বিশ্বকাপ ট্রফি নিয়ে অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক প্যাট কামিন্স (বাঁদিকে) এবং মিচেল মার্শ। ছবি: আইসিসি।
চ্যাম্পিয়নেরা বোধ হয় ট্রফির গন্ধ পান। বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটারেরাও পেয়েছিলেন। খেলা শেষ হওয়ার অনেক আগেই ট্রফির গন্ধ পেয়ে গিয়েছিলেন প্যাট কামিন্সেরা। তখনও তাঁরা ব্যাট করতেও নামেননি। শেষ হয়নি ভারতের ইনিংসও। আমদাবাদের নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের পরিবেশ থেকেই ট্রফির গন্ধ খুঁজে নিয়েছিলেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটারেরা।
নিস্তব্ধতা অনেক কিছু বলে দেয়। বাক্রুদ্ধ ১ লাখ ৩২ হাজার ক্রিকেটপ্রেমীও হয়তো কামিন্সদের বুঝিয়ে দিয়েছিলেন বিশ্বকাপ যাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া। ১৯ নভেম্বরের ফাইনালের পর কেটে গিয়েছে ন’দিন। টি-টোয়েন্টি সিরিজ়ে বিশ্বকাপ রানার্সদের কাছে ০-২ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়েছে বিশ্বচ্যাম্পিয়নেরা। বিশ্বজয়ী দলের একাধিক সদস্য ভারতে ২০ ওভারের ক্রিকেটে ব্যস্ত থাকায় উৎসবে মাততে পারেননি কামিন্সেরা। উচ্ছ্বাসের বহিঃপ্রকাশ সে ভাবে না ঘটলেও মানসিক তৃপ্তি কম নেই তাঁদের।
বিশ্বকাপ ফাইনাল মানেই টান টান লড়াই। চাপ। অনিশ্চয়তা। লড়াই যখন আবার প্রতিপক্ষের ঘরের মাঠে। কিছুটা বোধহয় পিছিয়ে থেকেই নামতে হয়। ১৯ নভেম্বর সে ভাবেই মাঠে নেমেছিলেন কামিন্সেরা। তবে ভারতীয় ইনিংস কিছুটা এগোতেই জয়ের গন্ধ পেয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা। কী ভাবে? কামিন্স বলেছেন সেই রবিবার বিকালে বিরাট কোহলির আউট হওয়ার পরের কয়েক সেকেন্ডের কথা, ‘‘আমার মনে হয় কোহলির উইকেটটা আমাদের বেশ তাতিয়ে দিয়েছিল। ও আউট হওয়ার পর আমরা মাঠের মাঝখানে হাডল করেছিলাম। তখন স্টিভ স্মিথ বলেছিল, ‘সবাই গ্যালারির আওয়াজ শোনার চেষ্টা করো।’ ওর কথায় আমরা কয়েক সেকেন্ড সবাই চুপ করেছিলাম। মনে হচ্ছিল যেন কোনও গ্রন্থাগারে রয়েছি। এক লাখের উপর ভারতীয় সম্পূর্ণ চুপ করে গিয়েছিল! একেবারে শান্ত হয়ে গিয়েছিল। ওই মুহূর্তটা অনেক দিন পর্যন্ত উপভোগ করব। হয়তো ৭০ বছর বয়সেও। বা মৃত্যুশয্যাতেও! শেষ নিঃশ্বাস ফেলা পর্যন্ত।’’
বিশ্বকাপ ফাইনালে অস্ট্রেলীয় অধিনায়কের বলেই আউট হয়েছিলেন কোহলি। হঠাৎ একটু লাফিয়ে ভিতরের দিকে ঢুকে আসা বল সামলাতে পারেননি কোহলি। বল তাঁর ব্যাটে লেগেও উইকেট ভেঙে দিয়েছিল। বিশ্বের যে কোনও দলই জানে, কোহলিকে আউট করতে পারলেই ভারতীয় দলকে বড় ধাক্কা দেওয়া যায়। ভারতের প্রাক্তন অধিনায়কের উপর সতীর্থ এবং ক্রিকেটপ্রেমীদের ভরসা এতটাই। বিশ্বকাপ ফাইনালেও কোহলির আউট হওয়া হতাশায় ডুবিয়ে দিয়েছিল নরেন্দ্র মোদী স্টেডিয়ামের গ্যালারিকে। সেই নিস্তব্ধতা থেকেই বিশ্বকাপ ট্রফির গন্ধ খুঁজে নিয়েছিলেন কামিন্স, স্মিথেরা। চ্যাম্পিয়নেরা বোধ হয় এখানেই আলাদা বাকিদের থেকে।