রোহিত শর্মা (বাঁ দিকে) ও বাবর আজ়ম। —ফাইল চিত্র
আট দিন আগে যখন দু’দল মুখোমুখি হয়েছিল তখন পরিস্থিতি অন্য রকম ছিল। তার আগের ম্যাচেই বড় জয় পেয়ে আত্মবিশ্বাসী ছিল পাকিস্তান। অন্য দিকে সেটাই ছিল এশিয়া কাপে ভারতের প্রথম ম্যাচ। সেই ম্যাচে শুরুতেই সমস্যায় পড়েছিল ভারত। পাকিস্তানের পেসারদের সামনে ভেঙে পড়েছিল দলের টপ অর্ডার। এ বার পরিস্থিতি আলাদা। দু’দলই সুপার ফোরে উঠেছে। রবিবার ভারত ও পাকিস্তানের সামনে লক্ষ্য থাকবে ফাইনালের পথে এক পা বাড়ানো। আর সেই ম্যাচে রোহিত শর্মারা চাইবেন আট দিন আগের দুঃস্বপ্ন ভুলে নামতে। অন্য দিকে বাবর আজ়মদের লক্ষ্য থাকবে এশিয়া কাপে নিজেদের ছন্দ ধরে রাখা।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে গত কয়েক বছরে বার বার সমস্যায় পড়েছে ভারতের টপ অর্ডার। বাঁ হাতি পেসারদের সামনে নড়বড়ে দেখিয়েছে রোহিত, বিরাটদের। মহম্মদ আমির থেকে পাকিস্তানের বাঁ হাতি বোলিংয়ের ব্যাটন এখন শাহিন শাহ আফ্রিদির হাতে। তিনি নতুন বলে কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারেন তা আগের ভারত-পাক ম্যাচেই দেখিয়েছেন। চার উইকেট নিয়েছেন। রোহিত ও বিরাটকে আউট করে ভারতকে সব থেকে বড় ধাক্কা দিয়েছেন। ভারতীয় ব্যাটারদের দেখে মনে হয়েছে শাহিনের সামনে ভয়ে ভয়ে খেলছেন। বাঁ হাতি পেসারের সমস্যা কাটিয়ে উঠতে হবে রোহিতদের। নইলে বিশ্বকাপে সব প্রতিপক্ষই ভারতের সামনে বল হাতে দাপট দেখানোর একটি সহজ উপায় পেয়ে যাবে। তা হল বাঁ হাতি পেসার লেলিয়ে দেওয়া।
তবে শুধু শাহিন নয়, হ্যারিস রউফ ও নাসিম শাহও ভয়ঙ্কর। পাকিস্তানের এই তিন পেসার আগের ম্যাচে ভারতের ১০টি উইকেটই নিয়েছেন। রউফের গতি ও নাসিমের লাইন লেংথেরও মোকাবিলা করতে হবে ভারতীয় ব্যাটারদের। এক বার পেসারদের মোকাবিলা করতে পারলে রান করাটা সহজ হবে ভারতের। কারণ, পাকিস্তানের দুর্বল জায়গা তাদের স্পিন বোলিং। তাই মাঝের ওভারে রান করতে ততটা সমস্যা না-ও হতে পারে। তবে পেসারদের সামনে আক্রমণাত্মক ক্রিকেট খেলতে হবে ভারতীয় ব্যাটারদের। নইলে আগের ম্যাচের ছবি আরও এক বার দেখা যেতে পারে।
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আরও দু’টি সমস্যা সামলে খেলতে হবে ভারতকে। নেপালের বিরুদ্ধেও নিজেদের সেরা বোলিং করতে পারেননি ভারতীয় বোলারেরা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে নতুন নেপালও ভারতের বিরুদ্ধে প্রথমে ব্যাট করে ২৩০ রান করেছে। সেই ম্যাচে ভারতের ফিল্ডিং জঘন্য হয়েছে। ক্যাচ ফেলা, পায়ের তলা দিয়ে বল গলানো, কী না দেখা গিয়েছে। অধিনায়ক রোহিতও ফিল্ডিং নিয়ে নিজের হতাশা চেপে রাখতে পারেননি। পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সেই ভুল করলে হবে না। কারণ, ফখর জমান, ইমাম উল হক, মহম্মদ রিজ়ওয়ানেরা সুযোগ পেলে ছাড়বেন না। তা ছাড়া রয়েছেন বাবর। ব্যাট হাতে দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন তিনি। ভারতের বিরুদ্ধেও সেই ছন্দ ধরে রাখতে চাইবেন পাক অধিনায়ক।
আগের ম্যাচে ভাল বোলিং করায় ভারতের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক মানসিকতা নিয়ে নামবে পাকিস্তান। কিন্তু তাদের সামনেও সমস্যা রয়েছে। ভারতের কাছেও মহম্মদ শামি, মহম্মদ সিরাজ, যশপ্রীত বুমরার মতো পেসার রয়েছেন। স্পিনার হিসাবে রবীন্দ্র জাডেজা ও কুলদীপ যাদব রয়েছেন। তাঁরা যে কোনও ব্যাটারকে সমস্যায় ফেলতে পারেন। রোহিত, বিরাটও নিজের দিনে একাই প্রতিপক্ষকে হারিয়ে দিতে পারেন। তাই অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাস থাকলে সমস্যায় পড়তে পারে পাকিস্তানও।
এশিয়া কাপে আরও এক বার মুখোমুখি হতে পারে ভারত-পাকিস্তান। সুপার ফোরের পয়েন্ট তালিকায় প্রথম দুইয়ে থাকলে ফাইনালে আবার ভারত-পাকিস্তান। সেই ম্যাচের আগে জিতে নিজেদের আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে রাখতে চাইবে দু’দল। কারণ, এশিয়া কাপের পরেই এক দিনের বিশ্বকাপ। সেখানেও কিন্তু ভারত-পাকিস্তান ম্যাচ রয়েছে। তার আগে নিজেদের প্রস্তুতি সেরে ফেলতে চাইছেন রোহিত, বাবরেরা।