সুরজিৎ-স্মরণে নীরবতা পালন ইস্টবেঙ্গলে নিজস্ব চিত্র
বৃহস্পতিবার দুপুরেই প্রয়াত হয়েছেন প্রাক্তন ফুটবলার সুরজিৎ সেনগুপ্ত। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭০ বছর। রেখে গেলেন স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে স্নিগ্ধদেবকে। সত্তরের দশকের প্রখ্যাত এই ফুটবলারের প্রয়াণে শোকাহত ক্রীড়ামহল।
খেলোয়াড় জীবনের সোনালি সময় ইস্টবেঙ্গলেই কাটিয়েছেন সুরজিৎ। ক্লাব তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছে। সাতের দশকের শুরুতে তাঁর কলকাতা ময়দানে আবির্ভাব। ১৯৭৪ থেকে ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের জার্সি গায়ে খেলেছেন ১৯৮০ সাল পর্যন্ত। সুরজিৎ ছিলেন ইস্টবেঙ্গল দলের অপরিহার্য ফুটবলার। তাঁর পায়ের জাদুতে মোহিত ছিলেন লাল-হলুদ সমর্থকরা। ১৯৭৮-এ তাঁর অধিনায়কত্বে ইস্টবেঙ্গল যুগ্ম ভাবে ফেডারেশন কাপ জয় করে। এ ছাড়া সে বার ইস্টবেঙ্গল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ডুরান্ড কাপ এবং বরদলুই ট্রফিতে। ১৯৭৫-এর আইএফএ শিল্ড ফাইনালে ইস্টবেঙ্গল ৫-০ ব্যবধানে হারিয়েছিল মোহনবাগানকে। সেই ম্যাচে সুরজিৎ করেছিলেন একটি গোল।
সুরজিতের প্রতিকৃতিতে মাল্যদান ইস্টবেঙ্গলে। নিজস্ব চিত্র
বরদলুই ট্রফিতে বিদেশি দল পোর্ট অথরিটির বিরুদ্ধে সুরজিৎ সেনগুপ্তর খেলা আজও সবার মুখে মুখে ঘোরে। সেই প্রতিযোগিতায় সুরজিৎ ইস্টবেঙ্গলকে চ্যাম্পিয়ন করতে নিজে গোল করার পাশাপাশি সতীর্থ ফুটবলারদের দিয়েও গোল করিয়েছিলেন। শুধু লাল-হলুদ জার্সি গায়ে নয়, সন্তোষ ট্রফিতে বাংলাকে বেশ কয়েক বার চ্যাম্পিয়ন করতে তাঁর বড় ভূমিকা ছিল। এমনকী, ভারতীয় দলের জার্সি গায়ে এশিয়ান গেমসে প্রতিনিধিত্ব করার কৃতিত্ব রয়েছে তাঁর।
শুধু ফুটবলার হিসেবে নন, একজন তবলা বাদক হিসেবেও তাঁর খ্যাতি ছিল। বিখ্যাত রবীন্দ্রসঙ্গীত শিল্পী সুচিত্রা মিত্রের সঙ্গে বেশ কয়েকবার তবলা সঙ্গত করেছেন। যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও পদ্মশ্রী কিংবা অর্জুন পুরস্কার পাননি সুরজিৎ। সে ভাবে স্বীকৃতি না পেলেও, বাংলা তথা ভারতীয় ফুটবলে তাঁর অবদান কখনও ভোলার নয়। তবে ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁকে ২০১৮ সালে জীবনকৃতি সম্মানে সম্মানিত করেছিল।
সুরজিতের প্রয়াণে শোকস্তব্ধ ইস্টবেঙ্গল তাঁবু। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে তাঁর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান এবং শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করা হয়। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের পতাকা বৃহস্পতিবার অর্ধনমিত রাখা হয়। সুরজিতের মৃত্যুর খবর আসার পরেই অনুশীলনরত ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের হকি খেলোয়াড়রা নীরবতা পালন করেন। একইসঙ্গে ইস্টবেঙ্গল ফুটবল স্কুলের শিক্ষার্থী এবং কোচেরাও কিংবদন্তির প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন এবং নীরবতা পালন করেন।