দুরন্ত খেললেন কুশাগ্র। ছবি পিটিআই
এ বারের রঞ্জি ট্রফিতে একটিই প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল ম্যাচ হচ্ছে। ইডেন গার্ডেন্সের সেই ম্যাচে নাগাল্যান্ডের বিরুদ্ধে রানের বন্যা বইয়ে দিল ঝাড়খন্ড। প্রথম ইনিংসে ৮৮০ রান তুলেছে তারা। ভেঙে দিয়েছে একাধিক রেকর্ড।
কুমার কুশাগ্রর দ্বিশতরান এবং বিরাট সিংহ ও শাহবাজ নাদিমের শতরানের জেরে এই বিপুল রান করেছে ঝাড়খন্ড। কুশাগ্র ২৬৬ রান করেছেন। বিরাট এবং নাদিম করেন যথাক্রমে ১০৭ এবং ১৭৭ রান। ঝাড়খন্ডের এই রান রঞ্জির ইতিহাসে চতুর্থ সর্বোচ্চ। ১৯৯৩-৯৪ মরসুমে অন্ধ্রপ্রদেশের বিরুদ্ধে ৯৪৪ রান তুলেছিল হায়দরাবাদ। সেটাই এখনও পর্যন্ত সর্বোচ্চ। এরপর ৯১২ রান তুলেছে দু’টি দল। ১৯৮৮-৮৯ মরসুমে গোয়ার বিরুদ্ধে তামিলনাড়ু এবং ১৯৪৫-৪৬ মরসুমে কর্ণাটকের বিরুদ্ধে মধ্যপ্রদেশ এই রান তুলেছিল। তার পরেই রয়েছে ঝাড়খন্ড। তারা মুম্বইয়ের ৮৫৫/৬ রান টপকে গিয়েছে।
১৭ বছর ১৪৪ দিন বয়সী কুশাগ্র নিজেও নজির গড়েছেন। ২০২০-তে ভারতের অনূর্ধ্ব-১৯ দলের সদস্য ছিলেন তিনি। নাগাল্যান্ডের বিরুদ্ধে তাঁর ইনিংস শেষই হচ্ছিল না। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে তরুণতম ক্রিকেটার হিসেবে ২৫০ রান করলেন তিনি। ভেঙে দিলেন জাভেদ মিয়াঁদাদের রেকর্ড। ম্যাচের প্রথম দিনেই দ্বিশতরান করেছিলেন তিনি। ইমলিওয়াতি লেমতুরের বলে বাউন্ডারি মেরে দ্বিশতরান পূর্ণ করেন।
বাবাকে দেখেই ক্রিকেট শেখা শুরু করেছিলেন কুশাগ্র। তাঁর বাবা শশীকান্ত ক্রিকেট ভালবাসেন, কিন্তু জীবনে কোনও দিন পেশাদার ক্রিকেটার হতে পারেননি। চেয়েছিলেন ছেলে সেই স্বপ্নপূরণ করুক। নিজে ক্রিকেট সম্পর্কে শিখতে এবং ছেলেকে শেখাতে নিজের বাড়ি ক্রিকেটের বইয়ে ভরিয়ে ফেলেন। বিশ্বের তাবড় ক্রিকেট লিখিয়েদের লেখা রয়েছে তাঁর বাড়িতে। নেটে ক্রিকেটারদের দেখতেন, তার পর বাড়ি এসে বই পড়ে শেখার চেষ্টা করতেন কী বলা আছে তাতে। এই ভাবেই তিনি ৬০-৭০টি শটের একটি তালিকা বানান এবং ছেলেকে শেখাতে শুরু করেন। পা কোথায় থাকবে, গ্রিপ কেমন হবে, চোখ কোথায় থাকবে সেটা শিখিয়ে দিতেন। বাবাই এখনও কুশাগ্রর কোচ।
শুধু তাই নয়, দশম উইকেটে ১৯১ রান যোগ করেন নাদিম এবং রাহুল শুক্ল। ঝাড়খন্ডের ইনিংসে সেটাই সর্বোচ্চ রানের জুটি। এ ছাড়া ঝাড়খন্ডের হয়ে উল্লেখযোগ্য রান করেছেন কুমার সূরজ (৬৬), অনুকূল রায় (৫৯) এবং রাহুল (৮৫)। বিপুল রান তাড়া করতে নেমে শুরু থেকেই বিপদে পড়েছে নাগাল্যান্ড। তৃতীয় দিনের শেষে ৪ উইকেট হারিয়ে ১৩০ রান তুলেছে তারা। প্রথম ইনিংসে লিড কার্যত নিশ্চিত ঝাড়খন্ডের। সেই সুবাদে কোয়ার্টার ফাইনালেও উঠে যেতে পারে তারা।