ভুয়ো পাসপোর্ট-কাণ্ডে বাংলাদেশি যুবক গ্রেফতার। — প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।
ভুয়ো পাসপোর্ট-কাণ্ডে সোমবার রাতেই পলাশ বিশ্বাস নামে এক যুবককে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। অভিযোগ, ভুয়ো নথি দাখিল করে পাসপোর্ট করিয়েছিলেন তিনি। তাঁর পাসপোর্টে চিৎপুরের যে ঠিকানা রয়েছে, তা-ও ভুয়ো বলে জানিয়েছিল পুলিশ। এ বার জানা গেল, পলাশ আদৌ তাঁর নাম নয়! ঠিকানার পাশাপাশি নাম, এমনকি বাবার নামও ভুয়ো বাংলাদেশের ওই যুবকের।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সোমবার রাতে গ্রেফতারের পর ২৮ বছরের ওই যুবককে টানা জেরা করা হয়। তাতেই জানা গিয়েছে, ওই যুবক আদতে বাংলাদেশি। তাঁর আসল নাম চয়ন বড়ুয়া। বাবার নাম সুমন বড়ুয়া। বাড়ি বাংলাদেশের চট্রগ্রামের কক্সবাজারের হলদিয়াপালং এলাকায়। অসম সীমান্ত দিয়ে ২০২১ সালে বেআইনি ভাবে এ দেশে এসেছিলেন চয়ন। তার পর থেকে ভুয়ো পরিচয়ে কলকাতার পাশাপাশি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে কাজ করেছেন ওই যুবক। থেকেছেন দিল্লি এবং চেন্নাইয়েও। সম্প্রতি মধ্যমগ্রামের গঙ্গানগর এলাকায় বাড়ি ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেছিলেন। কিন্তু বেশি দিন পুলিশের চোখে ধুলো দেওয়া গেল না! পাসপোর্টের আবেদন করার সময় ভুয়ো নথি দাখিল করার অভিযোগে সোমবার তাঁকে মধ্যমগ্রাম থানায় ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তাঁর জবাবে একাধিক অসঙ্গতি ছিল। পুলিশের অভিযোগ, ভুয়ো তথ্য দিয়ে তদন্ত ভুলপথে চালিত করার চেষ্টা করছিলেন তিনি। এর পরেই তাঁকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
ভুয়ো পাসপোর্ট নিয়ে গত বছরের ২৭ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারা এবং পাসপোর্ট আইনে মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে লালবাজার। অভিযোগ, ভুয়ো নথিপত্রের মাধ্যমে জাল পাসপোর্ট বানিয়ে দেওয়ার একটি চক্র চলছে। দীর্ঘ দিন ধরেই এই চক্র সক্রিয়। এর পর থেকে কলকাতা এবং শহরতলির একাধিক এলাকায় হানা দিয়ে সন্দেহভাজনদের ধরপাকড় শুরু করেছেন তদন্তকারীরা। শুধু উত্তর ২৪ পরগনা থেকেই একাধিক গ্রেফতারি হয়েছে। পাসপোর্ট জালিয়াতির জাল কত দূর পর্যন্ত বিস্তৃত, কারা এর সঙ্গে যুক্ত, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তদন্ত যত এগোচ্ছে, তত জালিয়াতি চক্রের জট খুলছে। বাড়ছে গ্রেফতারির সংখ্যা। এর আগে কলকাতা পুলিশের এক প্রাক্তন এসআইকেও গ্রেফতার করা হয়েছে।