ফাইল চিত্র।
মাঝের একটা সময় খারাপ ফর্মের জন্য ছিটকে গিয়েছিলেন ভারতীয় দল থেকে। এর পরে কাউন্টি ক্রিকেটে সাসেক্সের হয়ে অসাধারণ ব্যাটিং করে আবার প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন তিনি। সেই চেতেশ্বর পুজারা বুধবার বিসিসিআই টিভিতে দেওয়া খোলামেলা সাক্ষাৎকারে জানিয়ে দিলেন, তিনি ছন্দ ফিরে পেয়েছেন।
কাউন্টি ক্রিকেটের অভিজ্ঞতা: সাসেক্সের হয়ে মরসুমটা আমি খুব উপভোগ করেছি। দারুণ সব সতীর্থ পেয়েছি। ব্রাইটন শহরটাও আমার খুব ভাল লেগেছে। ঘুরে বেড়াতে খুব ভাল লাগত।
ছন্দে ফেরার লক্ষ্যপূরণ: আমার লক্ষ্যই ছিল যত বেশি সম্ভব প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলা। লক্ষ্য ছিল নিজের ছন্দ ফিরে পাওয়া। মনঃসংযোগটা ফিরে পাওয়া। আর সেটা পেতে গেলে জানতাম আমাকে বড় ইনিংস খেলতে হবে। সাসেক্সের হয়ে খেলতে নেমে আমি লম্বা ইনিংস খেলার সুযোগ পেয়েছি। আর সেটাই আমার ছন্দ ফিরিয়ে দেয়। সব মিলিয়ে কাউন্টির সময়টা আমি দারুণ উপভোগ করেছি।
ডার্বির বিরুদ্ধে দ্বিশতরান: ডার্বিশায়ারের বিরুদ্ধে ওই ইনিংসটা (অপরাজিত ২০১) খেলার পরেই বুঝে যাই, ছন্দ ফিরে পেয়েছি। মনঃসংযোগ এবং অন্যান্য জিনিসগুলোও ঠিকঠাক হতে থাকে।
কাউন্টির অভিজ্ঞতা: অনেক কিছুই শেখার আছে। আমি যদিও প্রচুর প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলেছি, কিন্তু মাঠে সময় কাটানোটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই সুযোগটাই পেয়েছিলাম আমি। সাসেক্সে আসার আগে দেশেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছি। সৌরাষ্ট্রের হয়ে রঞ্জি খেলেছি। মনে হচ্ছিল, ছন্দটা ফিরে পেয়েছি। প্রয়োজন ছিল একটা বড় স্কোরের। যেটা ডার্বিশায়ারের বিরুদ্ধে পেয়ে যাই। আর তখনই বুঝে যাই, সব কিছু স্বাভাবিক হয়ে গিয়েছে। আমার ফুটওয়ার্ক ঠিকঠাক হচ্ছে, ব্যাকলিফ্টে কোনও সমস্যা নেই। এর পরে আমি ক্রিকেটটা উপভোগ করতে চেয়েছিলাম। এই খেলাটাকে আমি ভীষণ ভালবাসি।
আসন্ন পরীক্ষা: সিরিজ়ে আমরা ২-১ এগিয়ে আছি ঠিকই, কিন্তু জানি ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে লড়াইটা কঠিন হতে যাচ্ছে। এই টেস্ট ম্যাচটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হতে চলেছে। অনেক দিন বাদে আমরা লাল বলের ক্রিকেট খেলছি। আমাদের নিজেদের শক্তিটা বুঝতে হবে। একটা ভাল দিক হল, আমরা অনেক আগে এখানে এসে পৌঁছেছি। তাই সবাই প্রস্তুতির সময়টা পাচ্ছে।আমাদের বুঝতে হবে, ইংল্যান্ডের মাঠে শেষ চার-পাঁচটা টেস্টে কী ধরনের ক্রিকেট খেলেছি। সেই খেলার পুনরাবৃত্তি করতে হবে। আমাদের ক্ষমতা অনুযায়ী খেলতে হবে।
নতুন ইংল্যান্ড: আমরা জানি, এই ইংল্যান্ড দলটায় কিছু পরিবর্তন হয়েছে। ওদের শক্তিটা বুঝে আমাদের কৌশল তৈরি করতে হবে। আমি নিশ্চিত, আমাদের সাপোর্ট স্টাফ আর টিম ম্যানেজমেন্ট কৌশল নিয়ে পরে আলোচনা করবে। এই টেস্ট ম্যাচটার জন্য আমাদের বিশেষ পরিকল্পনা করতে হবে।
কোচ দ্রাবিড়ের সঙ্গে সম্পর্ক: রাহুল (দ্রাবিড়) ভাই সব সময় আমার কাছে প্রেরণা। মনে আছে, সেটা ২০০৭-০৮ হবে। রাহুল ভাই তখন ভারতীয় দলকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সেই প্রথম ওঁর সঙ্গে দেখা হয়েছিল। তার পর থেকে যোগাযোগ রেখে চলেছি। ক্রিকেটার হিসেবে কত কী শিখেছি। যখন রাহুল ভাই খেলতেন, তখন। আবার অবসর নেওয়ার পরেও। যখনভারতীয় ‘এ’ দলের কোচ ছিলেন রাহুল ভাই, তখন ওঁর সঙ্গে আমার দীর্ঘসময় ধরে কথা হত। রাহুল ভাইয়ের সঙ্গে কাজ করতে পেরে খুব ভাল লাগছে।
পরিবারের সঙ্গে সময়: পরিবার আমার শক্তির উৎস। ওদের সঙ্গে ছুটি কাটাতে পেরে দারুণ লেগেছে। এমনও হয়েছে আমাকে চার-পাঁচটা ম্যাচে বেশির ভাগ সময় মাঠে থাকতে হয়েছে। তাই মাঝের ছুটিটা দরকার ছিল। আমরা ইউরোপের বিভিন্ন দেশ ঘুরে বেড়িয়েছি।
শেষ টেস্টে লক্ষ্য: আমাদের ড্রেসিংরুমের পরিবেশটা দারুণ। ২০২১ সালে রবি ভাই যখন কোচ ছিল, তখনও এ রকম ছিল। দারুণ সব ক্রিকেটার, খুব ভাল কয়েক জন ফাস্ট বোলার ছিল। আমরা ইংল্যান্ডের মাটিতে শেষ চার-পাঁচটা টেস্টে যে রকম খেলেছি, এ বারও সে রকম খেলা খেলতে হবে। এই টেস্টটা যদি জিততে পারি, এই সিরিজ়টা যদি জিততে পারি, তা হলে দারুণ ব্যাপার হবে। ইংল্যান্ডের মাটি থেকে টেস্ট সিরিজ় জিতলে সেটা হবে অন্যতম সেরা জয়। আমরা সবাই এই ম্যাচটার দিকে তাকিয়ে আছি।