কপিল দেব। — ফাইল চিত্র
একটা সময় ছিল যখন সব ধরনের ক্রিকেটে ভারতীয় দলে একাধিক অলরাউন্ডার দেখা যেত। বিশ্বজয়ী অধিনায়ক কপিল দেব এই তালিকায় হয়তো সবার আগে থাকবেন। তার পরে অজয় জাডেজা, রবিন সিংহ, যুবরাজ সিংহ, রবীন্দ্র জাডেজা, অক্ষর পটেল, ইরফান পাঠানরা অলরাউন্ডার হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। কিন্তু বোর্ডের সাম্প্রতিক পদক্ষেপে আর হয়তো অলরাউন্ডারদের দেখাই যাবে না। আগামী দিনে হয়তো আর কপিলদের পাওয়া যাবে না। কারণ, ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’-এর নিয়ম।
কোনও ম্যাচে যিনি ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার হন, তিনি সেই ম্যাচে প্রথম একাদশে থাকেন না। দু’টি দলকে এগারো জনের বাইরে আরও চার জন ক্রিকেটারের নাম জানাতে হয়। কোনও দল যদি চায়, প্রথম একাদশে থাকা কোনও ক্রিকেটারকে তুলে নিয়ে তার বদলে সেই চার জনের মধ্যে যেকোনও এক জনকে খেলাতে পারে। যে ক্রিকেটারকে নামানো হয় তাকে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ বলে।
গত মরসুমে প্রথম বার সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’-এর নিয়ম চালু হয়েছিল। তখন ১৪ ওভারের মধ্যে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারকে নামাতে হত। টসের আগেই তাঁর নাম জানিয়ে দিতে হত। তার সংশোধিত রূপ দেখা গিয়েছিল এ বারের আইপিএলে। সেখানে ম্যাচের যে কোনও সময় ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নামানো যেত। এ বারের সৈয়দ মুস্তাকে এই আইপিএলের নিয়মেই ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার নামানো যাবে। শুক্রবার অ্যাপেক্স কমিটির বৈঠকের শেষে এই ঘোষণা করে দিয়েছে বিসিসিআই। এতেই অলরাউন্ডারদের অস্তিত্ব সঙ্কটের মুখে। রিকি পন্টিংয়ের মতো কেউ কেউ বলে দেন, এতে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অলরাউন্ডারের গুরুত্ব অনেকটাই কমে যাবে।
তবে আইপিএলে ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম ব্যাপক জনপ্রিয় হয়। প্রথম দিকে এই নিয়মের সঙ্গে দলগুলির সড়গড় হতে একটু সময় লাগলেও প্রতিযোগিতা যত এগিয়েছে, দলগুলি এর সঙ্গে মানিয়ে নিয়েছে।
পন্টিংয়ের কথাই যে সত্যি হতে চলেছে, সেটা বোঝা যাচ্ছে ভারতের সাম্প্রতিক দল নির্বাচনে। ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের বিরুদ্ধে টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ের দলে অলরাউন্ডার বলতে দু’জন— হার্দিক পাণ্ড্য এবং অক্ষর পটেল। ভারতীয় দলে হার্দিক একমাত্র ব্যাটার যিনি ভাল বল করতে পারেন। আর অক্ষর একমাত্র বোলার, যাঁর ব্যাটের হাত ভাল। অর্থাৎ দলে তেমন অলরাউন্ডার নেই।
ঘরোয়া ক্রিকেটেও ইমপ্যাক্ট প্লেয়ারের নিয়ম চালু হলে দলগুলি প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষজ্ঞ ব্যাটার বা বোলারকে নামাবে। ফলে আলাদা করে অলরাউন্ডার খেলানোর প্রয়োজন থাকবে না। তাই অলরাউন্ডার হওয়ার ঝোঁকও আগামী প্রজন্মের কাছে কমে যাবে বলে মনে করছেন অনেকে।