সুনীলকে ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভাইচুং। —ফাইল চিত্র
ডুরান্ড কাপের পুরস্কার বিতরণের অনুষ্ঠানে সুনীল ছেত্রীকে পশ্চিমবঙ্গের অস্থায়ী রাজ্যপাল লা গণেশনের ঠেলে সরিয়ে দেওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ ভাইচুং ভুটিয়া। তাঁর মতে, সুনীল দেশের ফুটবলের মুখ। তাঁকে অপমান করা হয়েছে। রাজনীতিবিদদের খেলার মাঠে ঢুকতে দেওয়া উচিত নয় বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যমে ভাইচুং বলেন, ‘‘এই ঘটনা গোটা দেশের ক্রীড়াজগতকে অপমানিত করেছে। ওই মুহূর্তটা সুনীল ও তার দলের ছিল। কিন্তু ওদেরই বাদ দিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হল। কিছু রাজনীতিবিদ ছবি তোলার জন্য ফুটবলারদের সরিয়ে দিচ্ছে, এটা মেনে নেওয়া যায় না। সুনীলকে অপমান করা হয়েছে। রাজনীতিবিদদের খেলার মাঠে ঢুকতেই দেওয়া উচিত নয়। ওটা খেলোয়াড়দের জায়গা।’’
আন্তর্জাতিক স্তরে ক্রীড়াবিদদের অবহেলা করার ঘটনা কমলেও রাজ্য ও জেলা স্তরে এখনও সেটা ভাল ভাবে আছে বলে মনে করেন ভাইচুং। তিনি বলেন, ‘‘আন্তর্জাতিক স্তরে এই ঘটনা কমেছে। খেলোয়াড়দের সম্মান বেড়েছে। কিন্তু রাজ্য ও জেলা স্তরে ছবিটা এখনও একই রকম আছে। আমরা দেখেছি উত্তরপ্রদেশে মহিলাদের অনূর্ধ্ব-১৭ কবাডি দলকে শৌচাগারের মেঝেতে খাবার দেওয়া হয়েছে। তার পর সুনীলের সঙ্গে এই ঘটনা ঘটেছে। এগুলো মেনে নেওয়া যায় না। এর বদল দরকার।’’
ডুরান্ডের ফাইনালের পরে ঠিক কী হয়েছিল?
নেটমাধ্যমে প্রকাশিত একটি ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ডুরান্ড জেতার পরে ট্রফি নিতে উঠেছেন সুনীল। রাজ্যের ক্রীড়ামন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস ও অস্থায়ী রাজ্যপাল গণেশনের হাত থেকে ট্রফি নিচ্ছেন তিনি। ক্রীড়ামন্ত্রীর পাশে দাঁড়িয়েছিলেন রাজ্যপাল। কিন্তু সুনীল তাঁর সামনে থাকায় ক্যামেরায় পুরো দেখা যাচ্ছিল না তাঁকে। তখনই দেখা যায়, বাঁ হাত দিয়ে সুনীলকে ঠেলে সরিয়ে দেন তিনি। সুনীলও কিছুটা পিছনের দিকে সরে যান। যিনি ট্রফি জিতেছেন, সেই সুনীলই কোনও রকমে ট্রফি ছুঁতে পারেন। তবে সেই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন।
এই ভিডিয়োর সমালোচনা করেছেন অভিনেতা সাহেব ভট্টাচার্য। প্রসঙ্গত, সাহেব হলেন সুনীলের শ্যালক এবং প্রাক্তন ফুটবলার সুব্রত ভট্টাচার্যের ছেলে। তাঁর বোন সোনমকে ২০১৭-তে বিয়ে করেন সুনীল। সাহেব লিখেছেন, ‘মাফ করবেন। এই ট্রফিটা সুনীলের, ওর দলের। প্রচারের আলো কেড়ে নেওয়ার জন্য ভারতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ককে ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিয়েছেন। আপনার ‘পদে’ থাকা এক জন মানুষের পক্ষে এটা কোনও মতেই শোভনীয় নয়। মনে হচ্ছিল ছবি তোলার কোনও প্রতিযোগিতা চলছে। ক্রীড়ামন্ত্রীকেও দেখছি সবার মাঝে দাঁড়িয়ে ছবি তুলছেন।’ তিনি আরও লেখেন, ‘মনে রাখবেন, আপনাকে এখানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে এবং আপনি সেই অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি। বিয়েবাড়ির কোনও দূরসম্পর্কের অতিথি নয় যে পারিবারিক ছবি তোলার জন্য ধাক্কাধাক্কি করবেন। অন্তত কিছু সম্মান দেখান এবং নিজের জন্যেও সম্মান আদায় করে নিন।’