ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের গ্রেফতারির দাবি করেছেন কুস্তিগির সাক্ষী মালিক। —ফাইল চিত্র
ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহের গ্রেফতারির দাবিতে বিক্ষোভ দেখাচ্ছেন বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিক, বিনেশ ফোগটের মতো কুস্তিগিরেরা। দায়ের করা হয়েছে দু’টি এফআইআর। ঘটনার তদন্ত করছে দিল্লি পুলিশ। কিন্তু ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার করার মতো প্রমাণ তারা পায়নি বলে জানিয়েছে। দিল্লি পুলিশ কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের অধীনে। অর্থাৎ, দিল্লি পুলিশ অমিত শাহের নিয়ন্ত্রণে।
দিল্লি পুলিশের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘তদন্ত চলাকালীন ব্রিজভূষণকে গ্রেফতার করার মতো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। কুস্তিগিরেরা ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করেছেন তার পক্ষেও কোনও প্রমাণ মেলেনি। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মতো ১৫ দিনের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দেব আমরা।’’
ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে এক নাবালিকা-সহ বেশ কয়েক জন মহিলা কুস্তিগিরকে হেনস্থার অভিযোগ করেছেন বজরং, সাক্ষীরা। ব্রিজভূষণের গ্রেফতারির দাবিতে গত ২৩ এপ্রিল থেকে দিল্লির যন্তর মন্তরে ধর্না দিচ্ছেন তাঁরা। কেন্দ্র সরকার ও রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন তাঁরা। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় তাঁরা ইন্ডিয়া গেটের সামনে আমরণ অনশনে বসবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। যন্তর মন্তরে তাঁদের বসতে দেওয়া হবে না বলে নির্দেশিকা জারি করেছে দিল্লি পুলিশ। তাদের তরফে দাবি করা হয়েছে, প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের বার বার অনুরোধ করার পরেও তাঁরা আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করছেন। তাই তাঁদের যন্তর মন্তরে বসতে দেওয়া হবে না। ইন্ডিয়া গেটের সামনেও তাঁদের বসতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।
ব্রিজভূষণের পাশাপাশি দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধেও অভিযোগ করেন কুস্তিগিরেরা। তাঁরা জানান, দিল্লি পুলিশ জোর করে যন্তর মন্তরের আলো নিভিয়ে দিয়েছে। তাঁদের খাবার, জল না দেওয়ারও অভিযোগ ওঠে। চাপে পড়ে ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে দু’টি এফআইআর দায়ের হলেও আর কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। ফলে শেষ পর্যন্ত সংসদ ভবন অভিযানে যান সাক্ষীরা। তখনই আটক করা হয় তাঁদের। সেই ঘটনার সমালোচনা করেছেন অনেকে।
এর মধ্যেই মঙ্গলবার দেশের হয়ে জেতা সমস্ত পদক হরিদ্বারে গঙ্গায় বিসর্জন দিতে গিয়েছিলেন বিক্ষোভরত কুস্তিগিরেরা। হর কি পৌড়ী ঘাটে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাক্ষী, বিনেশরা। সাক্ষীদের সঙ্গে ছিলেন পরিবারের লোকেরা। স্থানীয় অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কুস্তিগিরদের সমর্থনে স্লোগান দেন সাধারণ মানুষ। অনেকে আবার কুস্তিগিরদের কাছে আবেদন করেন, তাঁরা যেন পদক বিসর্জন না দেন। ব্রিজভূষণের গ্রেফতারির দাবিতেও স্লোগান ওঠে সেখানে। পরে কৃষকনেতাদের পরামর্শে ফিরে আসেন বজরং, সাক্ষীরা। নিজেদের পদক কৃষকনেতাদের হাতে দেন তাঁরা। এই ঘটনা নিয়ে বজরংদের খোঁচা মেরেছেন ব্রিজভূষণ।