ভূমিকম্পে বিপর্যস্ত মরক্কো। ছবি: রয়টার্স।
শুক্রবার গভীর রাতের ভূমিকম্পে মরক্কোয় মৃতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়ে গেল। সে দেশের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত ভূমিকম্পে মারা গিয়েছেন ১০৩৭ জন। আহত অন্তত ১২০০ জন। তাঁদের মধ্যে ৭২১ জনের অবস্থা সঙ্কটজনক। তাই মৃত্যুর সংখ্যা বৃদ্ধি পেতে পারে বলে আশঙ্কা।
সংবাদমাধ্যম এএফপির রিপোর্ট বলছে, এর আগে এত প্রবল ভূমিকম্প হয়নি উত্তর আফ্রিকার এই দেশে। ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের অধ্যাপক বিল ম্যাকগুইর জানিয়েছেন, মরক্কোয় ভূমিকম্প খুব একটা হয় না। সে কারণে বাড়িগুলি পোক্ত ভাবে তৈরি নয়। তাই হতাহতের সংখ্যা এত বেশি। মরক্কোর রাজা চতুর্থ মহম্মদ সশস্ত্র বাহিনীকে উদ্ধার কাজে নামার নির্দেশ দিয়েছেন।
মরক্কোর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, সে দেশের স্থানীয় সময় রাত ১১টা ১১ মিনিটে ভূমিকম্প হয়। ১৯ মিনিট পর হয় আর একটি আফটারশক। সেই কম্পনের মাত্রা ছিল ৪.৯। রিখটার স্কেলে ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৮। আমেরিকার ভূতত্ত্ব সর্বেক্ষণ বিভাগ জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কেন্দ্র পর্যটন শহর মারাক্কেশ থেকে ৭১ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে হাই অ্যাটলাস পর্বতে। ভূপৃষ্ঠ থেকে ১৮.৫ কিলোমিটার গভীরে রয়েছে সেই কেন্দ্র। ভূমিকম্পের কেন্দ্র প্রত্যন্ত হাই অ্যাটলাস পর্বতে হলেও তার প্রভাব পড়েছে বহু দূর পর্যন্ত। ভয়ঙ্কর ক্ষতিগ্রস্ত মারাক্কেশ শহর। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল থেকে প্রায় ৩৫০ কিলোমিটার দূরে রাজধানী রাবাতেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। কাসাব্লাঙ্কা, ইসাউইরা শহরেও কম্পন অনুভূত হয়েছে।
ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে মারাক্কেশের মেদিনা এলাকা। ১০৭০-৭২ সাল নাগাদ এর পত্তন হয়েছিল। এখানে রয়েছে বেশ কিছু ঐতিহাসিক স্তম্ভ, সৌধ, যা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই মেদিনাকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটের তকমা দিয়েছে ইউনেস্কো। এর আগে মরক্কোয় শেষ বার বড়সড় ভূমিকম্প হয়েছিল ২০০৪ সালে। ভূকম্পনের মাত্রা ছিল ৬.৩। কেন্দ্র ছিল বন্দর শহর আল হোসেইমা। মারা গিয়েছিলেন ৬০০ জন। মরক্কোর ইতিহাসে সব থেকে ভয়ঙ্কর ভূমিকম্প হয়েছিল ১৯৬০ সালে। দেশের পশ্চিমের শহর আগাদিরে ছিল কেন্দ্র। সে সময় মারা গিয়েছিলেন অন্তত ১২ হাজার মানুষ। ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেড্রো স্যাঞ্চেজ, ফরাসি প্রধানমন্ত্রী ইমানুয়েল মাকরঁ, ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু। সাহায্যের আশ্বাস দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জও।