—ফাইল চিত্র
বাংলার হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখতেন ছোট বেলায়। সেই স্বপ্ন সত্যি হয়েছে। ১৮ বছর ধরে বাংলার হয়ে ক্রিকেট খেলছেন। বাংলাকে জেতাচ্ছেন। ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী হওয়ার পরেও শুধু বাংলার জার্সি, টুপি পরার আনন্দেই খেলে চলেছেন মনোজ তিওয়ারি। এখন স্বপ্ন রঞ্জি ট্রফি জেতার। তার জন্য রান না পেলে একা একা অনুশীলন করে চলেন ৩৬ বছর বয়সেও।
ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে শুক্রবার শতরান করলেন মনোজ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে এটা তাঁর ২৮তম শতরান। বাংলার কোচ অরুণ লাল মুগ্ধ মনোজের ব্যাটিংয়ে। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বললেন, “মনোজ তিন বছর ধরে নিয়মিত ক্রিকেট খেলতে পারেনি। হাঁটুর চোটের জন্য ফিটনেস নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। সত্যি বলতে আমি খুব আশাবাদী ছিলাম না মনোজকে নিয়ে। কিন্তু ওর পরিশ্রম, একাগ্রতা, রানের খিদে আমাকে অবাক করে দিয়েছে। বেঙ্গালুরুতে অনুশীলন ম্যাচে যখন রান পেল না, তখন কিছু বোলারকে নিয়ে একা একা নেটে অনুশীলন করত। খেলা চলছে মাঠে, কিন্তু মনোজ অনুশীলন করে যাচ্ছে। বাংলার প্রথম পাঁচ সেরা ক্রিকেটারের মধ্যে একজন মনোজ। ও রান পেয়ে যাওয়ায় দলের জন্য খুব ভাল হল।”
শতরানের পর বাংলার সাজঘরের দিকে হাতে ভালবাসার চিহ্ন দেখিয়েছিলেন মনোজ। আনন্দবাজার অনলাইনকে বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক বললেন, “বাংলাকে ভালবাসি, সেটাই বোঝাতে চেয়েছিলাম। দল সেমিফাইনালে উঠেছে আর আমি তাতে অবদান রাখতে পেরেছি, এর থেকে আনন্দের আর কী হতে পারে।” ভারতীয় দলের হয়ে শতরান করার পর বাদ পড়তে হয়েছিল মনোজকে। তার পরেও বাংলার হয়ে খেলা ছাড়েননি। মনের জোর যে তাঁর কতটা, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন বাংলার হয়ে খেলে। ১৮ বছর ধরে বাংলার হয়ে খেলার পরেও মনোজ বললেন, “বাংলার টুপি, জার্সি আমাকে শক্তি দেয়। কত কোটি কোটি ছেলে ক্রিকেট খেলে। বাংলার হয়ে খেলার স্বপ্ন দেখে। সবাই সুযোগ পায় না। আমি পেয়েছি। দলের সম্মান রক্ষা করা আমার দায়িত্ব।”
এক সময় বাংলাকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। অভিজ্ঞ ক্রিকেটার জানেন তাঁর মতো সিনিয়র ক্রিকেটার ভাল খেললে, তরুণরাও অনুপ্রাণিত হন। মনোজ বললেন, “সিনিয়র ক্রিকেটাররা রান করতে না পারলে জুনিয়রদের মন ভেঙে যায়। ওরা শেখার চেষ্টা করে কোয়ার্টার ফাইনাল, সেমিফাইনালের মতো গুরুত্বপূর্ণ সময় সিনিয়ররা কী ভাবে খেলছে। এগুলো মাথায় রেখে খেলার চেষ্টা করি। তখনই দায়িত্ব বেড়ে যায়। খিদেটা থাকতে হবে। খিদে না থাকলে ফল পাওয়া যায় না। পরিশ্রম করতে হবে, না হলে কিছু পাওয়া যাবে না।”
মনোজ রান পাওয়ায় বাংলা দলের মিডল অর্ডার আরও শক্তিশালী হয়ে উঠল বলেই মনে করছেন অরুণ লাল। সেমিফাইনালের আগে যা দলকে আরও আত্মবিশ্বাস দেবে।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।