আপ্লুত: নিজের প্রিয় শহর মাদ্রিদে হাজির হয়ে কৃতী ফুটবলারের পুরস্কার নিয়ে রোনাল্ডো। বিমানে বান্ধবীর সঙ্গে ছবিও পোস্ট করলেন জুভেন্তাস তারকা। টুইটার
চমকে দিলেন ক্রিশ্চিয়ানো রোনাল্ডো। মাদ্রিদে এক অনুষ্ঠানে পুরস্কার নিতে এসে বলে দিলেন, আবার রিয়ালে ফিরতে চান। চৌত্রিশ বছরের পর্তুগিজ তারকার রিয়ালে সাফল্যকে অবিশ্বাস্য বললেও কমিয়ে বলা হবে। স্পেনের ক্লাবের হয়ে ৪৩৮ ম্যাচে তাঁর গোল ৪৫০। সঙ্গে তিনি চার বার রিয়ালকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং দু’বার লা লিগা জেতাতেও প্রধান ভূমিকা নিয়েছিলেন।
পুরস্কার নিয়ে আপ্লুত রোনাল্ডো বলেছেন, ‘‘রিয়াল ছাড়ার খুব খারাপ লেগেছিল। রিয়াল আর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের অভাব আজও অনুভব করি। তবে নানা ঘাত-প্রতিঘাতের জন্য মাদ্রিদেই বেশি বছর কাটিয়েছি। আমার বাচ্চারা, মেয়ে এখানেই জন্মেছে। তাই মাদ্রিদে থাকতে না পারা আমাকে বেশি কষ্ট দেয়।’’ মাদ্রিদে পাওয়া ফুটবলে অসাধারণ আবদানের জন্য এক পত্রিকার দেওয়া পুরস্কার নিয়ে তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘আমার ব্যক্তিগত ট্রফিঘরে এই স্মারক বিশেষ জায়গা নিয়ে থাকবে। মাদ্রিদ চিরকাল আমার বিশেষ পছন্দের জায়গা। বহু জায়গায় ঘুরতে হয়। কিন্তু মাদ্রিদের মতো সুন্দর শহর খুব বেশি আমি দেখিনি।’’
রোনাল্ডো আরও বলেছেন, ‘‘জীবনে প্রচুর পুরস্কার পেয়েছি। বেশির ভাগই রিয়াল মাদ্রিদে। তা ছাড়া এটা স্পেনীয় ট্রফি। তাই এর গুরুত্ব সব সময় আলাদা। বিরাট গর্বেরও। আশা করি তাড়াতাড়ি মাদ্রিদে ফিরেও আসব।’’ গত মরসুমেই সবাইকে চমকে দিয়ে রোনাল্ডো রিয়াল ছেড়ে জুভেন্তাসে যোগ দেন। সেখানেও তিনি সফল। গত মরসুমে যেমন সব টুর্নামেন্ট ধরে পর্তুগিজ তারকার মোট গোল ২৮। ২১টি করেন সেরি-আ’তে। মাদ্রিদের অনুষ্ঠানে ছিলেন রিয়ালের প্রেসিডেন্ট ফ্লোরেন্তিনো পেরেসও। তিনিও মেনে নেন, রোনাল্ডো এখনও বিশ্বসেরা। পেরেস বলেন, ‘‘যতদিন বাঁচব ততদিন রোনাল্ডোর অভাব অনুভব করব। সবাই জানে, আমি ক্রিশ্চিয়ানোর অন্ধ ভক্ত। ও-ই বিশ্বের সেরা। এটা নিয়ে কথাই হতে পারে না। তাই আজকের অনুষ্ঠানে আমি কী করে বা না এসে থাকতে পারি?’’
রোনাল্ডোর স্বপ্ন, বিশ্বের তৃতীয় ফুটবলার হিসেবে তিনটি ক্লাবের হয়ে চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতা। তাঁর কথায়, ‘‘তিনটি ক্লাবই তো বেশির ভাগ সময় চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতে। জুভেন্তাস, রিয়াল অথবা বার্সেলোনা। কিন্তু চ্যাম্পিয়ন্স লিগ বছরে একটা ক্লাবই জিতবে। জুভেন্তাসও নিশ্চয়ই আবার ট্রফিটা পাবে।’’ এই প্রসঙ্গে রোনাল্ডো টেনেছেন বার্সেলোনার উদাহরণ। বলেন, ‘‘খেয়াল করে দেখুন, গত পাঁচ বছরে বার্সা কত বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু তার পরে এক বারও চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জিততে পারেনি। টাকা খরচ করলেই যে ইউরোপ সেরার ট্রফিটা আসবে তা কিন্তু নয়। জুভেন্তাসও চেষ্টা করছে। নতুন করে দল গড়েছে। আগামী দিনে এই ট্রফিটা জিততেই কিন্তু জুভেন্তাস ঝাঁপাবে।’’ রোনাল্ডো সঙ্গে এও বলেন, ‘‘আসলে অনেক কিছুর উপরে এই ট্রফি জেতা নির্ভর করে। সূচি কেমন হল। কোন গ্রুপে আছি। খেলার বিশেষ কিছু মুহূর্ত। চোট-আঘাত। এবং সব কিছু ছাপিয়ে ভাগ্য। তবে সারাক্ষণ শুধু এই ট্রফিটা পাওয়ার কথাই ভাবলে চলবে না। লক্ষ্য হওয়া উচিত, সব ম্যাচ জেতা। আমি নিশ্চিত, জুভে (জুভেন্তাস) নিশ্চয়ই পারবে। এই বছর না হলে, আগামী দু’বছরের মধ্যে অবশ্যই সফল হবে। আমি এতটা আশাবাদী একটাই কারণে। গোটা দলটার কাজ এবং প্রস্তুতির ধরন দেখে। সঙ্গে কর্তারা সব সময় পাশে থাকেন। একটা দলকে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের মতো টুর্নামেন্টে জিততে যা যা দরকার তার সবই জুভেন্তাসে আছে।’’
রিয়ালে এত সাফল্যের পরেও কেন তিনি জুভেন্তাসে চলে গেলেন জানতে চাওয়া হলে কিংবদন্তি ফুটবলারের জবাব, ‘‘ফুটবলার হিসেবে নতুন করে নিজেকে আবিষ্কার করতে চেয়েছি। এমন কোথাও খেলতে চেয়েছিলাম যেখানে নতুন করে নিজেকে উদ্বুদ্ধ করা যাবে।’’