মহড়ায়: নিউজ়িল্যান্ডের গাপ্টিল ও ড্যারিল মিচেল। ছবি গেটি ইমেজেস।
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ শুরুর আগে কেউ হয়তো ভাবেনি, অস্ট্রেলিয়া আর নিউজ়িল্যান্ডের ফাইনাল হবে। অবশ্যই ক্রিকেটীয় যুক্তি ছিল সেই ভাবনার মধ্যে। পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে যে দুর্দান্ত রেকর্ড রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার, তা কুড়ি ওভারে নেই। এখনও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিততে পারেনি ওরা। রবিবার অবশ্য অধরা কাপ জযের সুযোগ থাকছে অস্ট্রেলীয়দের সামনে।
তবে অস্ট্রেলিয়া নিশ্চয়ই মনে রাখবে যে, নিউজ়িল্যান্ডকে হাল্কা ভাবে নেওয়ার পরিণতি কী হতে পারে। অনেক দলই যা আবিষ্কার করেছে। সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডও বুঝেছে, কেন উইলিয়ামসনের দল কী করতে পারে। নিউজ়িল্যান্ডের সুপারস্টার ক্রিকেটার নেই। তাই অনেকে হয়তো ওদের যোগ্যতাকে খাটো করে দেখে। কিউয়িরাও বোধ হয় ‘আন্ডারডগ’ তকমাটা ভালবাসে। তাতে ওদের খেলা যেন আরও খোলে, আরও বেশি করে যেন ওরা মনোনিবেশ করতে পারে। প্রত্যাশার চাপটাও অনেক কমে যায়। বার বার বিশ্বকাপের মতো মঞ্চে নিজেদের প্রমাণ করেছে নিউজ়িল্যান্ড। গত সাত-আট বছরে বিশ্বকাপ বা বিশ্বমানের ইভেন্টে সবচেয়ে ধারাবাহিক দল তারাই। ভুললে চলবে না যে, ওদের দলে ম্যাচের রং পাল্টে দেওয়ার মতো ক্রিকেটার রয়েছে। কী ব্যাটে, কী বলে। আর ফিল্ডিংয়ে ওরা দুর্ধর্ষ।
সব চেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে, মাঠের মধ্যে আবেগকে ওরা দারুণ ভাবে নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারে। তাই চাপ থাকলেও ওদের দেখে কখনওই বোঝা যায় না, চাপে আছে। এটা একটা বড় ব্যাপার। কেন উইলিয়ামসনের মতো ক্রিকেটার রয়েছে ওদের। যে কি না বুঝিয়ে দিয়েছে, টি-টোয়েন্টিতে ভাল ইনিংস খেলতে গেলে পেশিশক্তি থাকতেই হবে, এমন কোনও কথা নেই। অধিনায়ক হিসেবে সামনে থেকে নেতৃত্ব দেয় কেন।
নিউজ়িল্যান্ড নিঃসন্দেহে ডেভন কনওয়ের অভাব অনুভব করবে। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে খুব ভাল খেলেছিল। কনওয়ে বাঁ হাতি বলে প্রতিপক্ষ বোলারদের জন্যও সমস্যা তৈরি করতে পারে। ডারিল মিচেলকে ব্যাটিংয়ে উপরে তুলে আনাটা মাস্টারস্ট্রোক ছিল। জিমি নিশাম দেখিয়ে দিয়েছে, এক জন ভাল অলরাউন্ডার কতটা দলের সাফল্যে বড় ভূমিকা নিতে পারে। নিউজ়িল্যান্ডের হাতে ট্রেন্ট বোল্ট, টিম সাউদি আর অ্যাডাম মিলনে মিলে সেরা পেস আক্রমণও রয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ার নক-আউট রেকর্ড অসাধারণ। দারুণ গতিতেও ছুটছে অ্যারন ফিঞ্চের দল। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দুর্দান্ত জয়ের পরে ওরা নিশ্চয়ই আরও টগবগে হয়ে উঠেছে। দু’টো সেমিফাইনালেই কিন্তু আমরা দেখেছি মাত্র দু’টো ওভারেই ম্যাচের রং আমূল পাল্টে যেতে পারে। তাই ফল নিয়ে আগাম পূর্বাভাস না করতে যাওয়াই ভাল। অস্ট্রেলিয়া কি তাদের প্রথম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জিতবে? নাকি নিউজ়িল্যান্ড টেস্টের বিশ্বচ্যাম্পিয়নশিপ জেতার পরে বছরের দ্বিতীয় আইসিসি ট্রফি ঘরে নিয়ে যাবে? সকলেই দেখার অপেক্ষায়। (টিসিএম)