উল্লাস: অবশেষে ডার্বিতে গোল পেলেন ক্লেটন। ছবি: এক্স।
ইস্টবেঙ্গল সমর্থকদের আরও একটা স্বপ্নপূরণের রাত। গত বছরের অগস্টে যুবভারতীতে ডুরান্ড কাপের গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে সেই জয় ছিল শাপমুক্তির রাত। টানা আটটি ডার্বিতে হারের যন্ত্রণা ভোলার রাত। যদিও ফাইনালে সেই মোহবাগানের কাছে হেরেই ডুরান্ড কাপে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন চুরমার হয়ে গিয়েছিল লাল-হলুদ জনতার। এই কারণেই কি শুক্রবার ভুবনেশ্বরের কলিঙ্গ স্টেডিয়ামে মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ৩-১ গোলে দুরন্ত জয়ের পরে সমর্থকরা উল্লাসে মেতে উঠলেও বাড়তি উচ্ছ্বাস দেখাতে রাজি নন ক্লেটন সিলভা, সৌভিক চক্রবর্তীরা?
মোহনবাগানের বিরুদ্ধে ১৯ মিনিটে পিছিয়ে পড়া ইস্টবেঙ্গলকে ম্যাচে ফেরান ক্লেটনই। ২৪ মিনিটে পেনাল্টি বক্সের বাইরে থেকে গোলার মতো শটে ১-১ করেন তিনি। নিজের দ্বিতীয় গোল করেন ৮০ মিনিটে। ইস্টবেঙ্গলকে বহু ম্যাচে জেতানো ক্লেটনের আক্ষেপও দূর হল শুক্রবার রাতে। অবশেষে ডার্বিতে গোল পেলেন যে। ম্যাচের পরে ক্লেটন বললেন, ‘‘ডার্বি জেতায় অবশ্যই খুশি। কিন্তু আমার কাছে বেশি গুরুত্বপূর্ণ দল তিন পয়েন্ট অর্জন করা। এ বার সেমিফাইনাল। আমাদের প্রত্যেকের কাছেই খুবই গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ।’’ এর পরেই যোগ করলেন, ‘‘সব ম্যাচেই আমি মাঠে নামি গোল করার লক্ষ্য নিয়ে। ভাল লাগছে ডার্বিতে গোল করে। এর চেয়ে বেশি কিছু নয়।’’
ম্যাচের সেরা ক্লেটন আরও বলেছেন, ‘‘ইস্টবেঙ্গলের মতো ক্লাবে খেলার সুযোগ পেয়ে আমি গর্বিত। সমর্থকরা যে ভাবে আমাকে ভালবাসা উজাড় করে দিয়েছেন, ব্যাখ্যা করার মতো ভাষা খুঁজে পাচ্ছি না। আগের বারও আমি ইস্টবেঙ্গলে ছিলাম। কিন্তু এই মরসুমটা বিশেষ ধরনের। কারণ, পরিবারের সঙ্গে থাকছি।’’ সতীর্থদেরও উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেছেন ব্রাজিলীয় স্ট্রাইকার। বলেছেন, ‘‘ওরাই আমার কাজ অনেক সহজ করে দিয়েছে। পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানাচ্ছি কোচ কার্লেস কুয়াদ্রাত-সহ দলের সকলকে।’’ গোল করার পরেই গ্যালারির সামনে ছুটে গিয়ে দু’হাত কানের কাছে নিয়ে গিয়ে উল্লাস করেছেন। বিশেষ এই উৎসবের কারণ কী? হাসতে হাসতে ক্লেটনের জবাব, ‘‘বছর দশেক আগে এ ভাবে গোল করে উৎসব করেছিলাম। এত দিন পরে আবার করলাম। সমর্থকদের আনন্দ দিতে পেরে আমিও খুব খুশি।’’
ডার্বি-জয়ের উৎসবের রাতেও ক্লেটন ভুলতে পারেনি গত মরসুমে ব্যর্থতার যন্ত্রণা। বলছিলেন, ‘‘জীবনে উত্থান-পতন থাকবেই। দুঃসময় থেকে শিক্ষা নিয়ে ঘুরে দাঁড়ানোই আসল। আমাদের এখনও অনেক দূর যেতে হবে। তাই আরও বেশি পরিশ্রম করতে হবে। তা হলেই সাফল্য আসবে।’’