উল্লাস: মিলারকে ফিরিয়ে বিরাটের সঙ্গে জাডেজা। ছবি: সুদীপ্ত ভৌমিক।
ম্যাচের আগের দিন ভারতীয় কোচ রাহুল দ্রাবিড় এসে বলে গিয়েছিলেন, রবীন্দ্র জাডেজা যা খেলছেন, সেই অনুপাতে প্রশংসিত হচ্ছেন না।
এই কথাটা কি আপনার কানে গিয়েছিল? নিজেকে কি বলেছিলেন, এই ম্যাচে ব্যাটে-বলে দেখিয়ে দিতে হবে কী করতে পারি? ১৫ বলে অপরাজিত ২৯ রান এবং তার পরে ৩৩ রান দিয়ে পাঁচ উইকেট। দক্ষিণ আফ্রিকার শক্তিশালী ব্যাটিংকে একাই শেষ করে দিয়ে আসা জাডেজা সাংবাদিকের প্রশ্নটা শুনে হেসে ফেললেন। তার পরে বললেন, ‘‘না, না। আমি ও রকম কিছু কথা শুনিনি। শেষ কয়েকটা ম্যাচ ধরে দলের কাজে আসতে পেরে ভাল লাগছে। ব্যাটে-বলে ছন্দে আছি। গুরুত্বপূর্ণ একটা প্রতিযোগিতায় শক্তিশালী দলগুলোর বিরুদ্ধে অবদান রাখতে পেরে আমি খুশি।’’ যোগ করেন, ‘‘এর পরে আরও গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচ আসছে। এই পারফরম্যান্সের কারণে সেখানে আরও আত্মবিশ্বাসী হয়ে নামতে পারব।’’
এই বিশ্বকাপে এখনও পর্যন্ত কোনও কঠিন পরীক্ষার মুখে পড়তে হয়নি ভারতকে। নক আউট ম্যাচের আগে কি এক-আধটা কঠিন লড়াই হলে ভাল হত না? প্রশ্নকে আমল না দিয়ে জাডেজার সাফ জবাব, ‘‘কঠিন লড়াই কেন হবে? হওয়া উচিতও নয়। তা হলেই তো উল্টো দিকের দলটা ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে আতঙ্কিত হয়ে পড়বে। আর ঠিক সেটাই হওয়া দরকার। ওরা ভাববে, আমরা ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে নামছি। ওরা তো ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিংয়ে দারুণ করছে।’’ আত্মবিশ্বাসী জাডেজা এও বলে দেন, ‘‘সামনের ম্যাচগুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। তাই চাইব, ভারতের বিরুদ্ধে খেলতে নেমে যেন বিপক্ষ দলগুলো চাপে পড়ে যায়।’’
আপনি যদি অধিনায়ক হতেন আর হাতে জাডেজার মতো এক জন অলরাউন্ডার থাকত, তা হলে কতটা খুশি হতেন? হাসিমুখে জাডেজা বলেন, ‘‘আমি তো প্রথম ম্যাচ থেকেই ক্যাপ্টেনের মতো ভাবি। হ্যাঁ, ক্যাপ্টেন হইনি, সেটা আলাদা ব্যাপার।’’ সাংবাদিকদের হাসি থামার জন্য সামান্য সময় অপেক্ষা করে বলতে থাকেন, ‘‘অলরাউন্ডারের ভূমিকা এমনই হয়। কঠিন পরিস্থিতিতে ৩০-৪০ রান করা আর যখন বিপক্ষ ব্যাটসম্যানরা জুটি গড়ছে, তখন কয়েকটা উইকেট তোলা। যাতে খেলা ঘুরে যায়। সেই চেষ্টাই করি।’’
অপরাজিত থেকে কি বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখা যায়? জাডেজার জবাব, ‘‘আমরা একটা করে ম্যাচ দেখি। এইটুকু বলতে পারি, এই ছন্দটা সেমিফাইনাল আর তার পরে ফাইনালেও ধরে রাখতে চাই।’’
ভারতীয় পেসাররা শুরুতেই উইকেট তুলে নেওয়ায় কতটা সহজ হচ্ছে স্পিনারদের কাজ? জাডেজার জবাব, ‘‘অবশ্যই সুবিধে হয়। তখন ব্যাটসম্যানরা এসে শুরুতেই শট খেলতে পারে না। বিশেষ করে উইকেট যদি এই রকম মন্থর হয়। তখন স্পিনাররা আরও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বল করতে পারে।’’