ভরসা: নিউজ়িল্যান্ড থেকে ফিরেই বাংলার দায়িত্বে ঈশান। ফাইল চিত্র
কটকের পিচে ঘাস দেখে তাঁর উত্তেজনা দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছে। পারলে বুধবারই নেমে পড়েন বাংলার জার্সি গায়ে। কোয়ার্টার ফাইনালে বাংলার হয়ে নামার আর তর সইছে না। গত বার তাঁর ফিটনেসই ছিল মূল সমস্যা। এ বার প্রাক-মরসুম ফিটনেস ট্রেনিং করে আরও তরতাজা। বলের গতিও বেড়েছে আগের চেয়ে। তিনি, ঈশান পোড়েল ওড়িশার বিরুদ্ধে নামার আগে আনন্দবাজারকে একান্ত সাক্ষাৎকার দিলেন।
প্রশ্ন: গত মরসুমে এতটা ভয়ঙ্কর ঈশান পোড়েলকে দেখা যায়নি। কী করে নিজেকে এতটা বদলে ফেললেন?
ঈশান: প্রাক মরসুম ট্রেনিং শুরু হয়েছিল জুলাই থেকে। তাপমাত্রা প্রায় ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তার মধ্যে চলেছে আমাদের ট্রেনিং। শারীরিক শক্তি তো বেড়েইছে। সঙ্গে মানসিক ভাবেও অনেকটা শক্তি অর্জন করেছি। নিজের ক্ষমতার চেয়ে বেশি কিছু করলে মনের জোর বাড়বেই। সেই প্রভাবই হয়তো মাঠে দেখতে পাচ্ছেন।
প্রশ্ন: আপনার এই উন্নতির পিছনে অরুণ লালের অবদান কতটা?
ঈশান: ওঁর অবদান ভাষায় প্রকাশ করা যায় না। লালজি আমাদের দলের য়ুর্গেন ক্লপ অথবা পেপ গুয়ার্দিওলার মতো। সামনা সামনি যেমন প্রশংসা করেন, সমালোচনা করতেও পিছপা হন না। সংবাদমাধ্যমের কাছে কিছু লুকোতে পছন্দ করেন না। ক্লপ ও গুয়ার্দিওলা এমন মানসিকতারই ব্যক্তিত্ব। তাই লালজির কাছে সব সমস্যা নিয়ে কথা বলা যায়। এটাই দলকে আরও শক্তিশালী করেছে।
প্রশ্ন: সদ্য নিউজ়িল্যান্ড থেকে ফিরেছেন। সেই পরিবেশ ও পিচে এক রকম বল করে আসার পরেই নতুন পরীক্ষা। কতটা উত্তেজিত?
ঈশান: প্রচণ্ড। নিউজ়িল্যান্ডে যে ধরনের উইকেটে বল করেছি, এই উইকেটটা তার চেয়ে খুব একটা আলাদা নয়। তফাত একটাই, এখানে তাপমাত্রা একটু বেশি। তার সুবিধাও আছে। কম আর্দ্রতা ও বাড়তি তাপমাত্রা বলকে রিভার্স সুইং করতে সাহায্য করে। আর রিভার্স সুইং পেলে আমার আত্মবিশ্বাসও বেড়ে যায়।
প্রশ্ন: ভারতীয় দলের পেসারেরা স্ট্রেংথ ও কন্ডিশনিংয়ের সঙ্গে ওয়েট ট্রেনিংয়ে জোর দেন। আপনিও কি সে ভাবেই তৈরি হচ্ছেন?
ঈশান: পদ্ধতি একই। দম বাড়ানোর জন্য দৌড়তে হয়। শক্তি বাড়ানোর জন্য ওয়েট ট্রেনিং করি। এখন এমন অবস্থা, জিম না করলে মনে হয় কী যেন একটা করিনি। ওয়েট ট্রেনিং না করলে বলের গতিও ধরে রাখা যাবে না। আর গতি না থাকলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা স্বপ্ন হয়েই থেকে যাবে।
প্রশ্ন: নিউজ়িল্যান্ডের অভিজ্ঞতা কি এখানে সাহায্য করবে?
ঈশান: কিছুটা তো করবেই। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যাটসম্যানদের বিরুদ্ধে সাফল্য পাওয়ার কিছুটা মর্যাদা আছে। তাদের যে লাইন ও লেংথে বল করে সমস্যায় ফেলেছি, এখানেও সেটাই চেষ্টা করব।
প্রশ্ন: তিরিশ বছর হয়ে গিয়েছে রঞ্জি ট্রফি জয়ের। সেই মুহূর্তকে ফেরানোর স্বপ্ন দেখা কি শুরু হয়ে গিয়েছে?
ঈশান: সেই স্বপ্নের পিছনেই তো আমরা মরিয়া হয়ে ছুটছি। ১৯ বছর পরে বাংলা কোচবিহার ট্রফি জিতেছিল। সে দলের অন্যতম সদস্য ছিলাম আমি। ১৯ বছর পরে যে কাজটি করতে পেরেছি, সিনিয়র দলের হয়ে তিরিশ বছর পরে কেন পারব না। তা ছাড়া রঞ্জি জয়ী দলের অন্যতম সদস্য আমাদের কোচ। সেই অনুভূতি কী রকম হতে পারে, তার আন্দাজ লালজি আমাদের দিয়েছেন।