চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের মধ্যপ্রদেশকে নিয়ে অঙ্ক কষা শুরু বাংলার। —ফাইল চিত্র
সেমিফাইনালে মধ্যপ্রদেশ। সৌরাশিস লাহিড়ী যদিও বলবেন, চন্দ্রকান্ত পণ্ডিতের দল। পঞ্জাবকে কোয়ার্টার ফাইনালে হারিয়ে যে দল কোনও উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেনি। দলে নেই কোনও তারকা ক্রিকেটার। শুধু আছেন এক লড়াকু মানসিকতার কোচ চন্দ্রকান্ত। যিনি শেষ বল পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাওয়ায় বিশ্বাস করেন।
ভারতীয় দলে থাকায় মধ্যপ্রদেশ দলে নেই বেঙ্কটেশ আয়ার এবং আবেশ খান। রয়েছেন ইডেনে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের হয়ে শতরান করা রজত পাটীদার। রয়েছেন মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের হয়ে এ বারের আইপিএলে নজর কাড়া বাঁহাতি স্পিনার কুমার কার্তিকেয়। রয়েছেন রাজস্থান রয়্যালসের হয়ে এই আইপিএলে আট উইকেট নেওয়া পেসার কুলদীপ সেন। সেই সঙ্গে এক ঝাঁক অপরিচিত মুখ। যাঁরা কোচ চন্দ্রকান্তের কঠোর নিয়মশৃঙ্খলায় থেকে লড়াকু হয়ে উঠছেন।
পঞ্জাবের বিরুদ্ধে কুলদীপকে দলে পায়নি মধ্যপ্রদেশ। তাতেও শুভমন গিল, অভিষেক শর্মা, মনদীপ সিংহের পঞ্জাবকে প্রথম ইনিংসে ২১৯ রানে আটকে দেন পুনিত দাতেরা। ব্যাট করতে নেমে শুভম শর্মার শতরান এবং রজতের ৮৫ রানের সুবাদে ৩৯৭ রান তোলে মধ্যপ্রদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসে পঞ্জাব শেষ মাত্র ২০৩ রানে। কার্তিকেয় একাই নেন ছ’উইকেট। শুভমনরা কোনও প্রতিরোধ গড়ে তুলতে পারেননি। জয়ের জন্য শেষ ইনিংসে প্রয়োজন ছিল মাত্র ২৬ রান। সেই ইনিংস খেলতে নামার আগে চন্দ্রকান্ত বলেছিলেন, “সহজ ভাবে নিও না। ক্রিকেটে যে কোনও কিছু হতে পারে।”
ইডেনে লখনউ সুপার জায়ান্টসের বিরুদ্ধে শতরান করেছিলেন রজত। এ বারের আইপিএলে তাঁর সংগ্রহ আট ম্যাচে ৩৩৩ রান। ছন্দে রয়েছেন এই ব্যাটার। সাদা বলের খেলায় যে ছন্দ দেখিয়েছেন, রঞ্জির কোয়ার্টার ফাইনালে লাল বলের খেলাতেও সেটা ধরে রাখতে পেরেছেন ২৯ বছরের রজত। ইডেনে শতরানের পর বিরাট কোহলী যাঁর সাক্ষাৎকার নিয়েছিলেন, সেই রজত বাংলার চিন্তার কারণ হয়ে উঠতে পারেন। বাংলা ভাবছে স্পিনার কার্তিকেয়কে নিয়েও পঞ্জাবের বিরুদ্ধে ছ’টি উইকেট নেন তিনি। ১০টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে ইতিমধ্যেই ৪২টি উইকেট নিয়েছেন কার্তিকেয়। বাংলার অভিজ্ঞ ব্যাটাররা তাঁকে নিয়ে যে আলাদা পরিকল্পনা করবেন তা বলাই যায়। কুলদীপের চোট রয়েছে। তিনি পঞ্জাবের বিরুদ্ধে খেলেননি। বাংলার বিরুদ্ধে ১৪ জুন সেমিফাইনালে নামার আগে তিনি সুস্থ হয়ে উঠবেন বলেই মনে করা হচ্ছে।
গ্রুপ পর্ব এবং কোয়ার্টার ফাইনাল মিলিয়ে চারটি ম্যাচ খেলেছে মধ্যপ্রদেশ। এই চার ম্যাচ মিলিয়ে তাদের তিন ব্যাটার চারশোর উপর রান করেছেন। যশ দুবে (৪৫৯), রজত পাটীদার (৪২০) এবং শুভম শর্মা (৪১৯) ধারাবাহিক ভাবে রান করছেন। ১৮ বছরের অক্ষত রঘুবংশী তিন ম্যাচে ২১৯ রান করেছেন। বল হাতে কার্তিকেয় চার ম্যাচে ১৯টি উইকেট নিয়েছেন। তাঁর বোলিং নিয়ে খুশি কোচও। পেসার গৌরব যাদব নিয়েছেন ১৩টি উইকেট। অলরাউন্ডার অনুভব অগ্রবাল নিয়েছেন ১২টি উইকেট। তাঁরা তিনটি করে ম্যাচ খেলেছেন।
শেষ পর্যন্ত লড়বে মধ্যপ্রদেশ। জানে বাংলা দল। সহকারী কোচ সৌরাশিস বললেন, “মধ্যপ্রদেশকে হাল্কা ভাবে নেওয়ার প্রশ্নই নেই। চন্দ্রকান্তের দল মানেই শেষ বল পর্যন্ত লড়াই করবে। কোথাও ঢিলে দেওয়ার জায়গা নেই। ফাঁক পেলেই ঘাড়ে চেপে বসবে ওরা।” কোচ অরুণ লাল যদিও মধ্যপ্রদেশকে নিয়ে আলাদা ভাবে ভাবতে রাজি নন। তাঁর কাছে সেমিফাইনালে ওঠা সব দলই সমান। মনোজ তিওয়ারি বললেন, “একটা দল সেমিফাইনালে খেলছে মানে, তারা ভাল খেলেই এসেছে। মধ্যপ্রদেশকে সহজ ভাবে নেওয়ার কোনও প্রশ্নই নেই। লড়াই করতে হবে। সব সেশন সমান যাবে না। তা বলে হাল ছেড়ে দিলে চলবে না। পাঁচ দিনের খেলা, ম্যাচের দিন যে ভাল খেলবে সেই জিতবে।”
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।