দুরন্ত: আগ্রাসী রোহিত। ডান দিকে, ম্যাচ শেষে কার্তিক। ছবি পিটিআই।
নাগপুরের বৃষ্টি বিঘ্নিত টি-টোয়েন্টি ম্যাচকে যদি আসন্ন বিশ্বকাপের মহড়া বলে ধরা হয়, তা হলে দু’টো দিকই পাওয়া যাচ্ছে এই দ্বৈরথ থেকে। স্বস্তি এবং কাঁটা।
অধিনায়ক রোহিত শর্মার ছন্দে ফেরাটা যদি ভারতীয় দলের কাছে স্বস্তির কারণ হয়, তা হলে কাঁটা হয়ে থাকবে পেসারদের বোলিং। বিশেষ করে শেষ দু’-তিন ওভারে মার খাওয়ার অভ্যাসটা যাচ্ছেই না। শুক্রবার আট ওভারের খেলায় ফিরে পেলাম সেই পুরনো রোহিতকে। ওর ২০ বলে অপরাজিত ৪৬ রান টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে বাঁচিয়ে রাখল ভারতকে। ফিনিশার দীনেশ কার্তিকের ঝলকও দেখা গেল এই ম্যাচে।
শেষ ওভারে ভারতের প্রয়োজন ছিল ৯ রান। আগের ওভারেই আউট হয়েছে হার্দিক পাণ্ড্য। এই ম্যাচে কার্তিক এবং ঋষভ পন্থ— দু’জনেই খেলছে। দেখার ছিল, ভারত কাকে পাঠায়। দেখা গেল কার্তিককেই বেছে নিল ভারতের দল পরিচালন সমিতি। এর থেকে পরিষ্কার, ফিনিশারের ভূমিকায় এই উইকেটকিপার-ব্যাটসম্যানকেই ভাবছে রোহিতরা। কার্তিকও আস্থার মর্যাদা দিল। ড্যানিয়েল স্যামসের করা শেষ ওভারের প্রথম দু’টো বলে একটা ছয়, একটা চার মেরে ম্যাচ শেষ করে দিল। সিরিজ় ১-১ অবস্থায় শেষ টি-টোয়েন্টি ম্যাচ রবিবার, হায়দরাবাদে।
প্রথমে ব্যাট করে আট ওভারে অস্ট্রেলিয়া তোলে পাঁচ উইকেটে ৯০। জবাবে ৭.২ ওভারে, চার উইকেট হারিয়ে রান তুলে দেয় ভারত। কিন্তু এই জয়ের মধ্যেও ভারতীয় বোলিং নিয়ে প্রশ্ন থাকছে। ম্যাচের পর ম্যাচে একই অবস্থা। ভারতীয় পেসাররা এসে ব্যর্থ হয়ে চলে যাচ্ছে। আর এই ব্যাপারটা কিন্তু দু’টো বা তিনটে ম্যাচের ঘটনা নয়। মাস কয়েক বাদে যশপ্রীত বুমরা ক্রিকেটে ফিরল। ওর থেকে প্রত্যাশা অনুযায়ী বোলিংটা পেলাম। বেশ কয়েকটা বল ঘণ্টায় ১৪০-এর উপরে করল, তেমন গতি পরিবর্তনটা ঠিক মতো করেছে। সঙ্গে ছিল দুরন্ত দু’টো ইয়র্কার। কিন্তু বাকিদের নিয়ে প্রশ্ন আছে। বাঁ-হাতি স্পিনার অক্ষর পটেল আবারও ভাল বল করে গেল। কিন্তু হর্ষল পটেল কী করল? ও আমাদের বিশেষজ্ঞ ডেথ বোলার। এই ম্যাচে ভুবনেশ্বর কুমার খেলছে না। যার ফলে ওর উপরেই ভরসা রেখেছিল রোহিত। কিন্তু দেখা গেল, ম্যাথু ওয়েড (২০ বলে অপরাজিত ৪৩) ওকে নিয়ে ছেলেখেলা করছে। ঠিক যেমন মোহালিতে করেছিল। শেষ ওভারে হর্ষলকে তিনটে ছয় মারল ওয়েড।
ফলে আবার প্রশ্নটা উঠছে। মহম্মদ শামিকে কেন বাইরে থাকতে হবে? আমাদের কি মানতে হবে হর্ষল বা ভুবনেশ্বরের চেয়ে শামি খারাপ বোলার? এক বার শুনলাম, শামিকে নাকি টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের জন্য ভাবা হচ্ছে না। তা-ই যদি হবে, তা হলে ওকে বিশ্বকাপের জন্য স্ট্যান্ড-বাই রাখা হল কেন? শামির মতো বিশ্বসেরা বোলারকে স্ট্যান্ড-বাই রাখা মানে অপমান করা। নির্বাচকদের কিন্তু ভাবার সময় এসেছে।