সূর্যের সাফল্যের কারণ কী? ছবি টুইটার
আইপিএল এবং ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিক ভাবে ভাল খেলেও জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার জন্য দিনের পর দিন অপেক্ষা করতে হয়েছে তাঁকে। হতাশ হয়েছেন। ভেঙে পড়েছেন। কিন্তু হাল ছেড়ে দেননি। বরং আরও মন দিয়েছেন নিজের খেলায়। কঠোর পরিশ্রমের বদলে জোর দিয়েছেন বুদ্ধিদীপ্ত খেলায়। আর সেটায় ভরসা করেই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন সূর্যকুমার যাদব। এখন ভারতীয় দল থেকে তাঁকে বাদ দেওয়ার কথা ভাবাও যায় না।
ব্যাট করতে নামলে প্রথম বলে চার মারা কার্যত অভ্যাসে পরিণত করে ফেলেছেন সূর্য। এশিয়া কাপ পর্যন্ত ২৬টি ইনিংসে আট বার প্রথম বলে চার মেরেছেন। তিনি কি শুরুতেই বাউন্ডারি মারার পরিকল্পনা করে নামেন? সূর্য হাসতে হাসতে বললেন, “একেবারেই নয়। ব্যাট করতে নামার আগেই গা গরম করে নিই। উত্তেজিত থাকি। ব্যাট করতে নেমেই বিপক্ষকে জানিয়ে দিতে চাই, আমি ক্রিজে দ্রুত রান তুলতে এসেছি। তার মধ্যে প্রথম বলে চার বা ছয় মারি। এমনকি সাত-আট বলে দু’-তিনটে চারও হয়ে যায়। এটাই আমার খেলার স্টাইল।”
হতাশ হলেও কী ভাবে ঘুরে দাঁড়ালেন সূর্যকুমার? এক ক্রিকেট ওয়েবসাইটে ভারতের মিডল অর্ডার ব্যাটার বলেছেন, “তখন সময়টা ২০১৭-১৮। স্ত্রীর সঙ্গে এক দিন বসে ঠিক করলাম, এ বার বুদ্ধি কাজে লাগাতে হবে। এত দিন ঘরোয়া ক্রিকেট খেলতে গিয়ে অনেক পরিশ্রম করেছি। এ বার অন্য কিছু করে দেখি কী হয়।”
সূর্যকুমার এর পর নিজের খেলা বদলে ফেলেন। বদল আনেন অনুশীলনে। বলেছেন, “২০১৮-র পর বুঝতে পারলাম, নিজের খেলায় বদল আনা দরকার। আরও বেশি অফসাইডের দিকে ব্যাটিং করা শুরু করলাম। খাওয়ায় বদল আনলাম। ফলে ২০১৮ এবং ২০১৯-এ ঘরোয়া ক্রিকেটে ভাল খেলি। ২০২০-তে গিয়ে দেখি আমি শারীরিক ভাবে অনেক বেশি ফিট।”
২০২১-এর মার্চে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি ম্যাচে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অভিষেক হয় সূর্যের। তিনিই জানিয়েছেন, এক সময় উদ্দেশ্যহীন অনুশীলন করতেন। কিন্তু বুদ্ধি কাজে লাগিয়ে অনুশীলন করা শুরু করতেই অনেক বেশি ধারাবাহিক হয়ে যান। তাঁর কথায়, “আমার শরীর কতটা সক্ষম, আরও কী দরকার, এ সব বুঝতে দেড় বছর সময় লেগেছিল। পরে বুঝতে পেরেছিলাম, আমি সঠিক দিকেই এগোচ্ছি। তার পর পুরোটা অটোপাইলট মোডে চলে যায়। জানতাম কী করতে হবে, কী ভাবে অনুশীলন করতে হবে এবং কতটা অনুশীলন করতে হবে।”
সূর্য যোগ করেছেন, “তার আগে অন্তহীন অনুশীলন চালিয়ে যেতাম। মাঝেমাঝে হতাশ হতাম। ২০১৮-র পর সব বদলে গেল। দেখলাম সব ধরনের ফরম্যাটে রান করতে পারছি। নিজেকে বদলে ফেলার পরেই ধারাবাহিকতা আসে এবং জাতীয় দলের দরজা খুলে ফেলি।”