শনিবার বিকেলেই টেস্ট অধিনায়কের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিরাট কোহলী। ছবি টুইটার
শনিবার বিকেলেই টেস্ট অধিনায়কের পদ থেকে ইস্তফা দিলেন বিরাট কোহলী। নেটমাধ্যমে এক বিবৃতি জারি করে সাদা জার্সিতে নেতৃত্বের পদ থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা করেন তিনি। গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগেই সেই ফরম্যাটের নেতৃত্ব ছাড়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন। এরপর একদিনের ক্রিকেটের অধিনায়কত্ব থেকেও তাঁকে সরিয়ে দেওয়া হয়। শনিবার থেকে টেস্ট দলের দায়িত্বেও আর থাকছেন না। ফলে ভারতীয় ক্রিকেটে কোহলীর নেতৃত্বের যে যুগ চলছিল, তার পুরোপুরি অবসান হল শনিবার।
শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ হেরেছে ভারত। শক্তিশালী দল নিয়েও সিরিজ জিততে পারেননি। তারপরেই টেস্টের নেতৃত্ব ছাড়লেন তিনি।
২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়া সিরিজে প্রথম বার দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন কোহলী। সেই সিরিজে মহেন্দ্র সিং ধোনি অবসর নেওয়ার পর পাকাপাকি ভাবে টেস্ট দলের নেতৃত্ব দেওয়ার ব্যাটন চলে যায় কোহলীর হাতে। টেস্টে ভারতকে ৬৮টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। এর মধ্যে ৪০টি ম্যাচে জিতেছেন এবং ১৭টি ম্যাচে হেরেছেন। ড্র হয়েছে ১১টি ম্যাচ। পরিসংখ্যান বলছে, সাদা জার্সিতে ভারতের সফলতম অধিনায়ক তিনি।
কোহলীর নেতৃত্বেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে প্রথম বার টেস্ট সিরিজ জিতেছে ভারত। গত বছর ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে ২-১ ব্যবধানে এগিয়ে রয়েছে তারা। তার মধ্যে লর্ডস এবং ওভালে জয় রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে সেঞ্চুরিয়নে প্রথম বারের মতো টেস্ট ম্যাচ জিতেছে ভারত। শুধু তাই নয়, প্রথম বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও উঠেছিল তারা। গত বছর সেই ম্যাচে তারা হেরে যায় নিউজিল্যান্ডের কাছে।
অধিনায়ক থাকাকালীন কোহলী ৫৮৬৪ রান করেছেন। গড় ৫৪.৮০। ২০টি শতরান এবং ১৮টি অর্ধশতরান রয়েছে। তবে সাম্প্রতিক কালে শতরান পাননি তিনি। ২০১৯ সালে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দিন-রাতের টেস্টে শেষ বারের মতো টেস্টে শতরান এসেছিল তাঁর ব্যাট থেকে।
শনিবার এক বিবৃতিতে কোহলী লিখেছেন, ‘গত সাত বছর ধরে প্রতিদিন কঠোর পরিশ্রম, একটানা ধৈর্য দেখিয়ে দলকে একটা সঠিক দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছি। সম্পূর্ণ সততার সঙ্গে এই কাজ করেছি এবং কিছু বাদ রাখিনি। কোনও একটা স্তরে এসে সবকিছুই একসময় থেমে যায় এবং টেস্ট দলের অধিনায়ক হিসেবে, আমার কাছেও এটাই থেমে যাওয়ার সময়।’
কোহলীর সংযোজন, ‘এই যাত্রাপথে অনেক উত্থান এবং কিছু পতন হয়েছে। কিন্তু কখনওই চেষ্টা বা বিশ্বাসের খামতি থাকেনি। যা-ই করি না কেন, বরাবর নিজের ১২০ শতাংশ দেওয়ার চেষ্টা করেছি। যদি সেটা না পারি, তা হলে আমি জানি এটা সঠিক কাজ নয়। দলের প্রতি অসৎ হতে পারব না।’