সেই ছয়ের পরে রিঙ্কু। ছবি: পিটিআই।
টি-টোয়েন্টি দলে এখন প্রায় নিয়মিত সদস্য হয়ে উঠেছেন তিনি। আয়ারল্যান্ড সিরিজ়, এশিয়ান গেমসের পর অস্ট্রেলিয়া সিরিজ়েও সুযোগ পেয়েছেন। প্রথম ম্যাচেই দলকে জিতিয়েছেন। শেষ বলে ছক্কা মেরেছেন। কিন্তু নো বল হওয়ায় রান পাননি। সে কারণে কি মনখারাপ রিঙ্কুর? বৃহস্পতিবার ভারতকে জেতানোর পরে সেই প্রশ্নের উত্তর দিলেন কেকেআরের ব্যাটার।
শন অ্যাবটের শেষ বলে রিঙ্কু ছয় মারলেও সেটি নো বল হয়। ফলে ওই ছয় রান রিঙ্কুর রানের সঙ্গে যোগ হয়নি। সেই নিয়ে প্রশ্ন করা হলে রিঙ্কুর উত্তর, “কিছু না ভেবেই ছক্কা মেরেছিলাম। সঙ্গে সঙ্গেই ভেবেছিলাম ম্যাচ জিতে গিয়েছি। পরে দেখলাম ওটা নো বল হয়ে গিয়েছে। তাই রানটা পাইনি। তবে ম্যাচটা জিততে পেরেছি এটা ভেবেই ভাল লাগছে। আর কিছু চাই না।”
রিঙ্কুকে ধরে নিয়ে পরের বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পরিকল্পনা শুরু হয়ে গিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকেই। বিশ্বকাপ নিয়ে ভিভিএস লক্ষ্মণ বা হার্দিক পাণ্ড্যের সঙ্গে কোনও কথা হয়েছে কি না, সে প্রসঙ্গে রিঙ্কু বলেছেন, “আমি ভবিষ্যতের দিকে তাকাই না। সব সময় বর্তমানে বাঁচতে ভালবাসি। দূরের দিকে তাকিয়ে মনঃসংযোগে ব্যাঘাত ঘটাতে চাই না। তাই ওই বিষয়ে কোচ বা অধিনায়কের সঙ্গে কথা হয়নি। যখন যা সুযোগ আসবে সেটাই কাজে লাগাতে চাই।”
যখন নেমেছিলেন রিঙ্কু, তখন কাজটা বেশ কঠিন ছিল। একটি ওভারে বেশ কয়েকটি বলে রান হয়নি। চাপের মুখেও মাথা ঠান্ডা রেখেছিলেন রিঙ্কু। বলেছেন, “যে পজিশনে নেমেছিলাম ওই পজিশনেই বরাবর খেলি। তাই চাপ নেওয়া অভ্যেস হয়ে গিয়েছে। গত বারের আইপিএলে আপনারা দেখেছেন ওই জায়গাতেই নেমেছি এবং ম্যাচটা শেষ ওভার পর্যন্ত নিয়ে গিয়েছি। আমি সব সময় নিজের প্রতি বিশ্বাস রাখি। মনে করতে থাকি যে শেষ এক-দু’ওভারে কাজ হয়ে যাবে।” রিঙ্কুর সংযোজন, “এক বারও মনে হয়নি ম্যাচ হাত থেকে বেরিয়ে গিয়েছে। নিজের উপরে ভরসা ছিল। এর আগে অনেক বার এই কাজ করেছি।”
রিঙ্কুর কথায় উঠে এসেছে তাঁর কঠিন ক্রিকেটযাত্রার কথাও। তিনি বলেছেন, “সত্যি বলতে, আমার এত দূর আসার রাস্তাটা বেশ কঠিন ছিল। ২০১৮-তে প্রথম বার কেকেআরের হয়ে খেলার সময় খুব বেশি সময়টা কাজে লাগাতে পারিনি। মাঝেমাঝে মনে হত যে অন্য কোনও দল হলে আমাকে রাখতই না। কেকেআর বরাবর আমার পাশে থেকেছে। অভিষেক স্যরের কথা বলে অনেক পরিশ্রম করেছি গত পাঁচ-ছ’বছর। সেটাই এখন কাজে লাগছে।”
ইডেনে আইপিএলের সময় ‘রিঙ্কু, রিঙ্কু’ আওয়াজ উঠত। এখন দেশের খেলাতেও সেই আওয়াজ শোনা যাচ্ছে। কেকেআরের ব্যাটার তা শুনে আপ্লুত। বললেন, “গুজরাতের বিরুদ্ধে ওই পাঁচটা ছক্কার পরে আমার জীবন পুরোপুরি বদলে গিয়েছে। এখন মনে হয় অনেক বেশি লোক আমাকে চেনে। অনেকেই আশা করে যে আমি ব্যাট করলে দলকে জেতাতে পারব। খুব ভাল লাগে ওই সময়টায়।”