে পেরেছিল। এনরিকে বলেছেন, ‘‘আমি ফল নিয়ে ভাবতে চাই না। কোচ হিসেবে যে ব্যাপারটা আমি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব, সেটা নিয়েই ভাবতে চাই। দলের ফুটবলারদেরও সেটা বলে দিয়েছি। ফলের কথা মাথায় রেখো না। ফল ঠিক পাওয়া যাবে।’’ এনরিকে আরও জানিয়েছেন, তাঁদের দর্শন হল সমর্থকদের আনন্দ দেওয়া। ‘‘আমরা একটা মতাদর্শেই বিশ্বাস করি। সেটা হল, আমাদের খেলা দেখে সমর্থকেরা যেন আনন্দ পায়। মাঠে নেমে ম্যাচ জিতে চলে আসতে চাই না। সঙ্গে সমর্থকদের আনন্দ দিতেও চাই,’’ নক আউট ম্যাচে নামার আগের দিন বলে যান স্পেনের কোচ।
সতর্ক সাউথগেট: কাতার বিশ্বকাপে যথেষ্ট দাপট দেখিয়ে খেলে চলেছে ইংল্যান্ড। শেষ ষোলোর লড়াইয়ে সেনেগালকে ৩-০ উড়িয়ে দিয়ে কোয়ার্টার ফাইনালে চলে গিয়েছে তারা। সেখানে হ্যারি কেনদের দ্বৈরথ ফ্রান্সের সঙ্গে। যে লড়াইকে সবচেয়ে বড় পরীক্ষা বলছেন ইংল্যান্ডের কোচ গ্যারেথ সাউথগেট। সেনেগাল ম্যাচের পরে সাংবাদিক বৈঠকে এসে সাউথগেট বলেছেন, ‘‘ফ্রান্সের সঙ্গে ম্যাচটা সম্ভবত আমাদের সবচেয়ে বড় পরীক্ষা হতে চলেছে। ওরা বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। ওদের দলে বিস্ময়কর সব প্রতিভা আছে। ফ্রান্সের বিরুদ্ধে লড়াইটা সব সময় কঠিন হয়। ওদের বিরুদ্ধে গোল করাও খুব কঠিন।’’ এই বিশ্বকাপে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ফর্মে আছে ফ্রান্স। কিলিয়ান এমবাপের পায়ে ভর করে এগিয়ে চলেছে দিদিয়ে দেশঁর দল।