ইস্টবেঙ্গলের সমর্থকেরা। — ফাইল চিত্র।
মরসুমের প্রথম ডার্বি। স্বাভাবিক ভাবেই উত্তেজনা থাকবে। কিন্তু ইস্টবেঙ্গলের কাছে পরিস্থিতি আলাদা। গত মরসুমের মতোই এই মরসুমেও তাদের হাতে নতুন একটি দল। আগের দলের কেউ নেই। গত তিন মরসুম ধরে যে চিত্র বার বার দেখা যাচ্ছে, এ বারও তার ব্যতিক্রম নেই। ফুটবলারেরা দেরি করে যোগ দিয়েছেন। স্বাভাবিক ভাবেই এ ধরনের ম্যাচের জন্যে যে রকম প্রস্তুতি দরকার তা নেই ইস্টবেঙ্গলের। তবে কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাতের আশা, দলের মধ্যে ফিটনেস সমস্যা থাকলেও তাঁরা লড়াই করবেন শেষ পর্যন্ত। চেষ্টা করবেন সমর্থকদের গর্বিত করার, যাঁরা গত আটটি ডার্বিতে একটানা হারের পর হতাশ।
শুক্রবার সাংবাদিক বৈঠকে কুয়াদ্রাত বলেছেন, “যে কোনও মরসুম শুরু হওয়ার আগে ফিটনেস সমস্যা থাকবেই। দলের অনেকেই দেরি করে এসেছে। আগের ম্যাচে আমরা অনেক ভুল করেছি। অনেক সময় ক্লান্তির কারণেও ভুল হয়। তবু গত সপ্তাহে অনেক ভাল প্রস্তুতি নিয়েছি। এক মাস ধরে অনুশীলন করছে এ রকম ছ-সাতজন রয়েছে আমাদের দলে। এটুকু জানি, আমাদের ৯০ মিনিট মাঠে নেমে লড়তে হবে। সেটার জন্যে আমরা তৈরি।”
বেঙ্গালুরু এফসি-র কোচ থাকার সময় ডার্বির কথা অনেক শুনেছেন। কখনও কোচ হিসাবে ডাগআউটে থাকার সুযোগ হয়নি ঠিকই। প্রথম বার সেই সুযোগ পেয়ে মুহূর্তটা ভাল করে উপভোগ করতে চান কুয়াদ্রাত। একই সঙ্গে চান জিতে বা অপরাজিত থেকে ফিরতে। বললেন, “আমরা সবাই মোটামুটি ডার্বির ব্যাপারে জানি। এই ম্যাচের প্রায় ১০০ বছরের ইতিহাস রয়েছে। গোটা শহরের কাছে এটা একটা উৎসবের মতো। দুর্ভাগ্যবশত আমার হাতে পুরো দল নেই। গত ২ সপ্তাহ ধরে আমরা কঠোর অনুশীলন করছি। তারও দু’সপ্তাহ আগে থেকে অনেকে অনুশীলন করছে। মন্দারের (রাও দেশাই) মতো ফুটবলারেরা অনেক আগে এসেছে। আমরা চাইব যতটা সম্ভব লড়াই দেওয়ার এবং সমর্থকদের গর্বিত করার।”
উল্টো দিকে থাকা মোহনবাগান গত মরসুমের অনেককেই ধরে রেখেছে। এমনকি কয়েক জন আছেন যাঁরা অনেক দিন ধরে একসঙ্গে খেলে চলেছেন। মোহনবাগান এ বার এএফসি কাপের জন্যেও মরিয়া হয়ে লড়ছে। প্রতিপক্ষের শক্তির কথা মেনে নিচ্ছেন কুয়াদ্রাতও। তবে নিজের দল নিয়েও আশাবাদী। বলেছেন, “জানি মোহনবাগান কতটা শক্তিশালী। ওরা এএফসি কাপের জন্যেও প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাই কতটা শক্তি রয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না। গত বার আইএসএল জিতেছে ওরা। কিন্তু আমাদের দলেও অনেক ভাল ফুটবলার আনা হয়েছে। নতুন একটা দল। তবে মন্দারের মতো অভিজ্ঞ ফুটবলার রয়েছে দলে। তাই ওদের হারানোর মতো বিকল্প আমাদের হাতে রয়েছে। আমাদের ক্লাবের মধ্যে বরাবরই একটা হার-না-মানা মানসিকতা রয়েছে। প্রতিটি ম্যাচেই মাঠে নেমে সেটা দেখাতে হবে।”
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবে এ বারই যোগ দিয়েছেন মন্দার রাও দেশাই। তিনিও ডার্বির কথা শুনেছেন প্রচুর। এ রকম একটি ম্যাচে খেলতে নামবেন ভেবে উত্তেজিত। ম্যাচের আগে লাল-হলুদের ফুটবলার বললেন, “ডার্বি কত বড় ম্যাচ সেটা জানি। কোচও আমাদের সেটা ভাল ভাবে বুঝিয়ে দিয়েছেন। কঠিন ম্যাচের কথা ভেবেই প্রস্তুত হচ্ছি। সূচি প্রকাশের সময়ই জানতাম দ্বিতীয় ম্যাচে ডার্বি খেলতে হবে। অনেকেই ডার্বির চাপ জানে। যারা নতুন দলে এসেছে তারাও জানে ডার্বির গুরুত্ব কতটা। তাই ভয় পাচ্ছি না।”