স্প্যানিশ বলে রাফায়েল নাদাল নিশ্চয়ই এল ক্লাসিকোর সঙ্গে পরিচিত। এ বার প্যারিসে ও এমন একটা লড়াইয়ে ফেভারিট যাকে বলা যায়, ‘লা ক্লাসিক’। ফরাসি ওপেনের ড্র-এ যখন থেকে একই অর্ধে নাদাল আর রজার ফেডেরার পড়েছিল, সবারই আশা ছিল সেমিফাইনালে দু’জন মুখোমুখি হবে, সেটাই হল। ফেডেরার বলেছে, এই ম্যাচটা খেলতে পারছে বলে ওর ক্লে কোর্টে প্রত্যাবর্তন সার্থক! দীর্ঘদিন ধরেই দুই সর্বকালের সেরার ঐতিহ্যে মোড়া এমন একটা ম্যাচে মুখোমুখি হওয়ার অপেক্ষায় ছিল রোলঁ গ্যারোজের দর্শকরা। হ্যাঁ, কথাটা বলার সাহস দেখালাম, দুই সর্বকালের সেরা।
ফেডেরার সবাইকে চমকে দিয়েছিল ফরাসি ওপেনে ফিরে এসে। শুধু তাই নয়, মাদ্রিদ আর রোমে ওর দুরন্ত দৌড় বুঝিয়ে দিয়েছে, ক্লে কোর্টে কতটা ছন্দে রয়েছে। ফরাসি ওপেনে যত দিন গড়িয়েছে ফেডেরারকে আরও ধারাবাহিক দেখিয়েছে। ও যে দুরন্ত ছন্দে আছে এতে কোনও সন্দেহ নেই। তবুও নাদাল এই ম্যাচে ফেভারিট। বিশেষ করে এই প্রতিযোগিতায়। নাদাল দুর্ধর্ষ খেলছে, কোর্টের সব কোণ থেকে নিখুঁত নিশানায় শট মারছে। তা ছাড়া ওর সামনে রেকর্ড বারো নম্বর ফরাসি ওপেন জেতার হাতছানি। যে দুরন্ত নজিরের কথা ভাবলে সবাই প্রেরণা পাবে।
কোয়ার্টার ফাইনালে নাদালকে খুব একটা চ্যালেঞ্জের মুখে যদিও পড়তে হয়নি। নিশিকোরিকে দেখে পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছিল, আগের রাউন্ডে পাঁচ সেটের দীর্ঘ ম্যাচ খেলার জন্য ক্লান্তি চেপে বসেছিল ওর উপর। অনেক সময় একশো শতাংশ ফিটনেস এবং তরতাজা থাকাটাও নাদালের বিরুদ্ধে যথেষ্ট নয়, সেখানে নিশিকোরি তো ওগুলো অনেক কম নিয়েই নেমেছিল।
অপর কোয়ার্টার ফাইনালটাও কম উৎসাহজনক ছিল না। যেখানে শেষ পর্যন্ত ফেডেরার জিতল বটে। তবে এই ম্যাচটায় আরও একটা ব্যাপার পরিষ্কার হয়ে গেল। স্ট্যান ওয়ারিঙ্কার প্রত্যাবর্তন। প্রাক্তন ফরাসি ওপেন চ্যাম্পিয়ন ওয়ারিঙ্কা চোটের জন্য এতটাই বিপর্যস্ত ছিল যে গত বছর ওর বিশ্ব র্যাঙ্কিংয়ে দুশোরও বেশি পিছিয়ে গিয়েছিল। যে ভাবে ও এক বছরের মধ্যেই ফরাসি ওপেনের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে এল, তাকে দুরন্ত বলতেই হবে। শুধু তাই নয়, ফেডেরারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীকেও চার সেটের লড়াই করতে বাধ্য করল। সঙ্গে স্তেফানোস চিচিপাসেরও প্রশংসা করতে হবে। ওয়ারিঙ্কার বিরুদ্ধে ও দারুণ খেলেছে। (গেমপ্ল্যান)