নতুন স্বপ্নের ঝিলিক। -ফাইল চিত্র।
হতাশা কাটিয়ে লাল-হলুদের ম্রিয়মান মশাল আবারও লড়াকু উদ্যমে জ্বলে ওঠার সমূহ সম্ভাবনা সামনেই। সব কিছু ঠিকঠাক চললে, নতুন ক্রেতা নিয়ে চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানের সঙ্গে এই মরসুমেই ইন্ডিয়ান সুপার লিগ (আইএসএল) খেলতে চলেছে ইস্টবেঙ্গল। সূত্রের খবর, হরি মোহন বাঙ্গুরের সংস্থা শ্রী সিমেন্টকে ক্রেতা হিসেবে পেয়ে গিয়েছে এই বছরই একশো পেরনো ক্লাব। আর তার ফলে আইএসএল-এর দরজাও খুলে যাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হল লাল-হলুদের সামনে।
মোহনবাগান আগেই চলে গিয়েছিল আইএসএলে। এ বার ইস্টবেঙ্গলও দেশের মেগা টুর্নামেন্টে খেলতে চলেছে। আর তার ফলে দুই প্রধানের মাঠের লড়াই ফুটবলভক্তদের কাছে বড় আকর্ষণ হয়ে উঠবে। গ্যালারি থেকে উঠবে সেই চেনা গগনভেদী শব্দ। দেখা যাবে সমর্থকদের আবেগের বিস্ফোরণ। অথচ বঙ্গ ভাগ হয়ে যাওয়ার সেই ডার্বি ম্যাচটাই তো দেখা হত না আইএসএলে।
টুর্নামেন্ট পরিচালনার দায়িত্বে থাকা ফুটবল স্পোর্টস ডেভেলপমেন্ট লিমিটেড (এফএসডিএল) কর্তৃপক্ষ আগেই দশ দলকে নিয়ে বৈঠক করে জানিয়ে দিয়েছিল এ বারের টুর্নামেন্টে বাড়ানো হবে না দলের সংখ্যা। অর্থাৎ ইস্টবেঙ্গলের খেলার আশা প্রায় নেই। এই আবহে সমর্থকদের মনে বাড়তে থাকে হতাশা। জন্ম নেয় ক্ষোভ। কর্তাদের দিকে ধেয়ে আসে স্পনসর নিয়ে একাধিক প্রশ্ন, আইএসএল-এ খেলা নিয়ে গিলতে হয় একাধিক তেতো প্রশ্ন।
আরও পড়ুন: ডার্বি আর ইস্টবেঙ্গলের ত্রাতার ভূমিকায় মমতা-মুকেশ-নীতা
চিরকালই ‘খোঁচা’ খাওয়া ইস্টবেঙ্গল ভয়ঙ্কর। হারার আগেই হার মানে না। এ ক্ষেত্রেও কর্তারা হার মানেননি। হাতের বাইরে চলে যাওয়া ম্যাচ তাঁরা ফিরিয়ে আনেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সাহায্যে। মমতার অনুরোধেই ইস্টবেঙ্গলের জন্য লগ্নিকারী সংস্থা খুঁজে দেওয়ার জন্য সচেষ্ট হন মুকেশ-নীতা অম্বানিরা। কয়েকটি সংস্থার সঙ্গে কথাবার্তা এগোলেও তা মাঝপথেই থেমে যায়। শেষ পর্যন্ত বাংলার সংস্থা শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে চুক্তি পাকা লাল-হলুদের।
এ ভাবেই ক্রেতার অপেক্ষায় বসে ছিলেন ক্লাবের কর্তা-কর্মী-সদস্য-সমর্থকরা।
সূত্রের খবর, ইস্টবেঙ্গলের লোগো মশাল, জার্সির লাল-হলুদ রং অপরিবর্তিতই থাকবে। সমর্থকদের আবেগের কথা মাথায় রেখেই পরিবর্তন করা হচ্ছে না লোগো, জার্সির রং। আশি শতাংশ শেয়ার থাকবে শ্রী সিমেন্টের। বাকি কুড়ি শতাংশ থাকবে ক্লাবের হাতে। কয়েক দিনের মধ্যেই সরকারি ভাবে ক্রেতার কথা জানিয়ে দেবে ইস্টবেঙ্গল।
ভারতীয় ফুটবলে ইস্ট-মোহনের ডার্বি জন্ম দিয়েছে বহু রূপকথার। আইএসএলে সেই ডার্বি ম্যাচ দেখার জন্য এখন থেকেই দিন গুনতে শুরু করে দিয়েছেন কলকাতা ময়দানের দুই বটবৃক্ষ ক্লাবের সমর্থকরা।