শনিবার আদালতে যাওয়ার অভিযুক্ত সুশীল কুমার। ফাইল চিত্র
ক্রমশ কঠিন হচ্ছে অলিম্পিক্সে জোড়া পদকজয়ী কুস্তিগীর সুশীল কুমারের খুনের মামলা থেকে নিস্তার পাওয়া। সাগর রানা হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার দায়ে শনিবার সুশীল কুমার ও তাঁর সহযোগী অজয় কুমার শেরাওয়াতকে আরও চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিল দিল্লি আদালত। দুজনকে গ্রেফতার করার পর গত ২৩ মে প্রথম বার আদালতে তোলা হয়েছিল। সে বার জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ছয় দিন পুলিশি হেফাজতে ছিলেন দুই অভিযুক্ত। তবে দিল্লি পুলিশের তরফ থেকে আরও সাত দিন হেফাজতের আর্জি জানানো হলেও আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেনি। যদিও সরকারী পক্ষের আইনজীবীর দাবি সুশীল কুমার ও তাঁর সহযোগী তদন্তে পুলিশকে সাহায্য করছেন না।
আগামী চার দিন পুলিশি হেফাজতে থাকার সময় সুশীল ও অজয়ের রোজ স্বাস্থ্য পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। তাঁদের আইনজীবীরা দুই অভিযুক্তের সঙ্গে মামলার ব্যাপারে কথাও বলতে পারবেন। যদিও সুশীলকে আরও সাত দিন জেল হেফাজতে রাখার দিল্লি পুলিশের আবেদনকে খারিজ করে দেওয়া হল।
এই বিষয়ে আদালত জানিয়েছে, “আইন সবার জন্য সমান। সবে এই মামলা শুরু হয়েছে। এরই মধ্যে অভিযুক্তদের সম্পর্কে কিছু প্রমাণ মিলছে। কিন্তু মামলার পুরো তদন্ত এখনও বাকি। এই আদালত সংবিধান অনুসারে চলে। তাই অভিযুক্তদের ব্যক্তি স্বাধীনতাকে মর্যাদা দেয়। তবে এই ঘটনায় একজন ক্রীড়াবিদ ছাড়াও একাধিক ব্যক্তি, দিল্লি ও পাশের রাজ্যের কিছু দুষ্কৃতির নাম উঠে এসেছে। বেশ কয়েকটা মোবাইল, কিছু ভিডিয়ো, অস্ত্র ও নিহতের জামা কাপড় পাওয়া গিয়েছে। তাই আরও তদন্তের স্বার্থে এই দুজনকে আরও চার দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হল।”
তবে আদালত ১০ দিনের পুলিশি হেফাজতের আর্জি মঞ্জুর না করলেও সরকার পক্ষের আইনজীবী কিন্তু সুশীল কুমারের বিরুদ্ধে মারাত্মক অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবি, “সুশীল কুমার এই খুনের মূল পাণ্ডা। ওঁর নির্দেশেই এক তরুণ কুস্তিগীর মারা গেল। তবে গত ছয় দিন থানায় বন্দি থাকলেও সুশীল কিন্তু পুলিশকে সাহায্য করেননি। ওঁর বিরুদ্ধে একাধিক প্রমাণ থাকলেও সুশীল বারবার তদন্তে অসহযোগিতা করেছেন। এই ঘটনার সঙ্গে একাধিক ব্যক্তি জড়িয়ে রয়েছে। তাই সুশীলের যাতে পুলিশি হেফাজত বাড়ে সেই জন্য আবেদন করেছিলাম।”
এ দিকে গত ৪ মে ছত্রসাল স্টেডিয়ামে সাগর রানাকে হত্যা করার সময় প্রিন্স নামক এক ব্যক্তি হাজির ছিলেন। সুশীলের নির্দেশে তিনি সেই ঘটনার ভিডিয়ো তৈরি করেন। সেই প্রিন্স এ বার সরকারের হয়েই আদালতে সুশীলের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দেবেন। এমনকি পুলিশের কাছে ধৃত বিজেন্দ্র এখন সুশীলের উপর দোষ চাপাচ্ছেন। ফলে অলিম্পিক্সে জোড়া পদকজয়ী কুস্তিগীরের সমস্যা যে বাড়ছে এমনটা কিন্তু বলাই যায়। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত মোট নয় জনকে গ্রেফতার করেছে দিল্লি পুলিশ।