ফাইল চিত্র।
টিম বাসে যেতে যেতে ১৪ বছর আগের এক ঘটনা মনে পড়ে গিয়েছিল রাহুল দ্রাবিড় এবং রোহিত শর্মার। সেই ২০০৭ সাল। যখন আয়ারল্যান্ডে দ্রাবিড়ের নেতৃত্বে ওয়ান ডে ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তরুণ রোহিত শর্মার। আবার ভারতীয় ক্রিকেটে ফিরে এসেছে সেই জুটি। এ বার কোচ-অধিনায়ক হয়ে।
মঙ্গলবার ভিডিয়ো কলে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে রবি শাস্ত্রীর জায়গায় প্রধান কোচ হয়ে আসা দ্রাবিড়ের স্মৃতিচারণ, ‘‘গত কালই আমি আর রোহিত ব্যাপারটা নিয়ে আলোচনা করছিলাম। কী ভাবে সময় কেটে যায়!’’ মনে করিয়ে দেন, ‘‘ওই আয়ারল্যান্ড সিরিজ়ের আগেও ২০০৭ সালের চ্যালেঞ্জার্স ট্রফিতে রোহিতকে প্রথম দেখি। তখনই বুঝেছিলাম, ও বিশেষ প্রতিভাবান। তবে আমরা যে কোনও দিন একসঙ্গে কাজ করব, স্বপ্নেও ভাবিনি।’’ রোহিতের কথায়, ‘‘আয়ারল্যান্ড সফরে রাহুল ভাই ড্রেসিংরুমে এসে বলেছিল, তুমি খেলছ। আমি তো তখন উড়ছি। সেই স্মৃতি ভুলব না।’’
ভবিষ্যৎ নিয়েও কথা বলেছেন দ্রাবিড়। কোচ হিসেবে নিজের দর্শনও পরিষ্কার করে দিয়েছেন— ছেলেদের কাছ থেকে সেরা খেলাটা বার করে আনা। সেটা করতে গিয়ে অবশ্যই ক্রিকেটারদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের উপরে জোর দেবেন। লক্ষ্য রাখবেন, যাতে ক্রিকেটারদের পরিশ্রমের মাত্রা ঠিক থাকে। বলছেন, ‘‘এখনকার পরিস্থিতিতে এটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ফুটবলেই দেখুন না। পর পর খেলা থাকলে অনেক তারকাকেই বিশ্রাম দেওয়া হয়। আমরা যদি সারা বছর খেলি, তা হলে ক্রিকেটারদের বিশ্রাম দিতেই হবে।’’
দ্রাবিড় পরিষ্কার করে দিয়েছেন, ক্রিকেটারদের স্বার্থই সবার আগে। তাঁর কথায়, ‘‘ক্রিকেটারদের মানসিক এবং শারীরিক সুস্থতা সবার আগে প্রাধান্য পাবে। প্রয়োজনে বিশ্রাম দিতে হবে। তবে আমরা জেতার জন্যই দল করব। দুটো জিনিসের মধ্যে ভারসাম্যটা বজায় রাখতে হবে।’’ পাশ থেকে রোহিত বলে ওঠেন, ‘‘খেলোয়াড়রা তো আর মেশিন নয় যে, রোজ মাঠে আসবে আর খেলে দেবে। বিশ্রাম নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ।’’
অনূর্ধ্ব-১৯, ভারতীয় ‘এ’ দলে কোচিং করানোর পরে এ বার জাতীয় দলে। কোচিং মন্ত্রে কি পরিবর্তন হবে? দ্রাবিড়ের জবাব, ‘‘কিছু ব্যাপার এক থাকে, আবার কিছু বদলে নিতে হয় প্রয়োজন অনুযায়ী। অনূর্ধ্ব-১৯ পর্যায়ে যে ভাবে কাজ করেছি, এখানেও সে ভাবে করব, এটা বলা ঠিক নয়।’’ যোগ করেন, ‘‘ভবিষ্যতের দল গড়ার পাশাপাশি ম্যাচ জেতার দিকেও আমাদের নজর থাকবে।’’
দীর্ঘ সময় জৈব বলয়ে থাকার ধকল এড়াতে কি বিভিন্ন ফর্ম্যাটে বিভিন্ন দল গড়ার কথা ভাবছেন? কোচের জবাব, ‘‘একদমই নয়। তবে সব ক্রিকেটারই তো আর সব ফর্ম্যাটে খেলবে না।’’ বর্তমান পরিস্থিতিতে চ্যালেঞ্জটা যে কঠিন, মানছেন দ্রাবিড়। বলছেন, ‘‘আমি ক্রিকেটারদের সঙ্গে কথা বলব। দেখতে হবে, কী করলে তরতাজা অবস্থায় ওদের খেলানো যায়। সবাইকে সুস্থ অবস্থায় পেলে সব ফর্ম্যাটেই ভারত কিন্তু দারুণ একটা দল।’’ কোনও একটা ফর্ম্যাটকে তিনি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। বলছেন, ‘‘সামনে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ, ৫০ ওভারের বিশ্বকাপ, বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ। সব ফর্ম্যাটকেই তাই গুরুত্ব দিচ্ছি।’’
বিশ্বকাপ শেষ হয়ে যাওয়ার পরে আলাদা করে রোহিত, বিরাট কোহালিদের সঙ্গে কথা বলেছেন দ্রাবিড়। এ বার তিনি শিখতে ও শেখাতে চান।