ভাঙা র্যাকেট হাতে ড্যানিল মেদভেদেভ। মঙ্গলবার অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে। ছবি: রয়টার্স।
গত বছর থেকে অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে শুরু হয়েছিল কৃত্রিম মেধার ব্যবহার। সেই ব্যবহার নিয়ে এ বার বিতর্ক শুরু হয়েছে। কৃত্রিম মেধার জন্য খেলার মাঝে মনঃসংযোগ নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ। এই বিতর্কের মাঝেই প্রথম রাউন্ডের ম্যাচ খেলতে নেমেই মেজাজ হারিয়েছেন ড্যানিল মেদভেদেভ। পঞ্চম বাছাই এই টেনিস তারকা ম্যাচ চলাকালীন র্যাকেটের ধাক্কায় নেটের ক্যামেরা ভেঙে দিয়েছেন। সেটা করতে গিয়ে তাঁর র্যাকেটটিও ভেঙেছে।
প্রথম রাউন্ডে তাইল্যান্ডের কাসিদিত সামরেজের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেছিলেন মেদভেদেভ। প্রথম সেট জিতলেও দ্বিতীয় ও তৃতীয় সেট হেরে যান রাশিয়ার তারকা। তৃতীয় সেটের শেষ গেমে একটি ভলি মারতে গিয়ে ভুল করে বসেন মেদভেদেভ। বলে র্যাকেট ছোঁয়াতে পারেননি তিনি। তার পরেই মেজাজ হারান মেদভেদেভ।
নেটের মাঝে একটি ক্যামেরা লাগানো থাকে। সেই ক্যামেরায় বেশ কয়েক বার র্যাকেটে দিয়ে মারেন তিনি। সেই আঘাতে ক্যামেরা ভেঙে যায়। র্যাকেটও ভেঙে যায়। চেয়ার আম্পায়ার সতর্ক করেন মেদভেদেভকে। তিনি ক্ষমা চান। তার পরে কিছু ক্ষণ বসে থাকেন তিনি। সেই সময় খেলা কিছু ক্ষণ বন্ধ থাকে। ভাঙা ক্যামেরা সরিয়ে নতুন ক্যামেরা লাগানো হয়। এই কাজের জন্য মেদভেদেভকে বড় জরিমানা করা হবে। তবে তার অঙ্ক এখনও জানা যায়নি।
পিছিয়ে পড়লেও শেষ দুই সেট জিতে ম্যাচ জেতেন মেদভেদেভ। এর আগেও বহু বার কোর্টে মেজাজ হারিয়েছেন মেদভেদেভ। কখনও র্যাকেট ভেঙেছেন, কখনও চেয়ার আম্পায়ারের সঙ্গে তর্ক করেছেন, আবার কখনও দর্শকদের সঙ্গেও বিবাদে জড়িয়েছেন। সেই মেজাজ আরও এক বার দেখা গেল অস্ট্রেলিয়ান ওপেনে।
অস্ট্রেলিয়ার জর্ডন থম্পসন ও জার্মানির ডমিনিক কোয়েফারের মধ্যে খেলায় বিতর্ক হয়েছে কৃত্রিম মেধা প্রযুক্তি নিয়ে। আম্পায়ারদের উপর থেকে চাপ কমানোর জন্য গত বার থেকে এই কৃত্রিম মেধা প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। সার্ভিসের সময় খেলোয়াড়কে একটি নির্দিষ্ট জায়গায় দাঁড়াতে হয়। সেই নিয়ম ভাঙলে তাকে ‘ফুট ফল্ট’ বলে। গত বার থেকে কৃত্রিম মেধা এই বিষয়টি দেখে। অর্থাৎ, আম্পায়ারের ভূমিকায় দেখা যায় তাকে। থম্পসনদের ম্যাচে সেই কৃত্রিম মেধায় গড়বড় হয়। তারই খেসারত দিতে হয় কোয়েফারকে।
প্রথম দুই সেট হারার পর তৃতীয় সেট জেতেন কোয়েফার। চতুর্থ সেটেও একটা সময় এগিয়ে ছিলেন তিনি। একটি গেমে তিনি সার্ভিস করতে যাওয়ার ঠিক আগেই কৃত্রিম মেধার আওয়াজ শোনা যায়। তাতে বার বার ‘ফুট ফল্ট’ বলে চিৎকার করা হতে থাকে। এতে হাসির রোল ওঠে দর্শকদের মধ্যে। কিন্তু কোয়েফারের মনঃসংযোগ ভেঙে যায়। তিনি বিরক্ত হন। তার পর থেকে খেলায় ক্রমাগত ভুল করতে থাকেন তিনি। ফলে চতুর্থ সেট জিতে ম্যাচ জিতে যান থম্পসন।
ফুট ফল্টের এই চিৎকার টেনিস খেলোয়াড়দের মনঃসংযোগের পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসেও ধাক্কা দেয়। কারণ, তার পর থেকে প্রতি বার সার্ভিসের সময় একটি বাড়তি বিষয়ে চিন্তা করতে হয় তাঁদের। ফলে খোলা মনে খেলা যায় না। ২০০৯ সালের ইউএস ওপেনে ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে লাইন বিচারক ফুট ফল্টের চিৎকার করায় তাঁর সঙ্গে বিবাদে জড়িয়েছিলেন সেরিনা উইলিয়ামস। সেই ঘটনা আরও এক বার দেখা গেল।