ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। তাঁর গ্রেফতারির দাবিতে প্রতিবাদ করছেন কুস্তিগিরেরা। —ফাইল চিত্র
দেশের হয়ে জেতা সমস্ত পদক গঙ্গায় বিসর্জন দিতে গিয়েও দেননি বিক্ষোভরত কুস্তিগিরেরা। কৃষকনেতাদের পরামর্শে ফিরে আসেন বজরং পুনিয়া, সাক্ষী মালিকেরা। নিজেদের পদক কৃষকনেতাদের হাতে দেন তাঁরা। এই ঘটনা নিয়ে বজরংদের খোঁচা মেরেছেন ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ।
কুস্তি কর্তা সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, ‘‘ওরা হরিদ্বারে গিয়েছিল গঙ্গায় পদক বিসর্জন দিতে। কিন্তু সেগুলো দিয়ে এল কৃষকনেতাদের হাতে। এটা ওদের সিদ্ধান্ত। এতে আমরা কী করব?’’ সেই সঙ্গে আর এক বার নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন ব্রিজভূষণ। তাঁর কথায়, ‘‘ঘটনার তদন্ত করছে দিল্লি পুলিশ। আমার বিরুদ্ধে যদি কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়, তা হলে আমাকে গ্রেফতার করা হবে। কিন্তু আমি তো কোনও দোষ করিনি।’’
মঙ্গলবার বিকালে দিল্লি থেকে হরিদ্বারে যান বজরং, সাক্ষী, বিনেশরা। হর কি পৌড়ী ঘাটে দাঁড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন সাক্ষী, বিনেশরা। সাক্ষীদের সঙ্গে ছিলেন পরিবারের লোকেরা। স্থানীয় অনেক মানুষ ভিড় করেন সেখানে। কুস্তিগিরদের সমর্থনে স্লোগান দেন সাধারণ মানুষ। অনেকে আবার কুস্তিগিরদের কাছে আবেদন করেন, তাঁরা যেন পদক বিসর্জন না দেন। ব্রিজভূষণের গ্রেফতারির দাবিতেও স্লোগান ওঠে সেখানে।
তার মাঝেই সেখানে উপস্থিত হন কৃষকনেতারা। তাঁরা গিয়ে বজরংদের সঙ্গে দীর্ঘ ক্ষণ কথা বলেন। কুস্তিগিরদের কাছ থেকে পদকগুলি চেয়ে নেন তাঁরা। কৃষকনেতারা বোঝান, দেশের হয়ে জেতা সম্মান এ ভাবে গঙ্গায় ফেলে দিলে সেটা দেশকে অপমান করা হবে। তাঁদের পরামর্শ মেনে নিয়েছেন বজরংরা। নিজেদের সিদ্ধান্ত বদল করেছেন কুস্তিগিরেরা। তবে তাঁরা কেন্দ্রকে পাঁচ দিনের সময়সীমা দিয়েছেন। তার মধ্যে তাঁদের দাবি না মানলে পাঁচ দিন পরে গঙ্গায় পদক বিসর্জন করবেন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তাঁরা।
ভারতীয় কুস্তি সংস্থার সভাপতি ব্রিজভূষণের বিরুদ্ধে হেনস্থার অভিযোগ করেছেন কুস্তিগিরেরা। ব্রিজভূষণের গ্রেফতারির দাবিতে দীর্ঘ দিন ধরে যন্তর মন্তরে ধর্না দিচ্ছেন তাঁরা। কেন্দ্র সরকার ও রাষ্ট্রপতির কাছে আবেদন করেছেন তাঁরা। কিন্তু কোনও ব্যবস্থা না হওয়ায় এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বজরংরা। এর পর তাঁরা ইন্ডিয়া গেটের সামনে আমরণ অনশনে বসবেন বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। যন্তর মন্তরে তাঁদের বসতে দেওয়া হবে না বলে নির্দেশিকা জারি করেছে দিল্লি পুলিশ। তাদের তরফে দাবি করা হয়েছে, প্রতিবাদী কুস্তিগিরদের বার বার অনুরোধ করার পরেও তাঁরা আইনশৃঙ্খলা ভঙ্গ করছেন। তাই তাঁদের যন্তর মন্তরে বসতে দেওয়া হবে না। এই সিদ্ধান্ত জানানোর পরে কুস্তিগিরেরা জানিয়ে দিয়েছেন, ইন্ডিয়া গেটের সামনে অনশন করবেন তাঁরা। ব্রিজভূষণ গ্রেফতার না হওয়া পর্যন্ত তাঁদের এই অনশন চলবে বলেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন সাক্ষীরা। কিন্তু সেখানেও তাঁদের বসতে দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছে দিল্লি পুলিশ।