ট্রফি জয়ের পরে দলের ক্রিকেটার, সাপোর্ট স্টাফ ও মালিক নীতা অম্বানীর (সাদা পোশাকে) উল্লাস। ছবি: টুইটার
তিন বছর আইপিএলে ভাল খেলতে না পারলেও আমেরিকার মেজর লিগ ক্রিকেটে প্রথম মরসুমে চ্যাম্পিয়ন হল মুকেশ অম্বানীর দল। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স নিউ ইয়র্ক ফাইনালে হারাল সিয়াটেল ওরকাসকে। ফাইনালে শতরান করে নায়ক মুম্বইয়ের অধিনায়ক নিকোলাস পুরান। ১৮৪ রান তাড়া করতে নেমে একাই ৫৫ বলে ১৩৭ রানের ইনিংস খেললেন পুরান। তাঁর বিধ্বংসী ইনিংসে উড়ে গেল সিয়াটেল। সহজেই ম্যাচ জিতে চ্যাম্পিয়ন হল মুম্বই। পাঁচ বার আইপিএল জেতার পরে আরও একটি ট্রফি ঢুকল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের ক্যাবিনেটে।
মেজর লিগ ক্রিকেটে ফাইনালের আগে পর্যন্ত মুম্বইয়ের অধিনায়কত্ব করছিলেন কাইরন পোলার্ড। কিন্তু ফাইনাল খেলেননি তিনি। বদলে নেতৃত্ব দেন পুরান। অধিনায়ক হিসাবে প্রথম ম্যাচেই নজর কাড়লেন তিনি। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে ২০ ওভরে ৯ উইকেট হারিয়ে ১৮৩ রান করে সিয়াটেল। ওপেনার কুইন্টন ডি’কক ৫২ বলে ৮৭ রান করেন। শেষ দিকে ডোয়েন প্রিটোরিয়াসের ব্যাট থেকে ৭ বলে ২১ রান আসে। মুম্বইয়ের বোলারদের মধ্যে ট্রেন্ট বোল্ট ও রশিদ খান ৩টি করে উইকেট নেন। বোলিং পরিবর্তন বেশ বুদ্ধি করে করেন পুরান। ভয়ঙ্কর দেখানো ডি’কককে ফেরান বোল্ট। নইলে আরও বেশি রান করতে পারত সিয়াটেল।
জবাবে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভাল হয়নি মুম্বইয়ের। স্টিভেন টেলর শূন্য রানে আউট হন। কিন্তু তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমে খেলার ছবি বদলে দেন পুরান। সাধারণত মিডল অর্ডারে ব্যাট করলেও ফাইনালে নিজেকে উপরে তুলে আনেন তিনি। আর তাতেই বাজিমাত। পাওয়ার প্লে কাজে লাগিয়ে বড় শট খেলতে শুরু করেন। পাওয়ার প্লে-তে ২২ বলে ৬৯ রান করেন তিনি। ৯টি চার ও ৩টি ছক্কা মারেন এই বাঁ হাতি ব্যাটার। পুরানের দাপটে পাওয়ার প্লে-তে ৮০ রান ওঠে মুম্বইয়ের। মাত্র ১৬ বলে নিজের অর্ধশতরান করেন তিনি।
এক বার হাত জমে যাওয়ার পরে আর থামানো যায়নি পুরানকে। উইকেটের সব দিকে বড় শট খেলছিলেন তিনি। পেসার থেকে স্পিনার, কাউকে রেয়াত করছিলেন না। প্রথমের দিকে চার বেশি মারলেও যত খেলা গড়াল তত ছক্কার সংখ্যা বাড়তে থাকল। দলের বাকি ক্রিকেটারেরা অবশ্য রান পাননি। শায়ান জাহাঙ্গির, ডেওয়াল্ড ব্রেভিসদের দুর্বলতা ঢেকে দেন পুরান। ১২ ওভারের মধ্যেই নিজের শতরান করেন পুরান। নেন মাত্র ৪০ বল। গত আইপিএলে লখনউ সুপার জায়ান্টসের হয়ে পুরানকে কয়েকটি বিধ্বংসী ইনিংস খেলতে দেখা গিয়েছিল। তার মধ্যে একটি ছিল মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের বিরুদ্ধে। এ বার সেই মুম্বইকেই জেতালেন পুরান।
শতরান করার পরেও থামেননি তিনি। জানতেন, শেষ পর্যন্ত খেলতে হবে। দলকে জিতিয়ে তবেই মাঠ ছাড়েন পুরান। তাঁর দাপটে ১৮৪ রান তাড়া করতে নেমে ৪ ওভার বাকি থাকতেই ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতে যায় মুম্বই। পুরান ৫৫ বলে ১৩৭ রান করে অপরাজিত থাকেন। ইনিংসে ১০টি চার ও ১৩টি ছক্কা মারেন ওয়েস্ট ইন্ডিজ়ের এই বাঁ হাতি ব্যাটার।