মহেন্দ্র সিংহ ধোনি। — ফাইল চিত্র।
আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনি অবসর নিয়েছিলেন ২০২০ সালের ১৫ অগস্ট, স্বাধীনতা দিবসে। তবে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি মনে করেন, তাঁর অবসর হয়ে গিয়েছিল ২০১৯-এর ৯ জুলাই। অর্থাৎ এক বছর আগেই। নিউ জ়িল্যান্ডের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে হেরে যে দিন বিশ্বকাপে থেকে ভারত ছিটকে যায়, সে দিনই তাঁর অবসর হয়ে গিয়েছিল বলে মনে করেন ধোনি।
মার্টিন গাপ্টিলের ছোড়া থ্রো তাঁকে রান আউটই করেনি, ভেঙে দিয়েছিল লক্ষ লক্ষ মানুষের হৃদয়। সেই বিশ্বকাপে আগাগোড়া ভাল খেলেও সেমিফাইনালে বিদায় নেয় ভারত। রান আউট হয়ে ফেরার পর ধোনির নীচু হয়ে যাওয়া মাথা এবং চোখের কোণে জল অনেকেরই চোখ এড়ায়নি। ভারতের বিশ্বকাপ ইতিহাসে সেটিই সবচেয়ে হৃদয়বিদারক দৃশ্য বলে অনেকে মনে করেন।
সম্প্রতি বেঙ্গালুরুতে একটি অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে ধোনি বলেছেন, “এত হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে এ ভাবে হেরে গেলে সত্যিই আবেগ নিয়ন্ত্রণ করা খুব কঠিন হয়ে পড়ে। ভেতরে ভেতরে আমার সব পরিকল্পনা শেষ হয়ে গিয়েছিল। আমার কাছে, ওই দিনই ভারতের হয়ে শেষ বার ক্রিকেট খেলা হয়ে গিয়েছিল। এক বছর পরে অবসরের কথা ঘোষণা করেছি ঠিকই। কিন্তু আসল কথাটা হল, সে দিনই আমি অবসর নিয়ে নিয়েছিলাম।”
এর পরের সময়টায় একটা মজার কথাও শুনিয়েছেন ধোনি। বলেছেন, “তখন আমাদের ফিটনেস পরীক্ষার একটা যন্ত্র দেওয়া হত। আমি যত বারই সেটা ফিটনেস ট্রেনারকে ফেরত দিতে গিয়েছি, তত বারই বলেছে সেটা আমার কাছে রেখে দিতে। ওকে বলতে পারিনি যে আমার আর এই জিনিসটা কাজে লাগবে না। কারণ সেই সময়ে আমি অবসরের কথা ঘোষণা করতে চাইনি।”
দীর্ঘ ক্রিকেটজীবনে দেশের হয়ে খেলা এবং অধিনায়কত্ব করা যে বিরাট সম্মানের ব্যাপার, সেটা ধোনির কথায় স্পষ্ট। বলেছেন, “যখন আপনি আবেগের সর্বোচ্চ সীমায় থাকেন, তখন শুধু ভাবেন যে গত ১২-১৫ বছর ধরে আপনি ক্রিকেট খেলে এসেছেন এবং আর দেশের হয়ে খেলার সুযোগ পাবেন না। এটা বিরাট ব্যাপার। কারণ এত বড় দেশে খুব কম লোকেই দেশের হয়ে ক্রিকেট খেলার সুযোগ পায়। যে খেলাই আপনি খেলুন না কেন, মাঠে নামলে আপনি দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন।”
অন্য খেলার কথাও উল্লেখ করেছেন ধোনি। বলেছেন, “আপনি কমনওয়েলথ গেমস, বা অলিম্পিক্স বা আইসিসি-র প্রতিযোগিতা যেখানেই যান — দেশের হয়ে নামেন। এই বিষয়টা ভুলে গেলে চলবে না। এক বার ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ার পর কোনও ভাবেই আর দেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ ছিল না।”