ইডেন গার্ডেন্স। —ফাইল চিত্র।
কোথাও মাঠে নতুন ঘাস বসানো হচ্ছে, কোথাও সারানো হচ্ছে স্টেডিয়াম, কোথাও আবার টিকিট ব্যবস্থার উন্নতি করা হচ্ছে। গোটা দেশ জুড়ে সাজ-সাজ রব। পুজোর আগে বাংলায় যেমন মণ্ডপ বাঁধার কাজ চলে, তেমন বিশ্বকাপের আগে ভারতের মাঠগুলির অবস্থা। কোন কোন মাঠে কী কাজ চলছে?
ভারতের ১০টি মাঠে হবে বিশ্বকাপের মূল পর্বের ম্যাচ। আমদাবাদ, হায়দরাবাদ, ধর্মশালা, দিল্লি, চেন্নাই, লখনউ, পুণে, মুম্বই, বেঙ্গালুরু এবং কলকাতার মাঠে এ বারের বিশ্বকাপের ম্যাচগুলি রয়েছে। এ ছাড়াও অনুশীলন ম্যাচ হবে গুয়াহাটি এবং তিরুঅনন্তপুরমে। এর মধ্যে মুম্বইয়ের ওয়াংখেড়েতে নতুন ফ্লাডলাইট (মাঠের আলো) বসানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে কর্পোরেট বক্স। ধর্মশালার মাঠে আউটফিল্ডে (পিচের বাইরের ঘাসের অংশ) বিদেশ থেকে ঘাস এনে বসানো হচ্ছে। কলকাতার ইডেনে সাজঘর নতুন করে সাজানো হচ্ছে। দিল্লির ফিরোজ শাহ কোটলায় শৌচাগার ঠিক করা হচ্ছে, সেই সঙ্গে টিকিট ব্যবস্থার উন্নতি করা হচ্ছে।
একেকটি মাঠের একেক রকম জিনিস প্রয়োজন। ওয়াংখেড়েতে গ্রুপ পর্বের চারটি ম্যাচ এবং একটি সেমিফাইনাল রয়েছে। সেখানে ফ্লাডলাইটের উন্নতি ছাড়াও আউটফিল্ড নতুন করে তৈরি করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে কর্পোরেট বক্স এবং শৌচাগার সংস্কারের কাজ চলছে। চেন্নাইয়ের চিদাম্বরম স্টেডিয়ামে এলইডি লাইট লাগানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে লাল মাটির পিচ তৈরি করা হচ্ছে দু’টি। লখনউয়ে ভারত বনাম ইংল্যান্ড ম্যাচ রয়েছে। তারা আইপিএলে যেমন পিচ তৈরি করেছিল, সেরকমই বানানোর চেষ্টা করছে। দিল্লির মাঠে দর্শকদের জন্য নতুন বসার চেয়ারও লাগানো হচ্ছে।
ইডেনে ইতিমধ্যেই মিডিয়া বক্স নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে বিশ্বকাপের কথা মাথায় রেখে আগেই আধুনিক ফ্লাডলাইট লাগানো হয়েছিল। এখন ইডেনে যে ধরনের লাইট লাগানো রয়েছে, তা ম্যাচের মাঝে কোনও ভাবে বন্ধ হয়ে গেলেও সঙ্গে সঙ্গে জ্বালিয়ে দেওয়া সম্ভব। বাংলার ক্রিকেট সংস্থার প্রধান স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “ইডেনে যেটুকু সংস্কারের কাজ বাকি রয়েছে, তা বিশ্বকাপের আগেই হয়ে যাবে। বোর্ড সচিব জয় শাহের সঙ্গে আমার কথা হয়েছিল। সেই সময় ইডেনে কী কী করা হচ্ছে তা দেখিয়েছিলাম। জয় শাহ খুবই খুশি হয় ইডেনের কাজ দেখে।”
ধর্মশালার মাঠে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট ম্যাচ হওয়ার কথা ছিল এই বছরের শুরুতে। কিন্তু সংস্কারের কাজ তখন থেকেই শুরু হয়ে গিয়েছিল, তাই সেই ম্যাচ করা সম্ভব হয়নি। এখন সেখানে জোরকদমে কাজ চলছে। পাঁচটি ম্যাচ হবে ধর্মশালাতে। ভারত বনাম নিউ জ়িল্যান্ড ম্যাচও রয়েছে। জল নিষ্কাশনের ব্যবস্থাও নতুন করে তৈরি করা হয়েছে। ছ’হাজার মিটার লম্বা পাইপ বসানো হয়েছে বৃষ্টির জল বার করে দেওয়ার জন্য। এক বিশেষ ধরনের ঘাস লাগানো হয়েছে, যা ঠান্ডায় ভাল থাকে। সেই সঙ্গে নদীর বালি ব্যবহার করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে ভিভিআইপি বক্স সাজানো হচ্ছে। আইপিএলের চেয়ারম্যান এবং হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট সংস্থার সদস্য অরুণ ধুমল বলেন, “আমরা চাই বৃষ্টি বন্ধ হলেই যাতে ম্যাচ শুরু করে দেওয়া যায়। তেমন ব্যবস্থাই করা হচ্ছে। নতুন বসার জায়গা করা হচ্ছে। রং করা হচ্ছে। আমরা চাই বিশ্বকাপের সময় সকলকে সেরা ব্যবস্থা দিতে।”
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ
২০১১ সালে ওয়াংখেড়েতে বিশ্বকাপের ফাইনাল হয়েছিল। সেই মাঠেও এখন কাজ চলছে। মুম্বই ক্রিকেট সংস্থার প্রধান অমল কালে বলেন, “আধুনিক সরঞ্জাম আনা হচ্ছে। নতুন আউটফিল্ড তৈরি করা হচ্ছে। নতুন এলইডি আলো লাগানো হচ্ছে। সেই সঙ্গে শৌচাগারের সংস্কার করা হচ্ছে।”
সব ক্রিকেট সংস্থাই চাইছে বিশ্বকাপের আগে মাঠগুলি নতুন করে সাজিয়ে তুলতে। সেই লক্ষ্য নিয়েই এগিয়ে চলেছে সব ক্রিকেট সংস্থাগুলি।