সিরিজ় জয়ের উচ্ছ্বাস মহম্মদ রিজ়ওয়ানদের। ছবি: এক্স (টুইটার)।
ধারাবাহিক ব্যর্থতায় কোণঠাসা পাকিস্তান ক্রিকেট কিছুটা অক্সিজেন পেল অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে। ২২ বছর পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এক দিনের সিরিজ় জিতল পাকিস্তান। তিন ম্যাচের সিরিজ়ের শেষ ম্যাচে রবিবার মহম্মদ রিজওয়ানের দল জিতল ৮ উইকেটে। প্রথম ব্যাট করে আয়োজকেরা ৩১.৫ ওভারে করে ১৪০ রান। জবাবে ২৬.৫ ওভারে ২ উইকেটে ১৪৩ পাকিস্তানের। সব মিলিয়ে ১০০ ওভারের ম্যাচ শেষ হল ৫৮.৪ ওভারে।
অধিনায়ক হিসাবে শুরুটা ভাল করতে পারেননি রিজ়ওয়ান। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে প্রথম এক দিনের ম্যাচে তাঁর দল হেরেছিল ২ উইকেটে হেরেছিল। ০-১ ব্যবধানে পিছিয়ে থাকা পাকিস্তান পরের দু’টি ম্যাচ জিতে সিরিজ় জিতে নিল। ২০০২ সালে শেষ বার অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে এক দিনের সিরিজ় জিতেছিল পাকিস্তান। রবিবার অবশ্য অস্ট্রেলিয়া সেরা একাদশকে মাঠে নামায়নি। জশ ইংলিসের নেতৃত্বে তরুণ ক্রিকেটারদের খেলিয়েছে। বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির আগে প্যাট কামিন্স, স্টিভ স্মিথ, ট্র্যাভিস হেডদের বিশ্রাম দেওয়া হয়।
টানা ব্যর্থতায় সমালোচিত পাকিস্তানের ক্রিকেটারদের দাবি ছিল, একটা জয় সব কিছু বদলে দিতে পারে। ফিটনেস, পারফরম্যান্স নিয়ে সব জবাব দেওয়ার জন্য অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ়কেই বোধহয় বেছে নিয়েছিলেন শাহিন আফ্রিদি, বাবর আজ়ম। টেস্ট দলের কোচ জেসন গিলেসপি কিছু দিন আগেই শাহিনের ফিটনেস নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁর দেশের বিরুদ্ধেই জ্বলে উঠলেন সেই শাহিন।
পাকিস্তানের জোরে বোলারদের দক্ষতা নিয়ে সংশয় ছিল না ক্রিকেটপ্রেমীদের। নিজেদের দিনে তাঁরা বিশ্বের যে কোনও ব্যাটিং লাইন আপকে শেষ করে দিতে পারেন। অ্যাডিলেডের পর রবিবার পার্থেও সেটাই হল। টস জিতে প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেন পাক অধিনায়ক রিজ়ওয়ান। সুযোগ কাজে লাগাতে ভুল করেননি পাক বোলারেরা। শাহিন, নাসিম শাহ, হ্যারিস রউফেরা গোটা ইনিংসে অস্বস্তিতে রেখেছিলেন অস্ট্রেলীয় ব্যাটারদের। আয়োজকদের পক্ষে সব চেয়ে বেশি রান সন অ্যাবোটের ৩০। স্বীকৃত ব্যাটারদের মধ্যে বলার মতো রান কেউই করতে পারেননি। ওপেনার ম্যাথু শর্ট করেছেন ২২। জেক ফ্রেজ়ার ম্যাকগার্ক (৭), অ্যারন হার্ডি (১২), ইংলিস (৭), কুপার কোনোলি (৭), মার্কাস স্টোইনিস (৮), গ্লেন ম্যাক্সওয়েলেরা (শূন্য) কেউই দলকে ভরসা দিতে পারেননি। নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারিয়েছে অস্ট্রেলিয়া। ৮৮ রানেই ৬ উইকেট হারায় ইংলিসের দল।
পাকিস্তানের শাহিন ৩২ রানে ৩ উইকেট নিয়েছেন। নাসিম ৩ উইকেট নিয়েছেন ৫৪। রউফের ২ উইকেট ২৪ রান খরচ করে। মহম্মদ হাসনাইন ২৪ রান দিয়ে ১ উইকেট নিয়েছেন।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে তেমন কোনও সমস্যাতেই পড়তে হয়নি পাক ব্যাটারদের। দুই ওপেনার সাইম আয়ুব ৪২ এবং আবদুল্লা শফিক ৩৭ রান করেছেন। প্রথম উইকেটের জুটিতে তোলেন ৮৪ রান। ১ রানের ব্যবধানে দু’জনেই আউট হওয়ার পর জুটি অধিনায়ক রিজ়ওয়ানের সঙ্গে জুটি বাঁধেন বাবর আজ়ম। তাঁদের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে ওঠে ৫৮ রান। রিজ়ওয়ান ২৭ বলে ৩০ রানে অপরাজিত থাকেন। বাবরের ব্যাট থেকে এসেছে ৩০ বলে ২ রানের অপরাজিত ইনিংস। অস্ট্রেলিয়ার ল্যান্স মরিস ২৪ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন।