মহম্মদ শামি। —ফাইল চিত্র
লিগামেন্ট ছিঁড়েছে হার্দিক পাণ্ড্যর। সুস্থ হয়ে মাঠে নামতে বেশ কয়েক দিন সময় লাগবে তাঁর। হার্দিককে নিয়ে তাড়াহুড়ো করতে চাইছে না ভারতীয় ম্যানেজমেন্ট। কারণ, হার্দিক না থাকলেও ভারতীয় দলের বিশেষ কোনও সমস্যা হচ্ছে না। প্রথম ম্যাচে সুযোগ পেয়েই ৫ উইকেট নিয়ে দলকে ভরসা দিয়েছেন মহম্মদ শামি। তা হলে কি গ্রুপ পর্বের বাকি চার ম্যাচে শামিকে ভারতের প্রথম একাদশে দেখা যাবে? না কি এর পরেও শামিকে বসতে হতে পারে বেঞ্চে?
হার্দিক না খেলায় নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে দু’টি বদল করেছিল ভারত। হার্দিকের বদলে খেলানো হয়েছিল সূর্যকুমার যাদবকে। অলরাউন্ডার শার্দূল ঠাকুরের বদলে এসেছিলেন শামি। কারণ, শামিকে না নিলে শার্দূলকে ১০ ওভার বল করতে হত, যা সমস্যায় ফেলতে পারত রোহিত শর্মাদের। অর্থাৎ, নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে ভারতীয় দল ছয় বিশেষজ্ঞ ব্যাটার ও পাঁচ বিশেষজ্ঞ বোলার খেলিয়েছিল। পরের ম্যাচেও কি সেটাই দেখা যাবে? নাকি বদল হতে পারে?
ভারতের পরের ম্যাচ রবিবার। প্রতিপক্ষ ইংল্যান্ড। খেলা হবে লখনউয়ে। এই মাঠ স্পিন সহায়ক। তাই সেখানে তিন স্পিনার খেলানোর লোভ ভারত সামলাতে পারবে কি না, সেটা দেখার। ইংল্যান্ডের দলে দাউইদ মালান, বেন স্টোকস ও মইন আলি বাঁ হাতি। তাঁদের বিরুদ্ধে রবিচন্দ্রন অশ্বিন ভাল বিকল্প হতে পারেন। ইংল্যান্ড যে ভারতের মাটিতে স্পিনের বিরুদ্ধে দুর্বল সেটা বার বার দেখা গিয়েছে। স্পিনেই তাদের হারিয়েছে আফগানিস্তান। তাই ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে কুলদীপ যাদব ও রবীন্দ্র জাডেজার সঙ্গে অশ্বিনকেও দেখা যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে ভারতীয় দলের সামনে কঠিন প্রশ্ন থাকবে। সূর্যকে বসিয়ে অশ্বিনকে খেলানো হবে, নাকি কোনও পেসারকে বসানো হবে। সূর্যকে বসালে ব্যাটার কমে যাবে। ইংল্যান্ডের বোলিং আক্রমণের বিরুদ্ধে সেটা চাইবে না ভারত। আর যদি পেসারদের মধ্যে কাউকে বসানো হয়, সে ক্ষেত্রে শামি ও সিরাজের মধ্যে এক জনকে বাদ পড়তে হবে। কাকে বাদ দেবেন রোহিতেরা, সেটাই বড় প্রশ্ন।
ইংল্যান্ডের পরে ভারতের প্রতিপক্ষ শ্রীলঙ্কা। মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে খেলা। শ্রীলঙ্কার দলে পাথুম নিশঙ্ক, কুশেল পেরেরা ও চরিথ আশালঙ্কের মতো বাঁ হাতি ব্যাটার থাকলেও ওয়াংখেড়েতে অতিরিক্ত স্পিনার খেলানোর সম্ভাবনা প্রায় নেই। এই মাঠে বাড়তি বাউন্সের সুবিধা পান পেসারেরা। তা ছাড়া ওয়াংখেড়ে সূর্যকুমারের ঘরের মাঠ। তাই সেই ম্যাচে নিউ জ়িল্যান্ড ম্যাচের দল দেখতে পাওয়ার সম্ভাবনা বেশি। অর্থাৎ, তিন পেসার ও দুই স্পিনারে খেলবেন রোহিতেরা।
শ্রীলঙ্কার পরে ভারতের ম্যাচ দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে। খেলা হবে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে। দক্ষিণ আফ্রিকার দলে কুইন্টন ডি’কক ও ডেভিড মিলারের মতো বাঁ হাতি ব্যাটার রয়েছে। কিন্তু ইডেন শামির ঘরের মাঠ। তা ছাড়া এই মাঠে পেসারেরা বরাবর সুবিধা পেয়ে থাকেন। তাই দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধেও তিন পেসার ও দুই স্পিনার খেলানোর সম্ভাবনা সব থেকে বেশি।
ভারতের গ্রুপের শেষ ম্যাচ নেদারল্যান্ডসের বিরুদ্ধে। বেঙ্গালুরুতে হবে সেই ম্যাচ। এই ম্যাচের আগে ভারতের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়ে গেলেও নিজেদের সেরা দলকে নামানোর কথা ভাববে ভারত। চিন্নাস্বামীর পিচেও পেসারেরা সাহায্য পেয়ে থাকেন। সেই কারণে এই ম্যাচেও শামির খেলা প্রায় নিশ্চিত।
বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচে খেলতে নেমেই শামি যেমন বল করেছেন তাতে পরের চার ম্যাচে তাঁকে বাইরে বসিয়ে রাখা কঠিন। রোহিত নিজেও জানেন, হার্দিক না থাকায় দলের ব্যাটিং কিছুটা হলেও দুর্বল হয়েছে। এ ক্ষেত্রে বোলিং আক্রমণকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। সে ক্ষেত্রে শামির দলে থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণ। একমাত্র ইংল্যান্ড ম্যাচের দল বাছতে একটু সমস্যা হতে পারে রোহিতদের। নইলে বাকি তিন ম্যাচে যে শামি খেলবেন, তা প্রায় নিশ্চিত।