বন্দিত: ব্র্যাভোর সঙ্গে ধোনি। শুরু হয়ে গিয়েছে এ বারের প্রস্তুতি। টুইটার
মহেন্দ্র সিংহ ধোনি যে তাঁর বরফ-শীতল মস্তিষ্কের জন্য বিখ্যাত, তা কারও অজানা নয়। এ বার তাঁর এক দীর্ঘ দিনের সতীর্থ ফাঁস করলেন, ধোনি কতটা সহজ-সরল প্রকৃতিরও। আইপিএল নিয়ে জিও সিনেমা-য় একটি বিশেষ অনুষ্ঠানে প্রাক্তন কেকেআর ব্যাটসম্যান রবিন উথাপ্পা বলেছেন, ‘‘ধোনির সহজ-সরল মনোভাব চমকে দেওয়ার মতো। আর সব চেয়ে চমকপ্রদ হচ্ছে, এই ব্যাপারটা কখনও পাল্টায়নি। যখন প্রথম এর সঙ্গে দেখা হয়েছিল, তখন থেকে আজও একই রকম থেকে গিয়েছে।’’ উথাপ্পা যোগ করছেন, ‘‘ধোনি হচ্ছে পৃথিবীর সব চেয়ে সরল ব্যক্তি। ওর মধ্যে কোনও জটিলতা নেই।’’
২০০৭-এ তরুণ ধোনির অধীনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপজয়ী ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন উথাপ্পা। তিনি বরাবরই ধোনির খুব ঘনিষ্ঠ বলেও পরিচিত। উথাপ্পা বলেছেন, ‘‘আমরা সব সময় এক সঙ্গে খেতাম। আমাদের একটা দল ছিল। সুরেশ রায়না, ইরফান পাঠান, আর পি সিংহ, পীযূষ চাওলা, ধোনি আর আমি।’’ কী খেতে ভালবাসেন ধোনি? তা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে উথাপ্পার বর্ণনা, ‘‘আমরা বেশির ভাগ সময় ডাল মাখানি, বাটার চিকেন, জিরে আলু, কপি আর রুটি। কিন্তু এম এস খাওয়াদাওয়ার ব্যাপারে খুব কড়া। ও বাটার চিকেন খেলেও চিকেন খেত না। আবার যখন চিকেন খেত, তখন রুটি খেত না। অদ্ভুত অদ্ভুত সব ব্যাপারস্যাপার ছিল ওর খাবার নিয়ে।’’
ভারতের একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে ধোনি দু’টি বিশ্বকাপ জিতেছেন। একটি টি-টোয়েন্টি, একটি পঞ্চাশ ওভারের। এ ছাড়াও জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। চেন্নাই সুপার কিংসের অধিনায়ক হিসেবে আইপিএল জিতেছেন চার বার, জিতেছেন চ্যাম্পিয়ন্স লিগও। উথাপ্পা সব দলেই ধোনির সঙ্গে থেকেছেন। কেন ধোনি এত সফল অধিনায়ক? উথাপ্পার কথায়, ‘‘সহজাত দক্ষতায় খুব শক্তিশালী এম এস। আর নিজে যে সিদ্ধান্ত নেয়, সেটার প্রতি আস্থা রাখে। সেই কারণেই এত সফল। দল হারুক বা জিতুক, সব কিছুর জন্য দায়িত্ব নিতে পিছপা হয় না।’’ ভুল করলে ধোনির মধ্যে কী রকম প্রতিক্রিয়া হয়, সে কথাও জানিয়েছেন উথাপ্পা। বলেছেন, ‘‘বাজে সিদ্ধান্ত নিলে অনেক দিন ঘুমোতেই পারে না এম এস। কিন্তু যদি অন্যদের সহজায় প্রবণতায় সাফল্যের ভাগ চল্লিশ শতাংশ হয়, তা হলে ধোনির সাফল্যের হার ৮০ শতাংশ।’’
২০২১০-এ ধোনির অধিনায়কত্বেই শেষ বার আইপিএল চ্যাম্পিয়ন হয় চেন্নাই সুপার কিংস। সেই দলে ছিলেন উথাপ্পা। প্রথম কোয়ালিফায়ারে এবং ফাইনালে যথাক্রমে ৬৩ এবং ৩১ করেন তিনি। সেই সময় একটা সমস্যায় পড়েছিলেন তিনি। দীর্ঘ দিন এক সঙ্গে খেললেও বুঝে উঠতে পারছিলেন না, ধোনিকে কী ভাবে সম্বোধন করতে পারেন। দেখেছিলেন, অনেকেই ‘মাহি ভাই’ বলে ডাকছে। তাই সরাসরি ধোনিকে গিয়েই জিজ্ঞেস করেন তিনি, ‘‘আমি কি মাহি ভাই বলে তোমাকে ডাকতে পারি?’’ দ্রুতই তাঁকে থামিয়ে দিয়ে ধোনি বলেন, ‘‘আমাকে যে কোনও নামেই ডাকতে পারো তুমি। শুধু মাহি বলতে পারো। কিছু এসে-যায় না এ সবে।’’
উথাপ্পা সে দিন আরও নিশ্চিত হয়ে যান, তাঁর দেখা বিশ্বের সব চেয়ে সহজ-সরল মানুষটি কে!
আইপিএলেও চমক দিয়ে অবসর নেবেন ধোনি, ধারণা ভাজ্জির: ২০২০ সালের ১৫-ই অগষ্ট সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন তিনি। আইপিএল থেকে অবসর নিলেও তেমনই আকস্মিক ভাবেই সিদ্ধান্ত নেবেন মহেন্দ্র সিংহ ধোনি, এমনই মনে করেন ভারতের প্রাক্তন অফস্পিনার হরভজন সিংহ। ধোনির নেতৃত্বে এখনও পর্যন্ত চার বার কাপ ঘরে তুলেছে চেন্নাই সুপার কিংস। ইউটিউব চ্যানেলে তিনি বলেন, “ধোনি সব সময় চায় চেন্নাইয়ে ভক্তদের সামনে নিজের বর্ণময় ক্রিকেটজীবনে ইতি টানতে। হলুদ আর্মির ভক্তেরা ওর খুব কাছের।”
২০১৮ সালে চেন্নাইয়ে ধোনির অধিনায়কত্বে খেলেছেন তিনি। সেই বছর ধোনির নেতৃত্বেই তৃতীয় বারের জন্য ট্রফি জেতে চেন্নাই। হরভজনের সংযোজন, “এ বছরের আইপিএলের জন্যও ধোনি খুবই পরিশ্রম করছে। চেন্নাইয়ে অনেক আগে পৌঁছে গিয়েছে। প্রত্যেক দিন দু’ঘন্টা করে নেটে ব্যাট করছে। এটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে কাপ জিততে কতটা মরিয়া ও।” ৩১ মার্চ সিএসকে নামছে হার্দিক পাণ্ড্যের গুজরাত টাইটান্সের বিরুদ্ধে।