Sachin Tendulkar

Sachin tendulkar: মাস্টারের ক্লাসে বেহালার খুদে ভক্ত

অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামের নেটে মন দিয়ে প্রথমে শাহিদের ব্যাটিং দেখেন মাস্টার। তার পরে নিজেই দেখিয়ে দেন ব্যাট ধরার ও বল মারার নানা কৌশল। খেলা দেখে দারুণ খুশি হন সচিন। উচ্ছ্বসিত শাহিদের বাবা শেখ শামশের বললেন, ‘‘আমাদের একটাই স্বপ্ন ছিল, সচিন স্যর একবার অন্তত কাছ থেকে শাহিদের খেলা যেন দেখেন। অবশেষে তা পূরণ হয়েছে।’’

Advertisement

শুভজিৎ মজুমদার

কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ মার্চ ২০২২ ০৭:৩৮
Share:

স্বপ্নপূরণ: মুম্বইয়ে পাঁচ বছর বয়সি ভক্ত শাহিদের সঙ্গে সচিন। নিজস্ব চিত্র

কলকাতার তাঁর এক খুদে ভক্তের স্বপ্ন ছিল কিংবদন্তি সচিন তেন্ডুলকরের সঙ্গে দেখা করার। পাঁচ বছরের শেখ শাহিদ নিজেও ক্রিকেট অন্তপ্রাণ। সারা দিনই ব্যাট নিয়ে পড়ে থাকে। অবশেষে স্বপ্নপূরণ শাহিদের। স্বয়ং সচিন নিজের খরচে মুম্বই উড়িয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন খুদে ভক্ত ও তার বাবা-মাকে। নবি মুম্বইয়ের ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামে তেন্ডুলকর মিডলসেক্স গ্লোবাল অ্যাকাডেমির নেটে শাহিদকে অনুশীলন করান তিনি।

Advertisement

বছর আড়াই আগের ঘটনা। ডায়পার পরেই বাড়ির ছাদে ব্যাট হাতে সাবলীল ভাবে খেলে চলেছে আড়াই বছরের শেখ শাহিদ। মুহূর্তের মধ্যেই গণমাধ্যমে আলোড়ন ফেলে দিয়েছিল সেই ভিডিয়ো। বিস্ময় শিশুর প্রতিভায় মুগ্ধ হন বিরাট কোহলি, কেভিন পিটারসেনের মতো তারকারাও। তাকে দেখতে বেহালার মুচিপাড়ায় চলে এসেছিলেন অস্ট্রেলীয় কিংবদন্তি স্টিভ ওয়। কিন্তু শাহিদের বাবা শেখ শামশেরের মন তাতে ভরেনি। তিনি স্বপ্ন দেখতেন সচিনের সামনে ব্যাট করছে ছোট্ট শাহিদ।

অবশেষে প্রতীক্ষার অবসান। গত ২১ ফেব্রুয়ারি ডি ওয়াই পাটিল স্টেডিয়ামের নেটে মন দিয়ে প্রথমে শাহিদের ব্যাটিং দেখেন মাস্টার। তার পরে নিজেই দেখিয়ে দেন ব্যাট ধরার ও বল মারার নানা কৌশল। খেলা দেখে দারুণ খুশি হন সচিন। উচ্ছ্বসিত শাহিদের বাবা শেখ শামশের বললেন, ‘‘আমাদের একটাই স্বপ্ন ছিল, সচিন স্যর একবার অন্তত কাছ থেকে শাহিদের খেলা যেন দেখেন। অবশেষে তা পূরণ হয়েছে।’’

Advertisement

কী ভাবে যোগাযোগ হল মাস্টার ব্লাস্টারের সঙ্গে? শামশের শোনালেন আকর্ষণীয় কাহিনি, ‘‘গণমাধ্যমে সচিন স্যরকে ট্যাগ করে অস্ট্রেলিয়ার ফক্স চ্যানেল শাহিদের ভিডিয়ো পোস্ট করেছিল। এর পরেই ক্রিকেট ঈশ্বরের ম্যানেজার আমাকে ফোন করে বলেন, সচিন স্যর শাহিদের খেলা দেখেছেন। ওকে পাঁচ-সাত দিনের জন্য মুম্বইয়ে ডেকেছেন অনুশীলন করাবেন বলে। আমি যেন নিজের কানকেই বিশ্বাস করতে পারছিলাম না। মনে হচ্ছিল, কেউ হয়তো মজা করছেন।’’

সচিন স্বয়ং অনুশীলন করাতে চান শাহিদকে, শোনার পর থেকে যেন হাওয়ায় ভাসছিলেন শামশের। পাশাপাশি তাঁর উদ্বেগও বাড়ছিল। বেহালার বুড়ো শিবতলার একটি সেলুনের সামান্য কর্মী তিনি। মুম্বই যাতায়াতের খরচ কী ভাবে জোগাড় করবেন, তা ভেবেই রাতের ঘুম উধাও হয়ে গিয়েছিল। বলছিলেন, ‘‘মুম্বই যাওয়ার ক্ষমতাই নেই আমাদের। সচিন স্যরই আমাদের তিন জনের যাতায়াতের জন্য বিমানের টিকিট পাঠান। থাকার ব্যবস্থাও করেন। ২০ ফেব্রুয়ারি আমরা নবি মুম্বই পৌঁছই। পরের দিন মাঠে এসেছিলেন সচিন স্যর।’’ শাহিদকে দেখে কী বলেছিলেন সচিন? আপ্লুত শামশের বললেন, ‘‘সচিন স্যর বারবার বলে দিয়েছেন, ওর উপরে যেন কোনও চাপ না দেওয়া হয়। শাহিদকে মনের আনন্দে ক্রিকেট খেলতে দিতে বলেছেন। আমার ছেলের সঙ্গেও আলাদা ভাবে কথা বলেছেন।নিজের স্বাক্ষর করা ব্যাট উপহার দিয়েছেন। মাথায় হাত রেখে আশীর্বাদও করেন।’’

কী বলেছিলেন ক্রিকেট কিংবদন্তি? বাবার কোলে বসে ছোট্ট শাহিদ বলল, ‘‘সচিন স্যর জিজ্ঞেস করেছিলেন চার না ছয়, কী মারতে ভালবাস তুমি? আমি বলেছিলাম, চার মারতে ভালবাসি। শুনে খুব হেসেছিলেন।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement